চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পরাকিয়ায় ধরা পড়ে পালিয়েছে প্রেমিক

রাঙ্গুনিয়ায় প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা , রাঙ্গুনিয়া

৫ মে, ২০১৯ | ২:৪১ পূর্বাহ্ণ

দু’জন নিষ্পাপ শিশু ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে খেলা করছে। মা কোথায় জিজ্ঞেস করলে বলে ঘুমাচ্ছে, ঘুম থেকে ওঠে আবার আসবে। কিন্তু এই অবুঝ শিশু দু’টো জানে না, তাদের মা আর কখনো ফিরে আসবে না। অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে অকালেই আত্মহত্যা করে পরপারে পাড়ি জমিয়েছে সে। শুক্রবার (৩ মে) রাত ১ টার ঘটনা। নিজের দুই শিশুকে ঘুমে রেখেই পরকীয়া প্রেমিক শ্বশুর বাড়ি এলাকার প্রতিবেশী ভাসুর পুত্র মো. মিজানের (২৫) সাথে অনৈতিক কর্মকা- চালাচ্ছিল প্রবাসীর এই স্ত্রী। কিন্তু বাচ্চারা

ঘুমালেও, ঘুম ছিল না শ্বশুর বাড়ির লোকজন। তারা বিষয়টি হাতেনাতে ধরে ফেলে। ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর অনৈতিক সম্পর্ক ফাঁস হওয়ায় জান্নাতুল ফেরদৌস (২৭) নামের এই প্রবাসীর স্ত্রী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের সৈয়দুল হক চেয়ারম্যান বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িত প্রেমিক মিজান পলাতক রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে। এই বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, ২০১১ সালের দিকে উপজেলার কোদালা ইউনিয়নের গোয়ালপুরা সিংহঘোনা এলাকার আবদুল মালেকের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের সাথে বিয়ে হয় চন্দ্রঘোনা সৈয়দুল হক চেয়ারম্যান বাড়ির মরহুম গফুর আলমের পুত্র প্রবাসী মোহাম্মদ ইসার। তাদের সংসারে মুসতাকিম আহম্মদ ঈশান (৬) ও ঈশিতা ইছা মীম (৪) নামের এক পুত্র ও এক কন্যা শিশু সন্তান রয়েছে। স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌসের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পরে প্রতিবেশী ভাসুর পুত্র চন্দ্রঘোনা তৈয়বিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা হারুনের রশিদের ছেলে মো. মিজান। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ার সুযোগে তারা প্রায়ই রাতে দেখা করতো। দীর্ঘদিন ধরে গোপনে তারা এই সম্পর্ক চালিয়ে গেলেও শুক্রবার (৩ মে) রাত ১টার দিকে দেখা করতে গেলে দ্’ুজনকে অনৈতিক অবস্থায় একসাথে দেখে ফেলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এসময় প্রেমিক মিজান তার পরকীয়া প্রেমিকাকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেয় এবং কথা বলার একপর্যায়ে সবাইকে ধাক্কা মেরে ঘর থেকে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাটি সকালে সমাধান করার কথা বলে সবাই ঘুমাতে চলে যায়। এই ঘটনার দেড় ঘণ্টা পর এই গৃহবধূর রুম থেকে গোঙ্গানির শব্দ এলে দরজা ভেঙ্গে দেখে সে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের সিলিংয়ের সাথে ঝুলে আছে। পরে তাকে বাঁচাতে ওড়না কেটে নিচে নামিয়ে দেখে সে মারা গেছে। খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গন্যমান্য ব্যক্তি ঘটনাস্থলে গিয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত করতে মর্গে প্রেরণ করা হয়। ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট