চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ৪৩ কর্মীর কর্মবিরতি

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কক্সবাজার

৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:১৪ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক কাজের জন্য নিয়োগকৃত ৪৩ জন কর্মীর প্রায় ১৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের অভি এন্টারপ্রাইজ নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। জুলাই ও আগস্ট মাসের বেতনও দেয়া হয়নি তাদের। বেতন না পেয়ে গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালে কোন ধরনের সেবা দেয়নি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া কর্মীরা। তারা সবাই বকেয়া বেতনের দাবিতে হাসপাতালে কাজ বন্ধ করে সভাও করেছে।

জানা যায়, চলতি বছরের ২০ মার্চ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ‘অভি এন্টারপ্রাইজ’ নামক ঠিকাদার চুক্তিভিত্তিক সুইপার, গার্ড ও ক্লিনার মিলে ৪৩ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দেয়। ‘অভি এন্টারপ্রাইজ’ প্রতিষ্ঠানের সাথে কর্মীদের চুক্তি হয়। চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে, প্রতিজন কর্মীকে প্রতিমাসে বেতন দেয়া হবে ১২ হাজার ৪৫০ টাকা করে।

কর্মীরা বলেন, আমরা মার্চের ২০ তারিখ যোগদান করেছি। ২০ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত মোট ১০ দিনের থোক বেতন দেয়ার কথা জনপ্রতি ৭ হাজার ৫০০ টাকা করে। কিন্তু এই ১০ দিনের বেতন পুরোটাই মেরে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৪৩ জনের মোট ১০ দিনের বেতন আসে প্রায় ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০ টাকা। একটি টাকাও দেয়া হয়নি কর্মীদের। কিন্তু বেতনের খাতায় স্বাক্ষর নিয়ে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এরপর এপ্রিল, মে ও জুন মাসের বেতন দিয়েছে একসাথে। প্রতিমাসে জনপ্রতি কর্মীর বেতন ১২ হাজার ৪৫০ টাকা। কিন্তু তিনমাস পরে বেতন দিয়েছে জনপ্রতি ২১ হাজার টাকা। বেতনের খাতায় সবার থেকে স্বাক্ষর নিয়েছে প্রতিমাসে ১২ হাজার ৪৫০ টাকা করে মোট ৩৭ হাজার ৩৫০ টাকার। কিন্তু জনপ্রতি ১৬ হাজার ৩৫০ টাকা করে কম দিয়ে তিন মাসে আত্মসাৎ করেছে ৭ লক্ষ তিন হাজার পঞ্চাশ টাকা। ৪৩ জন কর্মীর বেতন মেরে ২০ মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত আত্মসাৎ করেছে মোট ১০ লাখ ২৫ হাজার ৫৫০ টাকা। অভিযোগে আরো জানা যায়, জুলাই ও আগস্ট মাসের বেতন এখনো বকেয়া রয়েছে। দুই মাসের একটি টাকাও এখনো দেয়া হয়নি। অথচ এখন সেপ্টেম্বর মাস চলছে।

এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সুপার ডা. মহিউদ্দিন পূর্বকোণকে বলেন, ‘দুই মাসের বেতন বকেয়া থাকার কারণে চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা আমার কাছে এসেছিল গত মঙ্গলবার সকালে। আমি তাদের ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগের জন্য বলেছি। আমিও যোগাযোগ করেছি। মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ পেলে দ্রুত সময়ে তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদার।’ বেতনের ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে সুপার বলেন, ‘যখন আউটসোর্সিং কর্মীরা নিয়োগ হয়েছিল তখন আমি যোগদান করিনি। আর বেতনের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে কেউ অভিযোগও করেনি। যদি পুরো টাকা না পেয়ে স্বাক্ষর করে, তাহলে কর্মীরা ভুল করেছে। এ বিষয়ে এখনো যদি কেউ অভিযোগ করে, তাহলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অভি এন্টারপ্রাইজের মালিক অভির মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ফোন রিসিভকারী নিজেকে প্রতিষ্ঠানের স্টাফ পরিচয় দেন। প্রতিবেদক পরিচয় দেয়ার পর তিনি নিজেকে অফিসের স্টাফ দাবি করে কি বিষয়ে ফোন করেছি জানার চেষ্টা করেন বেশ কয়েকবার। অভি’র নম্বর চাইলে ব্যক্তিগত নম্বর তিনি দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট