চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রায় চার মাস ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে চর চাক্তাই সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ

সরগরম মাঠ এখন পরিত্যক্ত

ইমরান বিন ছবুর

৭ জুন, ২০২৩ | ১২:৩৬ অপরাহ্ণ

ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা। দৈনিক ১২ ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের পদাচারণায় সরগরম থাকা মাঠগুলো এখন পরিত্যক্ত। নগরীর ১৯ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডে অন্য কোন খেলার মাঠ না থাকায় খেলাধুলার একমাত্র মাধ্যমও এটি। চার মাস আগেও প্রতিদিন দলবেঁধে খেলতে আসতেন শিক্ষার্থী ও এলাকার আশপাশের ছেলেরা। স্বাধীনতার পর থেকে মাঠটি চর চাক্ধসঢ়;তাই সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের দখলে থাকলেও, গত এক যুগ ধরে মাঠটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দখলে বলে জানা যায়। যা এলাকার শিশু-কিশোর ও যুবকদের কাছে ‘স্কুল মাঠ’ হিসেবে পরিচিত। তবে দীর্ঘ চার মাসের বেশি সময় ধরে মাঠটি পরিত্যক্ত থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার যুব সমাজ।

 

এদিকে, দুই বছরের বেশি সময় ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ। বছরে বারো মাস যা অনেকটা ডোবার মত থাকে। মাঠে খেলা দূরে থাক, গত দু’বছরে এটাকে কেউ মাঠ হিসেবে দেখেনি। কেউ দেখেছে ডোবা হিসেবে, কেউবা পুকুর হিসেবে। জোয়ার বা বৃষ্টির পানিতে সয়লাব হয়ে যায় পুরো মাঠ। ফলে এত বড় মাঠ থেকেও শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত। একই দৃশ্য নগরীর সরকারি নাসিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের। শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার পাশাপাশি সেখানে অনুশীলন করতো কয়েকটি ক্রিকেট একাডেমিও। তবে পরিকল্পিত ড্রেন না থাকা ও মাঠ নিচু হয়ে যাওয়ায় মাঠটিও এখন কাদামাঠিতে একাকার।

 

এভাবে একে একে পরিত্যক্ত বা খেলার অনুপযোগী হচ্ছে নগরীর বিদ্যালয়গুলোর খেলার মাঠ। সরকারের পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকা, নিয়মিত সংস্কার না করায় মাঠগুলোর এমন বেহাল দশা হচ্ছে। তবে সময়মত বরাদ্দ পেলে, নিয়মিত সংস্কার করলে মাঠগুলো ফের তাদের পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে পারবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

 

চর চাক্তাই সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সদস্য ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল আলম মিয়া বলেন, প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের মাঠ ও ফুটপাত সংস্কারের কাজ চলছে। সামান্য বৃষ্টিতে মাঠে পানি জমে যায়, ফলে শিক্ষার্থীসহ এলাকার শিশু-কিশোররা মাঠে খেলাধুলা করতে পারে না। এ সমস্যা সমাধানে মাঠের চারপাশে আটটি পাইপ ও ড্রেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফলে বৃষ্টি ও জোয়ারেও মাঠে আর পানি জমবে না। এছাড়াও মাঠটি উঁচু করা হবে। মাঠ সংস্কারের কাজ চলতি জুন মাসের মধ্যে শেষ হলে মাঠটি ফের তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে বলে আশা করছি।

 

চর চাক্তাই সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানিক চন্দ্র বৈদ্য বলেন, মাঠটি এক সময় স্কুলের দখলে থাকলেও এখন এটির দেখাশুনো করে সিটি কর্পোরেশন। এটি সংস্কারের দায়িত্বও তাদের। বেশ কিছুদিন ধরে এখানে শিক্ষার্থী ও আশপাশের ছেলেদের খেলাধুলা বন্ধ রয়েছে।

 

নাসিরাবাদ সরকারি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনুপম দাশ বলেন, সারাবছর শিক্ষার্থীরা এই মাঠে খেলাধুলা করে থাকে। মাঠের চারপাশে ফুটপাত নির্মাণ করায় মাঠ কিছুটা নিচু হয়ে যায়। ফলে এখন বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকে। তবে মাঠ সংস্কারের জন্য বরাদ্দ চেয়ে আমরা আবেদন করেছি। বরাদ্দ পেলে মাঠটি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা উপযোগী হয়ে উঠবে।

 

বাকলিয়া সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, মাঠ সংস্কারের জন্য কোন বরাদ্দ না থাকায় মাঠটি এখনো পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এসে মাঠ পরিদর্শন করেছেন এবং মাঠ সংস্কারের জন্য আশ^াস দিয়েছেন।

 

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার সরকার বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠের জন্য ওভাবে কোন বরাদ্দ থাকে না। তবে কোন প্রতিষ্ঠান প্রধান যদি বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করে তা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ দিয়ে থাকি।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট