চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বামগণতান্ত্রিক নারী সংগঠন জোটের সমাবেশে বক্তারা

দেশে অপরাধ দমনের আইন আছে যথাযথ প্রয়োগ নেই

২৫ আগস্ট, ২০১৯ | ১:৫৫ পূর্বাহ্ণ

‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে বামগণতান্ত্রিক নারী সংগঠন জোট (নারীমুুক্তি কেন্দ্র, সিপিবি নারী সেল, নারী সংহতি) চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে গতকাল শনিবার বিকেলে আন্দরকিল্লা মোড়ে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সিপিবি নারী সেলের জেলা সভাপতি রেখা চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন নারীমুক্তি কেন্দ্র চট্টগ্রামের সভাপতি আসমা আক্তার, নারী সংহতি চট্টগ্রাম আহ্বায়ক নুরুর নাহার মুনিরা। সভা পরিচালনা করেন নারীমুক্তি কেন্দ্র জেলা কমিটির সদস্য তাজ নাহার রিপন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট ইয়াসমিন নামের চৌদ্দ বছরের এক কর্মজীবী কিশোরীকে দিনাজপুরের দশমাইল নামক স্থানে টহলরত পুলিশ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে পিকআপে তুলে নেয়। কিন্তু এই পুলিশ সদস্যরাই তাকে গণধর্ষণ ও হত্যা করে। ঘটনাটিতে দিনাজপুরে সৃষ্টি হয়েছিল অভ্যুত্থানমূলক পরিস্থিতি। পুলিশের গুলিতে ঝরে পড়েছিল সাতটি তাজা প্রাণ। অচল হয়েছিল প্রশাসন। ইয়াসমিন হয়ে উঠেছিল রূপকথার সেই ‘সাত ভাই চম্পা’।

আন্দোলনের চাপে পরবর্তীতে তিনজন আসামির বিচার হয় ও ফাঁসি কার্যকর হয়। দিনাজপুরের সংগ্রামী জনতার রক্তে ২৪ আগস্ট তাই ইতিহাসের পাতায় চিহ্নিত হয় ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে।

সভাপতির বক্তব্যে রেখা চৌধুরি বলেন, ২৪ বছর পর এখনো নারীর জীবন প্রতিমুহূর্তে সংকটময়। ধর্ষণ হতে কয়েক মাসের শিশুও রেহাই পাচ্ছে না। সদ্য ঘটে যাওয়া ৭ বছরের শিশু সায়মাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দেশবাসী আতঙ্কিত। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত ছয় মাসে ৭৩১ জন নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং ১১৩ জন নারী ও শিশু গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। তার মধ্যে শুধু শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৩৯৯টি। খুন করা হয়েছে ২৭৬ জন নারী-শিশুকে। এতে বোঝা যায়, আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে শিশু ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা। দেশে অপরাধ দমনের জন্য আইন আছে, কিন্তু তার যথাযথ প্রয়োগ নেই।

আসমা আক্তার বলেন, রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে রাখার জন্য সরকার সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে জনগণের বিপক্ষে দাঁড় করিয়েছে।
গত কয়েক বছরে নারী নির্যাতনের ঘটনার সাথে যুক্ত অপরাধীদের বেশিরভাগই ছিল সরকারি দলের নেতা-কর্মী। ফলে তারা ক্ষমতাসীন দলের আশ্রয়ে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। বক্তারা আরও বলেন, দুর্বার গণআন্দোলন ছাড়া এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাবো না। আসুন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে একটি গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলি।-বিজ্ঞপ্তি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট