চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

পার্লারে অফারের ছড়াছড়ি

মরিয়ম জাহান মুন্নী

২০ এপ্রিল, ২০২৩ | ১২:০১ অপরাহ্ণ

বিবি ফাতেমা প্রয়োজনের তাগিদে এক সময় উদ্যোক্তা হয়ে উঠেন। এক যুগের বেশি সময় ভালোই ব্যবসা করেন। কিন্তু সম্প্রতি তার ব্যবসায় লাভ হচ্ছিল না। যে কারণে চারজন বিউটিশিয়ানকে বাদ দিয়ে দেন। পার্লারের পরিসরও ছোট করেন। এখন তিনিসহ দুইজন কাজ করেন। ফাতেমার পার্লারটি নগরীর বাদুরতলা এলাকার অবস্থিত। ‘নাবিলা বিউটি পার্লার’ নামের এ পার্লারের বেশ খ্যাতি রয়েছে এলাকার নারীদের কাছে। শুধু ফাতেমাই নয়, করোনা পরবর্তী সময়ে নগরীর বেশির ভাগ পার্লারের আয় কমে যায়। বন্ধ হয়ে যায় অনেক পার্লার। এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখে ঘুরে দাঁড়াতে এসব ক্ষুদ্র পার্লারগুলো ভালোই প্রস্তুতি নিয়েছে। যেকারণে রূপচর্চার বিভিন্ন সার্ভিসের উপর বিশেষ কিছু ছাড়ও দিয়েছে। রোজার শেষ কয়েকটা দিন জমজমাট হয়ে উঠে পার্লারগুলো। এমন দৃশ্য অতীতে স্বাভাবিক হলেও এবার এখনো জমে উঠেনি নগরীর ছোট-বড় প্রায় পার্লার। তবে সন্ধ্যার পর নগরীর নামি-দামি পার্লারে রূপ সচেতন নারীদের কিছু ভিড় বাড়ছে। কিন্তু সার্ভিস নিচ্ছেন অতি প্রয়োজনীয়গুলো। বলা চলে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বমুখী দামের প্রভাব ঈদ শপিংয়ের মত রূপ চর্চায়ও লাগাম টেনেছেন নারীরা। নগরীর কয়েকটি পার্লারের পরিচালকের সাথে কথা বলে এমনটাই জানা যায়। তারা বলেন, এখন করোনার কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই, সব কিছুই স্বাভাবিক। এমন পরিস্থিতিতে আশা ছিল চারবছর আগে যেভাবে কাজ হত সেইভাবে কাজ হবে। কিন্তু আশানুরূপ কিছুই হচ্ছে না।

 

নাবিলা বিউটি পার্লারের স্বত্বাধিকারী ফাতেমা বলেন, ২০১৯ সালের আগের ঈদে রোজার শুরু থেকে পার্লারে চুল রিবোন্ডিং হত। শুধু চুল বিরোন্ডিংয়ের জন্যই সারামাস বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ হত না। ১৫ রোজার পর শুরু হত চুলকাট, ফেসিয়াল, মেনিকিউর পেডিকিউর। তবে ভ্রু-প্লাগটা ২০ রোজার পরে বেশি হয়। এখন পুরো মাসে দুইটা রিবোন্ডিং হয়েছে।

 

একই কথা বলেন, কলি বিউটি পার্লারে স্বত্বাধিকারী কুলছুম বেগম। কাস্টমারদের আকৃষ্ট করতে দিচ্ছেন নানারকম ডিসকাউন্ট। এসব পার্লারগুলো তাদের প্রচার প্রচারণা করছেন ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ-গ্রুপে। কিন্তু এতেও যেন আগ্রহ বাড়ছে না কাস্টমারদের।

 

এদিকে সরেজমিনে নগরীর আফমি প্লাজায় স্বনামধন্য বিউটি পার্লার পারসোনা’য় গিয়ে দেখা যায়, বিকেলের দিকে বিভিন্ন বয়সের নারীরা আসছেন। এদের মধ্যে কেউ চুল কাটাতে, কেউ ফেসিয়াল করতে কিংবা হেয়ার স্পা করতে আসছেন।

 

পারসোনার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ফাতেমা মাহমুদ বলেন, ক্লায়েন্টরা আসতে শুরু করেছেন। মোটামুটি সব ধরনের সার্ভিসই নিচ্ছেন। তবুও বলতে হয় ২০১৯ সালের আগের চেয়ে কম। আশা রাখছি বাকি রোজাগুলোতে এ ক্ষরা কাটিয়ে উঠতে পারবো। আমরা সবগুলো সার্ভিসই সাধ্যের মধ্যে রেখেছি সব শ্রেণির নারীদের জন্য।

 

তিনি আরো বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের স্পেশাল কিছু ফেসিয়াল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে স্পেশাল হাইড্রা ট্রান্সফরমেশন, রি-জেনারেট ব্রাইটেনিং, অকসি ব্রাইট, কোলাজেন ও লিফটি ফেসিয়াল। এ ফেসিয়ালগুলো ৬০০ টাকা থেকে চার হাজার টাকায় করা যাচ্ছে। হেয়ার কাটের মধ্যে বলিয়ম লেয়ার, শর্ট বব্ধসঢ়;স, টুইগি ও ইমোকার্ট রয়েছে। এগুলো ৫শ থেকে এক হাজার টাকায়। এছাড়া বিভিন্ন রকমের রিবোন্ডিং রয়েছে। রিবোন্ডিং শুরু ১২ হাজার টাকা থেকে ১৮ হাজার টাকায়। এসব সার্ভিসের সাথে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ হয়।

 

এদিকে ছোটখাটো পার্লারগুলোতে বিভিন্ন ফেসিয়াল ৩শ টাকা থেকে ১২শ টাকা, হেয়ারকাট ১৮০-৬০০ টাকা, রিবোন্ডিং তিন হাজার থেকে আট হাজার টাকার মধ্যে।

 

পারসোনার ভিআইপি মেম্বার সাহনাজ তাসলিম বলেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর পারসোনা থেকে সার্ভিস নিই। এবারও নিতে এসেছি। আর দু’দিন পর ভিড় হতে পারে। তাই আজই মা মেয়ে ফেসিয়াল, চুলকেটে চলে যাচ্ছি। একদিন পরই ঈদ। এসময় নতুন পোশাকের সাথে হাত রাঙিয়ে তুলতে মেহেদি পড়ে মেয়েরা। এজন্য পার্লারগুলোতে খুব ভিড় হত। তবে এখন মেয়েরা মেহেদি দিতে পার্লারে আর যায় না। নিজেরাই ডিজাইন করে মেহেদি দিয়ে থাকেন।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট