আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে নগরীর পুরাতন বাকলিয়া থানা এলাকা থেকে চন্দনপুরা পর্যন্ত নির্মিত জানে আলম দোভাষ সড়কের।
আগামী ১৪ নভেম্বর ১ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘বাকলিয়া এক্সেস রোড’ নামে পরিচিত এ সড়কের নাম পরিবর্তন করে সম্প্রতি জানে আলম দোভাষ সড়ক নামকরণ করা হয়। ইতোমধ্যে সড়কটিতে যানচলাচল করছে। নগরীর অন্যতম ব্যস্ত এবং ঘনবসতিপূর্ণ বাকলিয়া এলাকার শাহ আমানত সংযোগ সড়কের পুরাতন বাকলিয়া থানা এলাকা থেকে চন্দনপুরা পর্যন্ত ১ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে সিডিএ। ২০১৮ সালের নভেম্বরে শুরু হওয়া সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০৫ কোটি টাকা। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা এবং দশতলা ভবন নিয়ে জটিলতায় প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে শেষ হয়নি। পরবর্তীতে ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২০১৭ কোটি টাকা।
জানে আলম দোভাষ সড়কের প্রকল্প পরিচালক কাজী কাদের নেওয়াজ বলেন, বাকলিয়া এক্সেস রোড প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। আগামী ১৪ নভেম্বর প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এই সড়কের অন্যতম সুবিধাভোগী হবেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ। তারা কোন প্রকার ভোগান্তি ও যানজট ছাড়াই চকবাজার ও এর আশপাশের এলাকায় দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌঁছে যাবে।
শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা উল্লেখ করে প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, চকবাজার এলাকা কেন্দ্রিক অসংখ্য স্কুল, কলেজ ও কোচিং সেন্টার রয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে আসা এসব শিক্ষার্থীদের আগে কোতোয়ালী-আন্দরকিল্লা কিংবা বহদ্দারহাট হয়ে চাকবাজার যাতায়াত করতে হতো। এখন তাদের দূরত্ব অনেক কমেছে। সেই সাথে কমেছে খরচও।
প্রকল্পে সূত্রে জানা যায়, মামলা, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা এবং ডিসি রোডে মৌসুমী আবাসিক এলাকায় সড়কের মাঝে একটি দশতলা ভবন নিয়ে জটিলতায় দীর্ঘদিন প্রকল্পে কাজের অগ্রগতি আটকে ছিল। প্রথমদিকে, ভবন ভেঙে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও পরবর্তীতে ১০ তলা ভবন অক্ষত রেখে, ভবনের উত্তর পাশ দিয়ে সড়কটি নিয়ে যাওয়া, গত বছরের এপ্রিলে এলাইনমেন্ট (নকশা) পরিবর্তনের বিষয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের করা সুপারিশের অনুমোদন দিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। যানজট কমানোর পাশাপাশি দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাথে নগরীর যোগাযোগ সহজ করার ক্ষেত্রে মাস্টারপ্ল্যানে রাস্তাটি নির্মাণের প্রস্তাব ছিল।
এছাড়া বহদ্দারহাট থেকে শাহ আমানত সেতু (কর্ণফুলী সেতু) পর্যন্ত ৬ লেনের সংযোগ সড়ক নির্মিত হলেও নগরীর বিস্তৃত এলাকার মানুষ এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। পুরাতন বাকলিয়া থানা এলাকা থেকে চন্দনপুরা পর্যন্ত ১ দশমিক ৫৩ কিলোমিটারের এই সড়কের মাধ্যমে বহদ্দারহাট-কর্ণফুলী সংযোগ সড়কের সুফল পাচ্ছে বাকলিয়াসহ আশপাশের এলাকার মানুষ।
এমন বিকল্প রোডের মাধ্যমে নগরীর যানজট কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা ১৮নং পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হারুনুর রশিদ বলেন, বাকলিয়াবাসীদের চকবাজার ও আশপাশ এলাকায় যেতে বহদ্দারহাট হয়ে যেতে হবে না। এছাড়া, দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে আসা চকবাজারমুখী শিক্ষার্থী এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসা রোগীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে গন্তব্যে যেতে পারবেন। চকবাজারগামী মানুষকে চাক্তাই কিংবা বহদ্দারহাট ঘুরে যাতায়াত করতে হবে না। একদিকে মানুষের সময় বাঁচবে, অন্যদিকে কমবে ভোগান্তি।
সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, সম্প্রতি সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এই সড়কটি ব্যবহারের মাধ্যমে বাকলিয়াবাসীর সময় ও অর্থ বাঁচবে। দ্রুত সময় ও অল্প খরচে মানুষ গন্তব্যে পৌঁছে যাবে।
উল্লেখ্য, নগরীর সিরাজুদ্দৌল্লা রোডে চন্দনপুরা মসজিদের বিপরীত পাশে আয়েশা খাতুন লেইন (প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান খান কায়সারের বাড়ির পাশ দিয়ে) দিয়ে আড়াআড়িভাবে রোডটি চাক্তাই খালের ওপর দিয়ে যাচ্ছে। মৌসুমী আবাসিক এলাকা, বগারবিল হয়ে সৈয়দ শাহ রোড অতিক্রম করে পুরাতন বাকলিয়া থানার পাশ দিয়ে শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়কের সঙ্গে মিলিত হচ্ছে।
পূর্বকোণ/আরডি