চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

অগ্রিম আদায়কৃত উৎস কর সমন্বয় করা জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ মে, ২০২৩ | ১:২২ অপরাহ্ণ

রড বিক্রয়ের ক্ষেত্রে দুই শতাংশ উৎসে কর এবং স্ক্র্যাপ আমদানির ক্ষেত্রে টনপ্রতি ৫০০ টাকা উৎস কর কাটার বিধান আছে। এই কর্তিত করকে ন্যূনতম করের অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। যার দেখা যায় যে পরিমাণ উৎস কর কাটা হয় তা ওই অর্থবছরের প্রদেয় আয়করের চেয়ে বেশি হয়ে যায়। অন্যদিকে, আইনানুযায়ী পরিশোধিত অতিরিক্ত কর পরবর্তী অর্থবছরে সমন্বয় করার সুযোগ নেই। এতে ব্যবসায়ীদের প্রদেয় আয়করের চেয়ে বেশি কর পরিশোধ হয়ে যায় প্রতি অর্থবছর। যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। তাই স্ক্র্যাপ আমদানির ক্ষেত্রে টনপ্রতি উৎস কর ২০০ টাকা করা, রড বিক্রয়ের ওপর উৎস কর প্রত্যাহার করা, আমদানি পর্যায়ে উৎসে কর ন্যূনতম করের বিধান রহিতকরণ এবং সংশ্লিষ্ট বছরে পরিশোধিত অতিরিক্ত কর পরবর্তী অর্থবছরে সমন্বয় করার সুযোগ থাকা জরুরি। এই খাতের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে ওই আইনের সংশোধন অত্যন্ত প্রয়োজন।

পূর্বকোণ প্রতিনিধির সাথে আসন্ন বাজেট (২০২৩-২৪) প্রসঙ্গে আলাপকালে ‘বাজেট ভাবনা’য় কেএসআরএম এর উপ-ব্যবস্থাপনা

পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ইস্পাত খাতের ব্যবসা পরিচালনা ও ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে আয়কর আইনের কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা জরুরি। কারণ বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতিসহ নানা কারণে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছে প্রতিনিয়ত। ব্যবসায়ীদের হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই বাস্তবতার নিরিখে বিদ্যমান আয়কর আইনের কোথাও কোথাও সংশোধন বা পরিবর্তন করা অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা চাই বর্তমান ব্যবসাবান্ধব সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা ও আন্তরিকতা। যা ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ নিরাপদ রাখতে সহায়তা করবে। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা যেমন সাশ্রয় হবে তেমনি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব রাখবে ইস্পাত খাত।
টার্নওভার ট্যাক্স প্রসঙ্গে শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, বর্তমান আইনের ৮২ সি ধারা অনুযায়ী ইস্পাত শিল্পের ক্ষেত্রে পণ্য বিক্রয়ের ওপর লাভ না ক্ষতি যেটা হোক শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ নূন্যতম কর (টার্নওভার ট্যাক্স) পরিশোধের নিয়ম আছে। যা প্রদেয় আয়করের চেয়ে বেশি হয়ে যায়। যদিও শুধুমাত্র আয়ের ওপর আয়কর পরিশোধের বিধান আছে। তাই ইস্পাত শিল্পের বিক্রয়ের ওপর টার্নওভার ট্যাক্স শূন্য দশমিক দুই শতাংশ করা যেতে পারে।
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজের জ্বালানি ক্রয়মূল্য বিদেশি বিক্রেতাদের পরিশোধের ক্ষেত্রে আয়কর আইনের ধারা ৫৬ অনুযায়ী সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ উৎস কর কাটার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ তেল সরবরাহের ওপর শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ উৎস কর কর্তনের বিধান আছে। এই কারণে বিদেশি বিক্রেতারা আমাদের জাহাজে প্রচলিত মূল্যে জ্বালানি বিক্রিতে আগ্রহী নয়। তারা সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ বর্ধিত মূল্যে জাহাজে জ্বালানি বিক্রি করে। এ পরিস্থিতিতে আমাদের বর্ধিত মূল্যে জ্বালানি কিনতে হয় বাধ্য হয়ে। এতে জাহাজ ব্যবসা পরিচালনায় অধিক ব্যয় বহন করতে হয়। এভাবে চলতে থাকায় ব্যবসা পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনকে উৎসাহিত করার জন্য বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজের যাবতীয় ক্রয়ের বিপরীত বিদেশি বিক্রেতাকে মূল্য পরিশোধের সময় ধারা ৫৬ অনুযায়ী উৎস কর প্রতাহার করা প্রয়োজন।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট