বহুল প্রতীক্ষার পর অবশেষে দুয়ার খুলছে নগরীর আগ্রাবাদস্থ সিজিএস কলোনীতে নির্মিত আধুনিক ৬৮৪ ফ্ল্যাটের বহুতল নয় ভবন। আজ বুধবার ৪৭২ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত চট্টগ্রামের বৃহৎ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে মানসম্মত জীবন-যাপনে যোগ হবে নতুন দিগন্ত। পাশাপাশি দূর হচ্ছে আবাসন সমস্যাও।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ৬ দশমিক ১৬ এক জমির মধ্যে ২০ তলা বিশিষ্ট ৯টি বহুতল ভবন স্থাপন করা হয়। নয় ভবনে সর্বমোট ৬৮৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এরমধ্যে ২টি ২০ তলা ভবনে ৬৫০ বর্গফুটের ১৫২টি, ৩টি ভবনে ১ হাজার বর্গফুটের ২২৮টি এবং ৪টি ভবনে ৮৫০ বর্গফুটের ৩০৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এসব ভবনে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক নির্মাণসামগ্রী, উন্নত ফিটিংস ও আধুনিক প্রযুক্তি। প্রতিটি ভবনের ভেতরে-বাইরে রয়েছে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, জরুরি ফায়ার এক্সিট, সুপরিসর বারান্দা ও কমন স্পেস। খেলার মাঠ, সুইমিংপুলসহ সব ধরনের নাগরিক সুবিধা রাখা হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে থাকা চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগ-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরিন পূর্বকোণকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বুধবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রেখে এসব ফ্ল্যাট নির্মিত হয়েছে।’
প্রসঙ্গত : ২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নগরীর আগ্রাবাদস্থ সিজিএস কলোনিতে জরাজীর্ণ ১১টি ভবনের স্থলে ৯টি বহুতল আবাসিক ভবনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৬৮৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। আধুনিক এসব ফ্ল্যাট নির্মাণে প্রকল্প মূল্য ধরা হয় ৪৮২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটি শেষ করতে ইতোমধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪৭২ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
যে সব সুবিধা আছে এ প্রকল্পে: প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ ফাঁকা। যা সবুজ আচ্ছাদিত স্থান। মাত্র ২৫ শতাংশ স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পে মোট ৯ হাজার ৪৬ টি ফলজ, ওষুধি, বনজ এবং সৌন্দর্যবর্ধনকারী গাছসহ অসংখ্য ফুল গাছ রোপণ করা হয়েছে। ৩ তলা বিশিষ্ট কমিউনিটি হল, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অফিস, সুপরিসর রাস্তা, গভীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও হাঁটাচলার জন্য ওয়াকওয়ের ব্যবস্থা। উন্মুক্ত স্থান, খেলার মাঠ, কিডস জোন, মিনি পার্ক, ল্যান্ডস্ক্যাপিংয়ের ব্যবস্থা। নিজস্ব গভীর নলকূপ ও ভূগর্ভস্থ জলাধার দ্বারা সুপেয় পানির, সিকিউরিটি লাইট, সিসিটিভি দ্বারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং ব্যবস্থা, দুটি জেনারেটর, বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন, ওয়াটার বডি ও অত্যাধুনিক ফায়ার হাইড্রেন্টের ব্যবস্থা, ৯টি ভবনে তিনটি করে মোট ২৭টি লিফট, প্রতিটি ফ্ল্যাটে পিএবিএক্স বা ইন্টারকম, সোলার প্যানেলের সংস্থাপন, সেন্ট্রাল ডাস্টবিন ও ওয়েস্ট কালেকশন পয়েন্ট, আধুনিক সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, পাম্প হাউজ ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা, জ¦ালানি সাশ্রয়ের জন্য রেটিকুলেটেড প্রি-প্রেইড এলপিসি সিস্টেমের ব্যবস্থা রয়েছে।
পূর্বকোণ/আরডি