চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

বোরো ধানের জমিতে বিএলবি রোগ বিস্তারে দুশ্চিন্তায় কৃষক

বাঁশখালী

অনুপম কুমার অভি, বাঁশখালী

৫ মে, ২০১৯ | ২:২৮ পূর্বাহ্ণ

বাঁশখালী উপজেলায় বোরো মৌসুমে হাইব্রিড ধানের জমিতে পাতাপোড়া বিএলবি রোগ দেখা দেয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষক। ধানি জমিতে সাদা সার তুলনামূলকভাবে বেশি প্রয়োগ করায় প্রখর রোদে ধানের সবুজ পাতাগুলো পুড়ে গেছে। লাল সার প্রয়োগ করলে এই অবস্থা হতো না বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম।
জানা যায়, বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া, সাধনপুর, খানখানাবাদ, বাহারছড়া, কালীপুর, বৈলছড়ি, চাম্বল, সরল, কাথারিয়া, শীলকূপ, গ-ামারা, ছনুয়া, শেখেরখীল, পুইছড়িসহ ১৪টি ইউনিয়ন ও বাঁশখালী পৌরসভা এলাকায় বোরো মৌসুমে ৯৮৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড বিভিন্ন ধরনের বীজ বপনের মাধ্যমে বোরো আবাদ করেছেন কৃষকরা। মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে পোকার আক্রমণের পাশাপাশি ধান পাকার পূর্বে ধান ক্ষেতে পাতাপোড়া বিএলবি রোগ বিস্তার করেছে। এ নিয়ে কৃষকরা দফায় দফায় কৃষি অফিসের সাথে ও সার ডিলারদের সাথে যোগাযোগ করে যাচ্ছে। ধান ক্ষেতে চাষীরা কীটনাশক প্রয়োগ করলেও কোন সুফল না পেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে।
কৃষক নুরুল আলম জানান, একই জমিতে পূর্বে তিনি বোরো ধান চাষাবাদ করেছেন। কিন্তু পাতা পোড়া রোগ হয়নি। নতুন জাতের চারা রোপণ করলে পাতা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এক কানি জমিতে পঞ্চাশ আড়ি ধান ঘরে তুলতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন এই কৃষক। সেচ, সার, কীটনাশক প্রয়োগ করে ৪০ শতকে ১০/১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পাতাপোড়া রোগের কারণে তার অনেক টাকা ক্ষতি হবে বলে জানান। চাম্বল গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক জানান, চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের পর বৃষ্টি হওয়াতে পানি সেচের মাধ্যমে অধিক ফলনের আশা করেছিলাম। কিন্তু ধান রোপণের পরে বিষ, সার প্রয়োগ করে কিছুদিন যেতে না যেতে পাতা পোড়া রোগ দেখা দেয়।
চাম্বল ও শীলকূপ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কিছু কিছু ধানি জমিতে সবুজ পাতা দেখা গেলেও অধিকাংশ জমিতে পাতাপোড়া রোগের কারণে ধানগুলো চিটা হয়ে গেছে। সবুজ ধানি জমি বিবর্ণ হয়ে পড়ে আছে। অর্ধেক কাঁচা ও অর্ধেক পাকা অবস্থায় কৃষকরা ধান কাটতে শুরু করে দিয়েছেন। গ-ামারা এলাকায়ও পাতাপোড়া রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক জমিতে ধানের চারা নষ্ট অবস্থায় পড়ে আছে।
বাঁশখালী উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে পাতা পুড়ে গেছে। কৃষকদের বারবার সারিবদ্ধভাবে উত্তর-দক্ষিণ দিকে লঘু পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু কৃষকরা ঘন করে চারা রোপণ করে। এতে কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। বিপদ সংকেতের কারণে দ্রুত ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বাঁশখালী সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার জাবের আহমদ বলেন, বিভিন্ন এলাকায় পাতাপোড়া রোগের খবর আসার পর মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত উপ-সহকারী কর্মকর্তাদেরকে ধান সম্পর্কে কৃষককে পরামর্শ দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বাঁশখালী কৃষি কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, বোরো মৌসুমে ধানি জমিতে কৃষকরা অতিরিক্ত সাদা সার প্রয়োগে ও রোদের তাপ প্রখর হওয়ায় ধান গাছের পাতায় পোড়া রোগ দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে কৃষকরা লাল সার প্রয়োগ করলে কিছুটা সুফল পেত। কিন্তু সেই সুযোগ কৃষকরা পায়নি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট