চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মানবতার হাত কাউন্সিলরের সম্মানির টাকায় এম্বুলেন্স

২৩ নং উত্তর পাঠানটুলী ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:৫০ পূর্বাহ্ণ

‘অনেক দিন আগের কথা। একদিন হঠাৎ আমার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালে নেয়ার জন্য আশপাশে কোন এম্বুলেন্স ছিল না। জিইসি থেকে একটি এম্বুলেন্সকে খবর দিলেও দীর্ঘক্ষণ পরে এম্বুলেন্সটি আসে। এরমধ্যে রাস্তায় প্রচন্ড জ্যামও ছিল। হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারবো কিনা বা তিনি সুস্থ হবেন কিনা এইসব বিষয়ে টেনশন ছিল প্রচুর। যদিও অনেক দেরিতে হলেও শেষ পর্যায়ে হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয়েছে এবং আমার বাবা সুস্থও হয়েছিলেন’।
কথাগুলো বলেন ২৩ নং উত্তর পাঠানটুলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ। যিনি সিটি কর্পোরেশন থেকে পাওয়া নিজের সম্মানির টাকায় এলাকার মানুষের জন্য দান করেছেন একটি এম্বুলেন্স।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তখন থেকেই আমার ইচ্ছে ছিল এলাকার মানুষের জন্য একটি এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করবো। আর সেই ইচ্ছে আমি সিটি কর্পোরেশন থেকে যে সম্মানি পেয়েছি, সেই সম্মানির টাকা দিয়ে এবং সামান্য কিছু অংশ আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে নিয়ে আধুনিক মানের একটি এম্বুলেন্স নিয়েছি। যা এলাকার মানুষের জন্য ব্যবহার করা হবে’।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ১২ লাখ টাকা মূল্যের আধুনিক এই এম্বুলেন্সটি জাপান থেকে আনা হয়। শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত এই এম্বুলেন্সে ব্যবস্থা রয়েছে সিসিইউর। এম্বুলেন্সটি পাঠানটুলী ওয়ার্ডের মানুষের জন্য ব্যবহার করার কথা রয়েছে। এতে নূন্যতম ফি ধরা হয়েছে মাত্র দু’শ টাকা। এই টাকা এম্বুলেন্সের ড্রাইভার ও এটি রক্ষণাবেক্ষনের কাজে ব্যবহার করা হবে। এছাড়া প্রতিটি বাসা-বাড়িতে একটি হট লাইন নাম্বার লাগানো হবে, যাতে করে মানুষ যে কোন মুহূর্তে এম্বুলেন্সের সেবা গ্রহণ করতে পারে। এম্বুলেন্সের সেবা ২৪ ঘণ্টা পাওয়া যাবে।

কাউন্সিলর জাবেদ বলেন, ‘আমাদের এলাকা থেকে হাসপাতালগুলো হচ্ছে অনেক দূরে। তাছাড়া এখান থেকে যাওয়ার সময় রাস্তায় সবসময় জ্যাম লেগে থাকে। এখন যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য এম্বুলেন্স আসবে আবার নিয়ে যাবে, অনেক সময়ের ব্যপার। যেহেতু আমি নিজেই এর ভূক্তভোগী, এই বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা কম নয়। আমার এলাকার কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে যেন দ্রুত সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়, সে জন্য আমি এই ব্যবস্থাটি করেছি। আমার এই কাজে আমার এক বন্ধুও সহযোগিতা করেছে আমাকে। মূল কথা হচ্ছে মানুষ মানুষের জন্য। আমিও আমার এলাকার মানুষের জন্য কিছু করতে পেরেছি, এটাই হচ্ছে আমার বড় পাওয়া’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট