চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদনের পরও বাড়ছে লবণের দাম

ইফতেখারুল ইসলাম

১০ জুন, ২০২৩ | ১২:৩৪ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারে প্রতিমণ লবণ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। তা পরিবহন এবং গাড়িতে উঠা-নামা ও কমিশন মিলে প্রতিমণে খরচ পড়ে আরো প্রায় ৭০ টাকা। এরপর মিলে ওয়াস এবং ক্রাস করে বাজারজাত করা হয়। মিল মালিকরা এখন সেই লবণ বিক্রি করছে প্রতি বস্তা (৭৪ কেজি) ১১৫০ থেকে ১২৫০ টাকায়। অথচ চাষীদের কাছ থেকে লবণ কেনার সময় প্রতি মণে ৪ থেকে ৫ কেজি বেশি নেয়া হয়। এবছর দেশে রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদন হওয়ার পরও কোরবানির ঈদ যতই কাছে আসছে লবণের দাম ততই বাড়ছে।

 

চাক্তাইয়ের মেসার্স হাজি আহমদ লাল মিয়া সল্ট ক্রাসিং ইন্ডাস্ট্রিজের আসাদুজ্জামান পূর্বকোণকে বলেন, লবণের সংকট নেই। তবে ব্যবসার অবস্থা তেমন ভাল নেই। দাম ঊর্ধ্বমুখী। ক্রাস লবণ চলছে প্রতি বস্তা ১২৫০ টাকা। লোডশেডিংয়ের কারণে মিলগুলো ঠিকভাবে চালানো যাচ্ছে না। তাই উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, দামও বাড়তি। লবণে ময়শ্চার থাকলে চামড়া ব্যাকটেরিয়া এবং পাঙ্গাস আক্রান্ত হয়ে পচে যাবে। কোরবানির সময় দাম আরো বাড়ার শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। মাস খানেক আগে লবণের দাম ছিল ৯৫০ থেকে ১১০০ টাকা।

 

বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিন লবণের দাম বৃদ্ধিকে সিন্ডিকেটের কারসাজি উল্লেখ করে বলেন, পর্যাপ্ত লবণ উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও লবণের দাম কেন বাড়বে? এমন প্রশ্ন তুলে বলেন, সাধারণ মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে। একটি গরু বা মহিষের চামড়ায় ৮ থেকে ১০ কেজি লবণ লাগে। গত বছর গরু, মহিষ ও ছাগল মিলে প্রায় ৩ লাখ চামড়া সংগ্রহ হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, অনেক চামড়া শহরে আসে না। অনেক বেপারি স্থানীয়ভাবে লবণজাত করে সরাসরি ঢাকায় বিক্রি করে। বর্তমানে প্রতি বস্তা লবণ ১১২০ থেকে ১১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলে দাম ফের বাড়িয়ে দেয়। এটা কারসাজি ছাড়া আর কিছুই নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) লবণ মাঠ পরিদর্শক ইদ্রিস আলী পূর্বকোণকে জানান, এবছরের মত লবণ উৎপাদন আর কখনো হয়নি। এবার ২২ লাখ ৩৩ হাজার টন লবণ উৎপাদন হয়েছে। দেশের চাহিদা হল ২৩ লাখ টন। চাষী পর্যায়ে লবণের পাইকারি দর মণ ৪০০ টাকা।

 

এবার যেহেতু লবণের ঘাটতি নেই, তাই আমদানিরও প্রয়োজন নেই। এবারের কোরবানি ঈদে সারাদেশে লবণের চাহিদা রয়েছে এক লাখ টন। কোরবানির চামড়ায় যে লবণ ব্যবহার করা হয় তার জন্য লবণের ওয়াস বা ক্রাসের প্রয়োজন নেই। মাঠে উৎপাদিত লবণ সরাসরি চামড়ায় ব্যবহার করা যায়। তবে মিল মালিকরা ময়শ্চারসহ নানা কথা বলে প্রতি মণে ৪৪ থেকে ৪৫ কেজি লবণ নিয়ে নেয়।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে মোট উৎপাদিত লবণের প্রায় ৯০ শতাংশ আসে কক্সবাজার থেকে। বাকি ১০ শতাংশ হয় চট্টগ্রামের বাঁশখালীসহ দেশের অন্যান্য উপকূলীয় এলাকায়।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট