চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

লিভার ক্যান্সারের বিশ্বমানের চিকিৎসা চমেক হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক 

১৮ এপ্রিল, ২০২৩ | ১২:১৪ অপরাহ্ণ

প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চালু করা হয়েছে লিভার ক্যান্সারের আধুনিক চিকিৎসা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এব্লেশন বা আরএফএ থেরাপি। গতকাল সোমবার হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগে দুই লিভার ক্যান্সার রোগীকে এ থেরাপির মাধ্যমে আধুনিক এ চিকিৎসা শুরু করা হয়। সিটি সিমোলেটর মেশিনের সাহায্যে এই প্রথম দেশের জেলা পর্যায়ের সরকারি কোনো হাসপাতালে এই ধরনের রোগীকে থেরাপি দেওয়া হলো বলে জানান চিকিৎসকরা।

 

চিকিৎসকরা জানান, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এব্লেশনে ন্যূনতম পেট কাটা-ছেঁড়ার প্রয়োজন নেই এবং প্রায় কোনোরকম জটিলতা ছাড়াই তা ফের করা সম্ভব। প্রাথমিক অবস্থায় বা ছোট টিউমারে আরএফএ করা গেলে লিভার ক্যান্সার অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। বড় টিউমারের ক্ষেত্রে রোগীরা অনেক দিন সুস্থ থাকেন। এই পদ্ধতিতে লিভার টিউমারের মধ্যে তাপ তৈরি করে ক্যান্সার সেল ধ্বংস করা হয়। এ চিকিৎসা পদ্ধতি ইউরোপ, আমেরিকা ও জাপানে বহুল ব্যবহৃত। দেশের রাজধানীতে দু-একটি বেসরকারি হাসপাতালে সীমিত পরিসরে এ চিকিৎসা করা হচ্ছে। তবে সরকারিভাবে কোথায় এ সেবা নেই।

 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের অনকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘সাধারণত যেসব রোগীদের প্রচলিত কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি কিংবা লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের সুযোগ থাকে না তাদের এই বিশেষ থেরাপি দেওয়া হয়। লিভার ক্যান্সারের পাশাপাশি কিডনি ও ফুসফুসের ক্যান্সারেও রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এব্লেশন বা আরএফএ অত্যন্ত কার্যকর একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। এ ধরনের থেরাপি চট্টগ্রামে এই প্রথম দেওয়া হয়েছে। দেশের সরকারি      হাসপাতালেও এটা আগে হয়নি। এ থেরাপি দিতে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মতো খরচ পড়ে। চমেকে খরচ পড়েছে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা বা তার কিছু বেশি। জানা যায়, দুই রোগীর একজন প্রাথমিক লিভার ক্যান্সার এবং অন্যজন মেটাস্টাটিক লিভার ক্যানসারের রোগীকে সফলভাবে রেডিওফ্রিকোয়েন্সি এব্লেশন থেরাপি দেয়া হয়। ইন্টারভেনশন রেডিওলজিস্ট সারোয়ার মোরশেদের নির্দেশনা এবং বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সাজ্জাদ মোহাম্মদ ইউসুফের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসক ফাহমিদা আলম সহকারীদের নিয়ে এই থেরাপি সম্পন্ন করেন। এসময় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা চিকিৎসকরাও উপস্থিত ছিলেন।

 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘দেশের সরকারি কোন হাসপাতালে এসব ক্যান্সার রোগীদের এ সেবা প্রদান করা হয় না। বেসরকারিভাবে রাজধানীতে কয়েকটি হাসপাতালে হয়ে থাকে। চট্টগ্রামের কোন সরকারি-বেসরকারিতেও সেবা নেই। প্রথমবারের মতোই চমেক হাসপাতালের অনকোলজি বিভাগের চিকিৎসকরা এ সেবা চালু করেছে। চট্টগ্রামে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশি। যদিও ইতোমধ্যে ক্যান্সার চিকিৎসায় পৃৃথক বিশেষায়িত সেবা সম্বলিত ইউনিট চালুর কাজ চলমান। ক্যান্সার রোগীদের সেবার পরিধি বাড়াতে নতুন নতুন আরও যন্ত্রপাতিসহ আধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট