চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

বছরের ব্যবধানে দ্বিগুণ ৭ ধরনের মসলার দাম

কোরবানির ঈদের আগেই ফের অস্থির মসলার বাজার

মরিয়ম জাহান মুন্নী

১৫ মে, ২০২৩ | ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘদিন স্থিতিশীল থাকার পর কোরবানির ঈদের আগেই আবার অস্থির হতে শুরু করেছে মসলার বাজার। এক বছরের ব্যবধানে সাত জাতের মসলা জিরা, ধনিয়া, দারুচিনি, লবঙ্গ, পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম কেজিতে দ্বিগুণ বেড়েছে।

গত শনিবার নগরীর বহদ্দারহাট, চকবাজার ও দুই নম্বর গেট কর্ণফূলী কমপ্লেক্স ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। মসলার দাম খুচরা বাজারের পাশাপাশি বেড়েছে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারেও। এ সাত জাতের মসলায় কেজিপ্রতি ৪০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের আমদানিকারকরা জানান, বিশ্ববাজারে বুকিং রেট বেড়ে যাওয়া, ভারত ও চায়না থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় এবং সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ সাত ধরনের মসলার দাম বেড়েছে। গতকাল শনিবার এ তিন বাজারে খুচরায় প্রতি কেজি জিরা মান ভেদে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে যা গতবছর কেজি প্রতি ৩৮০-৪০০ টাকা ছিল। সপ্তাহের ব্যবধানে জিরার দাম বেড়েছে ৪৭০ টাকা। একইভাবে ধনিয়া ১৬০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়।

আগে থেকেই চড়া পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম। গতকাল একদিনের ব্যবধানে আবারো খুচরা ও পাইকারি বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। খুচরায় ৬৫ টাকা থেকে পেঁয়াজের দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকায়। রসুন ১৯০ টাকা থেকে বেড়ে ২৩০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা ২৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ আমদানিকারক মো. আহসান খালেদ বলেন, দেশের বাজারে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার আমদানি বন্ধ কিন্তু চাহিদা বেশি। যে কারণে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে।

বহদ্দারহাটের ব্যবসায়ী মফিজুর রহমান বলেন, আমদানি বন্ধের কথা বলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। এখানে আবার সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি উঠে যায়। পানি উঠলে দাম আরো বেড়ে যাবে। গতকাল পাইকারিতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬৫-৭০ টাকায়। তাহলে খুচরায় তো দাম বাড়বেই। তাই আজ (গতকাল) বাজারে পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। চলতি সপ্তাহে আরো বাড়বে রসুনের দাম। রসুন পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে ১৮০-২২০ টাকায়। এটি এখন খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকার বেশি দামে। একই অবস্থা আদারও। চায়নার আদা আমদানি বন্ধ রয়েছে। এখন বাজারে বার্মা, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের আদা বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে বার্মার আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮৫-১৯০ টাকায়, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের আদা ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এগুলো খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ২৯০-৩০০ টাকায়।

এ দিকে লবঙ্গ এক বছরের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৭০০ টাকা। গত বছর প্রতিকেজি লবঙ্গ বিক্রি হয় এক হাজার টাকায়। কিন্তু গতকাল বাজারে এক হাজার ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। দারুচিনি ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫২০ টাকায়। কিন্তু গতবছর এ সময় দারুচিনির কেজি ছিল ২৮০ টাকা।

খাতুনগঞ্জের মসলা আমদানিকারক মো. জসিম বলেন, বিশ্ববাজারে বুকিং রেট বেড়ে যাওয়ায় মসলার দাম বেড়েছে। যে কারণে অনেকে আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। এতে বাজারে পর্যাপ্ত পণ্য নেই। পাইকারি বাজারে দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৩৭০-৪০০ টাকায়। ধনিয়া ২৮৭-৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। জিরা বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়।

ক্রেতা মুহাম্মদ আজগর আলী বলেন, কোরবানের আগেই মসলার দাম বাড়াতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। ৪০০ টাকার জিরা এখন ৮৫০ টাকা। এভাবেই চলছে। মানুষ কীভাবে খেয়ে-পরে বাঁচবে। প্রশাসনের এখনই বাজার তদারকি করা দরকার বলে তিনি জানান।

পূর্বকোণ/এ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট