চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

৪০ শয্যার আরেকটি আইসিইউ ওয়ার্ড হচ্ছে চমেক হাসপাতালে

ইমাম হোসাইন রাজু

১ এপ্রিল, ২০২৩ | ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ

নতুন করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ৪০ শয্যার আরেকটি আইসিইউ ওয়ার্ড স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মুমূর্ষু রোগীদের আইসিইউ শয্যার সংকট ঘুচাতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। হাসপাতালের নিচ তলায় নতুন এ ওয়ার্ডটির রূপান্তর কার্যক্রম আগামী সপ্তাহে শুরু  হবে বলেও জানায় কর্তৃপক্ষ।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইসিইউ’র সংখ্যা বৃদ্ধি হলে একদিকে যেমন শয্যা সংকট নিরসন হবে, তেমনি মুমূর্ষু রোগীদের সেবাও বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি আইসিইউ শয্যার অভাবে মৃত্যুর ঘটনা আর শুনতে হবে না।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চমেক হাসপাতালের নিচ তলায় অবস্থিত ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানের পেছনে থাকা পূর্বের মানসিক ওয়ার্ডে নতুন আইসিইউ ওয়ার্ডটি স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। ইতোপূর্বে এ বিষয়ে যাবতীয় কার্যক্রম শেষ হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে ওয়ার্ডটি আইসিইউ ওয়ার্ডে রূপান্তর করতে কার্যক্রম শুরু হবে। অবকাঠামো থেকে শুরু করে যাবতীয় কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর আইসিইউ শয্যা এবং যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম স্থাপনের কাজ শুরু হবে। তবে কবে নাগাদ নতুন আইসিইউ শয্যা চালু হতে পারে, সে বিষয়টি এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয় কর্তৃপক্ষ। যদিও দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যক্রম শেষ করেই নতুন এ ওয়ার্ডটি চালু করতে চান হাসপাতালের পরিচালক।

 

হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, বৃহত্তর চট্টগ্রামের একমাত্র টার্সিয়ারি পর্যায়ের এ হাসপাতালে কম খরচে আইসিইউ সেবা নিতে প্রতিদিনই অসংখ্য রোগী ভিড় করেন। কিন্তু শয্যার সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় বেসরকারি পর্যায়ে গিয়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয় রোগীদের। তবে নতুন করে আইসিইউ শয্যা বৃদ্ধি হলে মুমূর্ষু ও মৃত্যু পথযাত্রী রোগীদের আরও অধিক সেবা নিশ্চিত করা যাবে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।

 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান পূর্বকোণকে বলেন, ‘হাসপাতালের নিচ তলায় ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানের পেছনে পূর্বের মানসিক ওয়ার্ডকে নতুন করে আইসিইউ ওয়ার্ড করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যেখানে চল্লিশটি আইসিইউ শয্যা বাসানো হবে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনাও হয়েছে। প্রায় ২০টি আইসিইউ শয্যাসহ সকল যন্ত্রপাতি একটি বিশেষ বরাদ্দ থেকে পাওয়া যাবে, বাকিগুলো স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সংগ্রহ করার চেষ্টা চলবে। অথবা অন্যভাবেও সংগ্রহ করা হবে।’

 

আগামী সপ্তাহে কাজ শুরু হবে উল্লেখ করে হাসপাতালের পরিচালক মো. শামীম আহসান আরও বলেন, ‘পূর্বের মানসিক বিভাগকে অন্যস্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে। আইসিইউ ওয়ার্ড নির্মাণের জন্য আগামী সপ্তাহ থেকে কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর যন্ত্রপাতি স্থাপনের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে ওয়ার্ডটি চালু করতে চাই।’

 

প্রসঙ্গত ১৯৬০ সালে মাত্র ১২০ শয্যা ও অল্প কিছু রোগী নিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয় বৃহত্তর চট্টগ্রামের একমাত্র টার্শিয়াল পর্যায়ের এ হাসপাতালে। প্রথম দিকে হাসপাতালটিতে মাত্র পাঁচ শয্যার আইসিইউ কার্যক্রম চালু ছিল। সবশেষ ২০০৫ সালে তা ১২ শয্যায় উন্নীত হয়। যদিও তখনও সাধারণ শয্যার সংখ্যা ছিল ১ হাজার ১০ টিতে। ২০১৩ সালে সাধারণ শয্যা বেড়ে ১৩১৩ তে উন্নীত হলেও বাড়েনি আইসিইউ শয্যা। ১৫ বছর পর ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ হাসপাতালের জন্য ৮টি ভেন্টিলেটরযুক্ত আইসিইউ পাঠানো হয়। যা ওই সময়ে স্থাপন করা হয়। ফলে আইসিইউ শয্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২০ শয্যায়। তবে দীর্ঘ বছর পর ২০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও বর্তমানে ১৬টি শয্যা দিয়েই মুমূর্ষু রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে বৃহত্তর চট্টগ্রামের একমাত্রা টার্শিয়ারি পর্যায়ের বৃহৎ এ হাসপাতাল।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট