চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মতবিনিময় সভায় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক

ওষুধের মান গুনাগুন নিরাপত্তার বিষয়ে কোন সমঝোতা নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:২৩ পূর্বাহ্ণ

ওষুধের মান, গুনাগুন ও নিরাপত্তার বিষয়ে কোন সমঝোতা করা হবে না বলে জানিয়েছেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান। ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সাথে মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদন বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের বেশিরভাগ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা এ শিল্পে বিনিয়োগ করতে দ্বিধা করছেন। আবার অনেকে এ শিল্পে ভালোভাবে বিনিয়োগ না করেই লাভের অংশ দিয়ে অন্যকিছু করার চেষ্টা করছেন। এভাবে কখনোই একটি কোম্পানি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারবে না। কোন কোম্পানি যদি এ শিল্পে উন্নতি করতে চায় তাহলে অবশ্যই ওষুধের মান, গুনাগুন ও নিরাপত্তার বিষয়টি তাকে মাথায় রাখতে হবে। আর এ জন্য তাকে বাড়াতে হবে বিনিয়োগ। তা না হলে লোকসানে পড়তে হবে। আর ওষুধের মান, গুনাগুন ও নিরাপত্তার বিষয়ে কোন সমঝোতা করবে না ওষুধ প্রশাসন। কেননা, এতে মানুষের জীবন জড়িয়ে রয়েছে। আমি আশা করছি, আপনারা দ্বিধান্বিত না হয়ে এ শিল্পে বিনিয়োগ করবেন এবং মানসম্মত ওষুধ উৎপাদন করবেন। এ বিষয়ে আপনাদের ট্রেনিং দেয়ার পাশাপাশি সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে ওষুধ প্রশাসন।’ আয়ুর্বেদিক ওষুধ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মূলত গাছ-গাছালির গুনাগুন দিয়ে আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির কথা থাকলেও এখন তা আর হচ্ছে না। বেশিরভাগ আয়ুর্বেদিক ওষুধালয়গুলো ক্যামিকালের মিশ্রণে ওষুধ তৈরি করে। এসব অসাধু উপায়ে যারা ওষুধ উৎপাদন করছে তাদের উচিত ওষুধী গাছের চাষ করা এবং সেখান থেকে উপাদান সংগ্রহ করে ওষুধ উৎপাদন করা। এতে ওষুধের মান ও গুনাগুন ঠিক থাকবে।’গতকাল শুক্রবার নগরীর জিইসি মোড়ে একটি অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠিত এ সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. রুহুল আমিন। সভায় উপস্থিত ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সম্মুখে এ শিল্পের সমস্যাবলী তুলে ধরেন ওষুধ উৎপাদকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা। লোকসানের কারণে এ শিল্পে বিনিয়োগেরও সাহস পাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেছেন ইউনাইটেড ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. ম. রমিজউদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা গুনগত ও মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদন করি। কিন্তু ওষুধগুলো কোন এক কারণে প্রেসক্রাইব করা হচ্ছে না। অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে ওষুধগুলো। সব মিলিয়ে প্রচুর লোকসান গুনতে হচ্ছে আমাদের। তাই এই শিল্পে বিনিয়োগ করার সাহস পাচ্ছি না।’ তিনি আরো বলেন, ‘ছোট কোম্পানিগুলো যদি এমন আরো নানান সমস্যার কারণে টিকে থাকতে না পারে তাহলে বড় কোম্পানিগুলো এর ফায়দা লুটবে। দাম বেড়ে যাবে ওষুধের।’ এসময় এসব সমস্যা সমাধান করে ওষুধ শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ওষুধ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

ওষুধের মূল্য তালিকা নিয়ে ওষুধ উৎপাদকারী প্রতিষ্ঠান হেলথ এশিয়া লাইফ সাইন্স লিমিটেডের সাইফুদ্দিন খালেদ বলেন, ‘বাজারে দুই কোম্পানির একই রকম পণ্যের দুই ধরনের দাম। দেখা যাচ্ছে এক কোম্পানিটির মূল্য ৭০ টাকা আরেকটির মূল্য দেড়শ টাকা।’ এ বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ওষুধ উৎপাদনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও চট্টগ্রামের ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট