চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জনসচেতনাতামূলক সভায় মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান

নকল-মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ তৈরি বিক্রির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক

৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:১৯ পূর্বাহ্ণ

হাজারি গলিকে নকল ও ভেজাল
ওষুধমুক্ত রাখার অঙ্গীকার

নকল, ভেজাল, আনরেজিস্ট্রার্ড ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ তৈরি ও বিক্রির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে নগরীর রীমা কনভেনশন সেন্টারে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের আয়োজনে নকল, ভেজাল আনরেজিস্ট্রার্ড ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ প্রতিরোধে জনসচেতনাতামূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি এমন সকল বিষয়ের উপর জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে ফার্মেসিগুলোতে ভেজাল ও নকল ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। একই সাথে জীবন রক্ষাকারী এই ওষুধ সংরক্ষণের বিষয়েও যথাযথ নিয়ম মানা হচ্ছে না। তাই প্রত্যেক ফার্মেসিকে মডেল ফার্মেসিতে রূপান্তরিত করতে হবে। কিন্তু কোন অবস্থাতেই মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ সেখানে রাখা যাবে না।

মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, মানুষের জীবন রক্ষাকারী এই ওষুধ কিন্তু মুদি পণ্য নয়। এটাকে যত্রতত্রভাবে যেখানে সেখানে রাখলে হবে না। নির্দিষ্ট জায়গায় এবং সঠিক তাপমাত্রায় রাখতে হবে। কেউ বেশি লাভের আশায় ভেজাল ওষুধ বিক্রি করবেন না। সবাই যদি নিজ নিজ থেকে সচেতন হই তাহলে এই ভেজাল ও নকল ওষুধ বানানো এবং বিক্রি বন্ধ হয়ে যাবে। সকল ফার্মাসিস্ট ওষুধের ব্যবহারবিধি, পরিমাণ ক্রেতাকে ভালোভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে। এন্টিবায়োটিক বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি ভালো কোম্পানির ওষুধ সুলভে বিক্রি করবেন। কোনো অবস্থাতেই মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ রাখা যাবে না। যদি এমন ওষুধ কোন ফার্মেসিতে পাওয়া যায় তাহলে সেই ফার্মেসির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোন ওষুধ বিক্রি করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেউ সর্দি-কাশির জন্য ওষুধ চাইলে তা দেয়া যাবে না। নিজে নিজে ডাক্তার হয়ে প্রেসক্রিপশনও দিতে পারবেন না কেউ। শুধুমাত্র কাউন্সিলিং করতে পারবেন। কেউ যদি এই বিষয়ে গাফেলতি করে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই সাথে ফার্মাসিতে যে সকল ফার্মাসিস্ট রয়েছে, তারা প্রত্যেকেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে। দেশে উৎপাদিত ওষুধ দ্বারা দেশের চাহিদার ৯৮ শতাংশ মিটানো সম্ভব হচ্ছে। আমেরিকা ও ইউরোপের দেশসহ ১৪৬টি দেশে নিয়মিত ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশ থেকেই। উন্নত প্রযুক্তির ওষুধ এখন দেশেই উৎপাদন হচ্ছে। বাংলাদেশ আগের চেয়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতি চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি সমীর কান্তি সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদেকুর রহমান, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. রুহুল আমিন, বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের সহ-সভাপতি এম মোসাদ্দেক হোসেন ও সচিব মুহাম্মদ মাহবুবুল হক।
চট্টগ্রামের বৃহত্তর ওষুধের পাইকারি বাজার হাজারি লেনের ফার্মেসি- দোকানগুলোতে নকল ও ভেজাল ওষুধ বিক্রি থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে অঙ্গীকার করে বাংলাদেশ কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদেকুর রহমান বলেছেন, এখন থেকে এই লেনে যে সকল ফার্মেসি-দোকান রয়েছে প্রত্যেক দোকানে আজ থেকে নি¤œমানের ওষুধ বিক্রি বন্ধ করে দেয়া হবে। একই সাথে নকল ও ভেজাল ওষুধ বিক্রিও বন্ধ করা হবে। শুধুমাত্র ফার্মেসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই হবে না, যারা এসব ওষুধ তৈরি এবং সাপ্লাই করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেন তিনি।

এদিকে, সকালে নগরীর বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে এবং শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির ষষ্ঠতলায় ‘শেভরন হসপি ফার্মা’ নামে দুটি মডেল ফার্মেসি উদ্বোধন করেন মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান। পরে তিনি এই দুই প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট