চট্টগ্রাম বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

৬ আসনে আওয়ামী লীগে ‘হেভিওয়েট’ বিদ্রোহী

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন 

৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ | ১২:১৯ অপরাহ্ণ

বিএনপিবিহীন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। নমনীয় মনোভাবের কারণে বেশিরভাগ আসনে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। তবে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে অনেক হেভিওয়েট বিদ্রোহী প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। বর্তমানে ৬ আসনে নৌকা শক্ত বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে।

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের মধ্যে চার আসনে নির্ভার রয়েছেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীরা। বাকি ১২টি আসনে হেভিওয়েট বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে চট্টগ্রাম-১ আসনে গিয়াস উদ্দিন, চট্টগ্রাম-৪ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য দিদারুল আলম ও কেন্দ্রীয় উপ-   কমিটির সদস্য লায়ন মোহাম্মদ ইমরান, চট্টগ্রাম-৮ আসনে সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চু, চট্টগ্রাম-১০ আসনে নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ, প্রয়াত সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীনের ছেলে ফয়সাল আমীন, চট্টগ্রাম-১৫ আসনে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানে এমএ মোতালেব, ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। এরমধ্যে দিদারুল আলম ছাড়া সকল প্রার্থীই এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর ও তথ্যের গড়মিলের কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিলে অন্তত ৬টি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা কিছুটা র্নিভার হয়েছেন। তারপরও ৬টি আসনে শক্ত বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন।

 

১৬ আসনের মধ্যে চারটিতে তিন মন্ত্রী ও দলের শক্তিশালী প্রার্থী নির্ভার ছিলেন। তাদের আসনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মনোননয়ন জমা দেননি। তারা হলেন, চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনের দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী।

 

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে সংসদ নির্বাচনের দৌড়ে আছেন হোসাইন মো. আবু তৈয়ব। তবে আওয়ামী লীগের দুই শক্ত প্রার্থীর মাথাব্যথা হচ্ছে আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভা-ারীকে ঘিরে। ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল তরিকত ফেডারেশনকে এবারও আসনটি ছেড়ে দেওয়ার গুঞ্জন রয়েছে। এছাড়াও আওয়ামী  লীগঘেঁষা বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির শাহাজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভা-ারীও এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

 

চট্টগ্রাম-১০ (খুলশী, পাহাড়তলী, হালিশহর) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছেন সাবেক মেয়র মনজুর আলম। দীর্ঘদিন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন এবং দানশীল ব্যক্তি হিসেবে মনজুর আলমের বেশ সুনাম রয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।

 

চট্টগ্রাম-১১ (পতেঙ্গা-বন্দর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ প্রার্থী এম এ লতিফ ও কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমনকে ঘিরে ভোটের আগেই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে এ আসনে। নগর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ দুই প্রার্থীকে ঘিরে দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়েছে। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন জিয়াউল হক সুমনের পক্ষে প্রকাশ্য সভায় অংশ নিয়েছেন।

 

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও ভোটে রয়েছেন তিনবারের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী। হেভিওয়েট দুই প্রার্থীকে ঘিরে ভোটের আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। গুঞ্জন রয়েছে, দেশের দুটি বড় শিল্প গ্রুপ এ আসনে বিশেষ নজর রাখছে। নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর নেপথ্যে এই দুই শিল্প গ্রুপ কলকাঠি নাড়ছে বলে জানান স্থানীয় রাজনীতিবিদেরা।

 

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে এবারও আওয়ামী লীগ মনোনীত দিয়েছে বর্তমান সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলামী চৌধুরীকে। মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী। উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে জাতীয় নির্বাচনের লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি।

 

চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমানকে নিয়ে টেনশনে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। দুই প্রার্থীর সমর্থকে ইতিমধ্যে মাঠ গরম হয়ে উঠেছে। দুই প্রার্থী ছাড়াও আছেন জেলা আ. লীগ নেতা আবদুল্লাহ কবির লিটন। তিন প্রার্থীকে ঘিরে তিন ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট