চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

দলিলপ্রতি ঘুষ ১-৫ লাখ টাকা পদ অনুযায়ী ভাগ : টিআইবি

১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:১১ পূর্বাহ্ণ

দেশের সব ভূমি অফিসেই দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। যে কোনো ভূমির নিবন্ধনের জন্য ঘুষ দিতে হয় এক থেকে পাঁচ লাখ টাকা। আর এসব নিয়ম বহির্ভূত অর্থ সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের সবাই পদ অনুযায়ী ভাগ পায়।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক গবেষণা চালিয়ে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ভূমি অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জবাবদিহিতার ঘাটতি রয়েছে। আর্থিক যে অনিয়ম হচ্ছে বা নিয়মবর্হিভূত যে অর্থের লেনদেন হচ্ছে সেটা এখন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। উদ্বেগের বিষয়, পরিস্থিতি আগের চেয়েও খারাপ হচ্ছে।
তিনি বলেন, ভূমি অফিস এমন একটি খাত, যেখানে এমন কোনো জায়গা নেই যে সেবা পেতে দুর্নীতি-অনিয়মের স্বীকার হতে হয় না। এটা খুবই প্রকট আকার ধারণ করেছে।-বাংলানিউজ

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ অনিয়মের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাবও রয়েছে। বিশেষ করে ভূমি অফিসের লোকবল নিয়োগ, পদোন্নতি বা বদলির ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম হয়। এটা আগেও ছিল, এখনও আছে। দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে এ খাতকে পুরোপুরি ডিজিটালাইজেশন করার প্রতি জোর দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
টিআইবি তার গবেষণা প্রতিবেদন উল্লেখ করে, ‘অনেক ক্ষেত্রে নিয়ম-বহির্ভূত অর্থ আদায় যোগসাজশের মাধ্যমে হয় এবং সঙ্গে সাব রেজিস্ট্রার, সহকারী সাব রেজিস্ট্রার, মোহরার, নকলনবিশ ও দলিল লেখকদের একাংশ জড়িত। অভিযোগ রয়েছে এ অর্থের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ, সাব রেজিস্ট্রার অফিসের সবার মধ্যে পদ অনুযায়ী ভাগ-বাটোয়ারা হয়।
টিআইবির দাবি, দলিল নিবন্ধনের জন্য দলিল প্রতি এক থেকে পাঁচ লাখ টাকা, দলিলের নকল উত্তোলনের জন্য এক হাজার থেকে সাত হাজার টাকা ও দলিল লেখক সমিতিকে বাধ্যতামূলক চাঁদা পাঁচশ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এ অর্থের পরিমাণ আবার এলাকাভেদে বাড়ে।
এছাড়া নিবন্ধন ফি পার্শ¦বর্তী দেশের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় সাধারণের মধ্যেও রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতাও পেয়েছে সংস্থাটি। এক্ষেত্রে জমির মূল্য কম দেখিয়ে নিবন্ধন করা হয়। আবার ব্যাংক লোন পেতে জমির মূল্য বাড়িয়েও নিবন্ধন করার মতো ঘটনাও ঘটে।

ভূমি অফিসগুলোর দৈন্যদশার কথাও তুলে এনেছে টিআইবি। দুর্নীতি হয় প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও। এ অর্থে টিআইবি আরও দাবি করে, সাব-রেজিস্ট্রারকে বদলি হতে হলে তিন থেকে ২০ লাখ টাকা গুনতে হয়। এলাকভেদে এ অর্থের পরিমাণও বাড়ে।
এ অবস্থায় টিআইবি সরকারের কাছে বেশকিছু সুপারিশও তুলে ধরেছে। এগুলো হলো- কাজের গতি বাড়ানো, অবকাঠামো, জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট নিশ্চিতকরণ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া, পুরো প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশন করা, ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টার স্থাপন ইত্যাদি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট