চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

শতভাগ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে: রিটার্নিং অফিসার

ইসির আশ্বাসের পরও শঙ্কা

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

২৬ এপ্রিল, ২০২৩ | ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ

গত ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হল বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন। ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। এর ৪১ দিন পর কাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদের উপনির্বাচন। দুই নির্বাচনে   বিএনপির অংশগ্রহণ না থাকায় আমেজহীন হয়ে পড়ে নির্বাচনী আবহ। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পাঁচটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় বোয়ালখালীতে। এতে নির্বাচন নিয়ে মানুষের আকাক্সক্ষা ও আগ্রহ অনেকটা কমে গেছে। উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ১৬ শতাংশ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচন। গতকাল মধ্যরাতে শেষ হয় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে। আজ বুধবার ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে যাবে ইভিএমসহ ভোটগ্রহণ সরজ্ঞাম। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ করা হবে।

 

রিটার্নিং অফিসার ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান পূর্বকোণকে বলেন, নির্বাচনে পুলিশ, আনসার, র‌্যাব, বিজিবি মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও ২৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তিন উপজেলা-থানায় তিনজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।’ শতভাগ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান তিনি।

 

৬ এপ্রিল থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়। প্রচারের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোনো ধরনের অঘটন ছাড়াই প্রচারণা শেষ হয়। ভোটের মাঠে আছেন ৫ প্রার্থী। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীকে নোমান আল মাহমুদ, ইসলামী ফ্রন্ট প্রার্থী মোমবাতি প্রতীকে স উ ম আবদুস সামাদ, ইসলামিক ফ্রন্ট প্রার্থী চেয়ার প্রতীকে অধ্যক্ষ মাওলানা এসএম ফরিদ উদ্দিন, এনপিপি প্রার্থী আম প্রতীকে মো. কামাল পাশা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর মো. রমজান আলী একতারা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে ৫ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগসহ তিন প্রার্থী প্রচারে সরব ছিলেন। কিন্তু বিএনপি ভোটে না থাকা, রোজা ও ঈদুল ফিতরের লম্বা ছুটির কারণে নিরুত্তাপ প্রচারণায় আমেজহীন হয়ে পড়ে উপনির্বাচন।

 

এদিকে, নির্বাচনে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে আওয়ামী লীগ। অপরদিকে ভোটের দিনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা-আতঙ্কে রয়েছেন ইসলামী ফ্রন্ট ও ইসলামিক ফ্রন্ট প্রার্থীরা।

 

ইসলামী ফ্রন্ট প্রার্থী আবদুস সামাদ (প্রতীক মোমবাতি) বলেন, ‘আমরা আতঙ্কিত নয়। তবে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে শঙ্কায় আছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকার দলীয় নেতারা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। সাধারণ জনগণ যাতে ভোটকেন্দ্রে না যায়।’ তিনি অভিযোগ করেন, বোয়ালখালী পৌরসভাসহ বিভিন্ন এলাকায় তার কর্মী-সমর্থক ও অভিভাবকদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। এজেন্ট থাকার জন্য অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। ভয়-ভীতি দেখানোর পর এখন অনেকেই শঙ্কায় পড়েছেন। অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। তবে নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছে। আমরা চাই, ধাক্কাধাক্কি ছাড়া উৎসবমুখর ভোট হোক।

 

ইসলামিক ফ্রন্টের প্রার্থী এসএম ফরিদ উদ্দিন (চেয়ার) বলেন, ‘বাধা-বিপত্তি ও হাঙ্গামা ছাড়া প্রচারণা শেষ হয়েছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচনে ইভিএম মেশিনসহ অতীতের অভিজ্ঞতায় ভোট নিয়ে হতাশায় রয়েছেন জনগণ। আমরা তা দূর করতে পারিনি। নির্বাচন কমিশন ভোট সুষ্ঠু হওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। আমাদের তাতে শতভাগ আস্থা রয়েছে।’

 

তবে দুই প্রার্থীর অভিযোগ উড়িয়ে দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘মুখে অভিযোগ না করে লিখিত অভিযোগ করুক। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। তারা ব্যবস্থা নেবে।’

 

এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির নেতাকর্মীরা ভোটকেন্দ্রে যায়নি।

 

গত উপনির্বাচনে বিএনপিদলীয় প্রার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, ‘প্রহসনের নির্বাচনে জনগণের কোনো আস্থা-বিশ্বাস নেই। বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাচন দেখলেই তা পরিলক্ষিত হয়। মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। তারপরও ইভিএমের ব্যালট প্যানেল বাইরে নিয়ে গেছে সরকার দলীয় প্রার্থীর লোকজন। এই তামাশার নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করাই ভালো।’

 

প্রসঙ্গত, গত ৬ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মোছলেম উদ্দিন আহমদের মৃত্যুর পর আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। আগামীকাল ২৭ এপ্রিল উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট