চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

থামেনি নির্মাণ, নির্বিকার ওয়াসা

মোহাম্মদ আলী

১৮ এপ্রিল, ২০২৩ | ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ

তিনমাস ধরে নিজেদের জায়গায় অবৈধভাবে দোকান নির্মাণের কাজ চললেও ভাঙ্গনের উদ্যোগ নেয়নি ওয়াসা। শুধুমাত্র একটি চিঠি দিয়ে দায়িত্ব সেরেছেন ওয়াসার এস্টেট অফিসার। এ সুযোগে বীরদর্পে দোকান নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছে সরকারি সংস্থাটির গুটিকয়েক কর্মচারী।

 

তবে ওয়াসার জায়গায় নির্মাণকৃত দোকান ভেঙে দেওয়ার জন্য আইনে যা যা আছে সব করা হবে বলে জানিয়েছেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

 

সিবিএ ও নন সিবিএ সংগঠনের বাইরে চট্টগ্রাম ওয়াসায় আরো একটি সংগঠন রয়েছে। এটির নাম ‘দি ওয়াসা এমপ্লয়িজ কো অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ (রেজিস্টেশন নং-৩১৮)। এ সংগঠনের ব্যানারে রেজওয়ান হোসেন দুলাল সভাপতি ও মোহাম্মদ জাকারিয়া সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে ওয়াসার জায়গা দখল করে অবৈধভাবে দোকান তৈরির কাজ করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে গত প্রায় তিনমাস ধরে চান্দগাঁও থানাধীন খাজা রোডের খালাসী পুকুর পাড় এলাকায় ওয়াসার ১৬নং পাম্পহাউজের জায়গা দখল করে তৈরি করছেন পাকা দোকান ঘর। ইতোমধ্যে সেখানে ৭টি দোকান ঘর তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, কয়েকজন রাজমিস্ত্রি এসব দোকান তৈরির কাজ করে যাচ্ছেন। ৭টি দোকানের কাজ শেষ করে ভাড়া দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। এ নিয়ে ইতিপূর্বে দৈনিক পূর্বকোণে কয়েকটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও থামেনি দোকান নির্মাণের কাজ। এ সময়ে শুধুমাত্র নির্মাণ শ্রমিকদের কাজের সময় পরিবর্তন হয়েছে। সেহেরির পরপরই নির্মাণ শ্রমিকরা কাজ শুরু করেন এবং সকাল ১০টার মধ্যে কাজ শেষ করেন।

 

পাম্পহাউজের জায়গায় দোকান নির্মাণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘ওয়াসার জায়গায় নির্মাণকৃত দোকান ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য আইনে যা যা আছে সব করা হবে। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

 

এদিকে ওয়াসার জায়গায় অবৈধভাবে দোকান নির্মাণের বিরুদ্ধে এস্টেট অফিসার মো. বাবুল আলম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ’র নির্দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি অনুমতি ব্যতীত কোন দোকান বা ঘর নির্মাণ না করার জন্য ‘দি ওয়াসা এমপ্লয়িজ কো অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডে’র কথিত সভাপতি রেজওয়ান হোসেন দুলাল এর কাছে একটি চিঠি প্রেরণ করেন। এরপর এ ব্যাপারে প্রায়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ওয়াসার মড-৩ নির্বাহী প্রকৌশলী রানা চৌধুরীর কাছেও একটি চিঠি দেন। কিন্তু কার্যত এ তিনমাসে কোন কাজ হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

অভিযোগে জানা গেছে, রেজওয়ান হোসেন দুলাল ও মোহাম্মদ জাকারিয়া প্রভাব কাটিয়ে ওয়াসার জায়গায় অবৈধভাবে দোকান নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছেন। এ দুইজন ছাড়াও অপরাপর আরো কয়েকজন কর্মচারী অফিসের কাজ না করে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে নানা কাজে জড়িত রয়েছেন। এ নিয়ে ওয়াসার অন্যান্য কর্মচারীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে।

 

এদিকে খাজা রোডে ওয়াসার ১৬ নং পাম্পহাউজে ভূমি প্রদানকারী আলী আহমদ’র নাতি স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আজিম অভিযোগ করে বলেন, ‘১৯৬৫ সালে আমার দাদা পাম্পহাউজ নির্মাণের জন্য ওয়াসাকে ২৪ শতক জমি দেন। কিন্তু বর্তমানে পাম্পহাউজের আড়ালে সেখানে পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। দোকান করার জন্য নয়, আমার দাদা ওয়াসার পাম্পহাউজের জন্য জায়গা দিয়েছেন। সুতরাং এত জায়গা প্রয়োজন না হলে পাম্পহাউজের জায়গা বাদ দিয়ে অবশিষ্ট ভূমি ফেরত দেওয়ার জন্য ওয়াসার কাছে দাবি করছি।’

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট