চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে কারবালা মাহফিলে বক্তারা

সহিংসতামুক্ত বিশ্ব গড়তে ইমাম হোসাইনের ত্যাগ উৎসাহ যোগাবে

১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:০৪ পূর্বাহ্ণ

হাজার হাজার দ্বীনদার আহলে বায়তপ্রেমী সুন্নি উলামা ছাত্র জনতার স্বতঃস্ফূর্র্ত অংশগ্রহণে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে ১০ দিনব্যাপী ৩৪ তম আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি-সমৃদ্ধি কামনায় আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে সমাপ্ত হয়েছে। এতে আলাদা ব্যবস্থাপনায় শত শত নারীও উলামাদের বক্তব্য শোনেন। মাহফিলের শেষ দিনে সিরিয়া ইয়েমেন ইরাক কাশ্মীরসহ দেশে দেশে নিরীহ মানুষের ওপর চলা নির্যাতন-নিপীড়ন-হত্যাযজ্ঞ থামাতে জাতিসংঘ, ওআইসি ও আরবলীগসহ বৈশ্বিক সংস্থাগুলোকে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ, নিপীড়িত রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীকে স্বদেশে পূর্ণ নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা দিয়ে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ, রোহিঙ্গাদের মুক্তি সনদ হিসেবে চিহ্নিত কফি আনান কমিশনের সুপারিশ

অবিলম্বে বাস্তবায়ন, হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) সহ শাহাদাতে কারবালা ও নবী পরিবারের ত্যাগের ঘটনা সকল স্তরের পাঠ্যপুস্তকে সংযোজন এবং সংঘাত-সহিংসতা ও হানাহানিমুক্ত একটি শান্তিপূর্ণ মানবিক বিশ্ব গড়তে বিশ্ব নেতৃত্বকে ত্যাগের পথে প্রতিষ্ঠিত থাকার ডাক দেন দেশি-বিদেশি আলোচক ও ইসলামী চিন্তাবিদগণ। পাঁচ বছর পেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, আন্তর্জাতিক বক্তা সুন্নিয়তের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর আল্লামা শায়খ নূরুল ইসলাম ফারুকী (র.) হত্যাকারীদের বিচার না হওয়ায় বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে চিহ্নিত খুনিদের বিচার করে আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে সরকারের প্রতি দাবি জানান। মাহফিলের সমাপনী দিনে সভাপতিত্ব করেন মাইজভা-ার দরবার শরিফের সাজ্জাদানশিন পীরে তরিকত মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী। প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বিদেশি আলোচক ছিলেন ইরাক বাগদাদ শরীফ বড়পীর শেখ সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানি (রা.) এর বংশধর শাহ সুফি আল্লামা সৈয়দ আফিফ আব্দুল কাদের মনসুর আল-জিলানি আল-বাগদাদী, ভারত কাসওয়াসা দরবার শরিফের সাজ্জাদানশিন আল্লামা সৈয়দ মাহমুদ আশরাফ আল-আশরাফি আল-জিলানি ও মিশরের ক্বারী মুহাম্মদ রিদওয়ান গোম্মাহ ইউনুছ। প্রধান অতিথি উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার নওফেল বলেন, কারবালায় দ্বীন ইসলামকে বিকৃতির হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন আহলে বায়তে রাসুল (দ.) ও ইমাম হোসাইন (রা.)। আজও ইয়াজিদি দোসররা থেমে নেই। কিন্তু যুগে যুগে ইয়াজিদিরা ধ্বংস হয়েছে। ইয়াজিদি খারেজিরা সুন্নিয়তের শত্রু। যারা সুন্নিয়তকে ধ্বংস করতে চায় সম্মিলিত শক্তি দিয়ে আমরা ওদের প্রতিহত করবো। ১০ মহররম এই হোক আমাদের দৃপ্ত শপথ। সুন্নিয়তের শত্রুদেরকে আমরা কিছুতেই রেহাই দেবোনা। সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী বলেন, নবী পরিবার তথা আহলে বায়তে রাসুলের (দ.) সীমাহীন ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা দ্বীন ইসলামের নিয়ামত লাভ করেছি। আল্লামা সৈয়দ মাহমুদ আশরাফ আল জিলানি বলেন, ইসলামের বুনিয়াদ প্রিয় নবী (দ.) ও আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) ভালোবাসার মধ্যেই নিহিত। সকল ইবাদত আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার পূূর্বশর্ত হচ্ছে প্রিয় নবীর (দ.) ওপর দরুদ পড়া। যে ইবাদতের আগে ও পরে দরুদ পড়া হয় তা নিশ্চয়ই আল্লাহর দরবারে গৃহীত হয়। তাই, আমাদেরকে বেশি বেশি করে প্রিয় নবীর (দ.) ওপর দরুদ পড়তে হবে। এতে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও প্রিয় নবীর (দ.) নৈকট্যধন্য হতে পারি। মাহফিলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন জমিয়তুল ফালাহ শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান আলহাজ সুফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। কুরআন মজিদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, নিশ্চয়ই কষ্টের পর সুখ আসে। পরিশ্রম ও ত্যাগ ছাড়া সুখ আসেনা। জীবনে সুখ-শান্তি চাইলে অহংকার, হিংসা ও পরনিন্দা করার অভ্যাস বর্জন করতে হবে। আমরা কারবালার শোককে শক্তিতে পরিণত করবো। তিনি ১০ দিনব্যাপী শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে অংশগ্রহণকারী ও সহযোগিতাকারীদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।-বিজ্ঞপ্তি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট