চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পতাকাবাহী জাহাজের বার্থিং সুবিধা ফের বাড়ালো বন্দর!

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ মে, ২০২৩ | ১২:৩৩ অপরাহ্ণ

দেশি পতাকাবাহী কোন কার্গো জাহাজ বার্থিংয়ের অপেক্ষায় না থাকলে একটির বদলে দুটি দেশি পতাকাবাহী কনটেইনার জাহাজকে প্রায়োরিটি বার্থিং দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। গত ১০ মে চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবহন বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেশি জাহাজ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ওশান গোয়িং শিপ ওনার্স এসোসিয়েশনকে চিঠি দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

দেশি পতাকাবাহী জাহাজকে সুবিধা দিতে সরকার সম্প্রতি বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজ (স্বার্থরক্ষা) আইন, ২০২৩ জারি করে। ওই আইন অনুযায়ী নৌপথে পণ্য পরিবহনের ৫০ শতাংশ দেশি পাতাকাবাহী জাহাজের মাধ্যমে পরিবহন করার বিধান রাখা হয়েছে। তবে সারা বাংলাদেশে শুধুমাত্র একজন মালিকেরই বাংলাদেশি পতাকাবাহী কনটেইনার জাহাজ আছে মাত্র ৮টি। আর কোন কনটেইনার জাহাজ নেই। অনদিকে চট্টগ্রাম বন্দরে বছরে প্রায় দেড় হাজার জাহাজ দিয়ে ৩ মিলিয়নের বেশি কনটেইনার পরিবহন হয়।

শিপিং সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশি পতাকাবাহী ৮টি জাহাজ দিয়ে দেড় মিলিয়ন কনটেইনার পরিবহন কখনই পরিবহন সম্ভব না। তাই এই আইন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বাংলাদেশ সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন সেক্টরটিতে বিশৃঙ্খলা এনে দেওয়া ছাড়া আর ভালো কিছু বয়ে আনবে না।

এদিকে একাধিক বিদেশি জাহাজের শিপিং এজেন্টদের দাবি, সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরে আসা জাহাজ সংখ্যা বাড়ায় বিদেশি জাহাজগুলোকে কয়েকদিন অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। অন্যদিকে দেশি পতাকাবাহী জাহাজ বন্দরে আসা মাত্র বার্থিং পাচ্ছে। বিদেশি একটি জাহাজ একদিন অপেক্ষা করার কারণে ১২ থেকে ১৫ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ গুনছে। অন্যদিকে দেশি পতাকাবাহী জাহাজ বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে।

তারা বলছে, যেসব জাহাজ তিন দিনের ওপরে অপেক্ষায় থাকে সেই জাহাজগুলোকে অন্তত দেশি জাহাজ বার্থিং পাওয়ার আগে বার্থিং দেওয়া উচিত। কারণ বিদেশি জাহাজ তিনদিন অপেক্ষায় থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে পারলে কেন বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ অন্তত একদিন অপেক্ষায় থাকতে পারবে না। বন্দরের এ ধরনের আচরণের কারণে বিদেশি জাহাজগুলো চট্টগ্রাম বন্দর বিমুখ হয়ে পড়ছে। যে কোন সময় বিদেশি জাহাজ কোম্পানিগুলো চট্টগ্রাম বন্দরগামী জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিতে পারে। যা বাংলাদেশের জন্য ভয়ানক হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছে শিপিং এজেন্টগুলো।

এর পরে আবার দেশি পতাকবাহী দুটি কনটেইনার জাহাজকে প্রায়োরিটি বার্থিং দেওয়ার সিদ্ধান্তে এবার ক্ষোভ প্রকাশ করছে শিপিং এজেন্টগুলো। তাদের দাবি, দেশি পতাবাহী জাহাজগুলো ক্রেনবিহীন। তাই এগুলো চটগ্রাম বন্দরের এনসিটিতে বার্থিং পায়। আর এনসিটির ৫টি জেটির মধ্যে ১টি পানগাঁওগামী জাহাজের জন্য বরাদ্দ থাকে। বাকি চারটি জেটির মধ্যে যদি দুটি জেটিত দেশি পতাকাবাহী জাহাজ ও দুটি জেটিতে সরাসরি ইউরোপগামী জাহাজের নামে প্রায়োরিটি বার্থিং নিলে বিদেশি অন্যান্য ক্রেনবিহীন জাহাজ ৩/৪দিন বার্থিং পাওয়ার কোন সম্ভাবনাই থাকে না।

শিপিং এজেন্টরা দাবি করেন, এভাবে ৮টি জাহাজকে যদি বন্দর বার বার সুবিধা দিতে থাকে তাহলে বিদেশি ৭০/৮০টি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসার আর কোন মানে হয় না। একচেটিয়া বাণিজ্যের দিকে ক্রমশ অগ্রসর হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের বার্থিং কার্যক্রম।

পূর্বকোণ/এ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট