চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

যানজট নিয়ন্ত্রণে সর্বশক্তি নিয়োগের আশ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ মার্চ, ২০২৩ | ১২:২০ অপরাহ্ণ

রমজানে সঠিক সময়ে মানুষের গন্তব্যে পৌঁছাতে বেশ একগুচ্ছ উদ্যোগ নিয়েছে নগর ট্রাফিক বিভাগ। ইতোমধ্যে ট্রাফিকের পশ্চিম, বন্দর, উত্তর ও দক্ষিণ জোনের উপকমিশনার (ডিসি) অফিসে বন্দর, কাস্টমস, পরিবহন ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে মৌসুমী কাউন্টারে টিকেট বিক্রি, শুধু নির্দিষ্ট সময়েই নগরীতে ভারী যানবাহন চলাচল, ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ নির্দিষ্ট সময়ে করাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

 

ট্রাফিক পশ্চিম : নগর ট্রাফিকের পশ্চিম জোনের উপকমিশনার তারেক আহম্মেদ জানান, রমজানে যানজট নিয়ন্ত্রণে পরিবহন নেতা ও মালিকদের নিয়ে গতকাল বৈঠকে আমরা সর্বসম্মতিক্রমে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তা হলো-অলংকার কিংবা একে খান মোড়ে কোনমতেই মৌসুমী বাস কাউন্টার বসতে দেয়া হবে না। অলংকার মোড়ে একলেনে গাড়ি পার্কিং করতে হবে। পাহাড়তলী চাল বাজারে পণ্যবাহী গাড়ি মূল সড়কের পাশে একলেনে পার্কিং করবে। আউটার রিং রোডে ডিপোর বাইরে গাড়ি রাখা যাবে না। ইফতারের আগে ও পরে লং ভ্যাহিকেল চলাচল করবে না। ট্রাফিক উত্তর : মার্কেটকেন্দ্রিক যানজট এড়াতে ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করেছেন নগর ট্রাফিকের উত্তর বিভাগ। ট্রাফিকের উপকমিশনার জয়নুল আবেদীন জানান, রমজানে বিপণী বিতানগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কেনাকেটা করতে মানুষের সমাগম বেশি হয়। মার্কেটের সামনে যানজট নিরসনে আলোচনায় নেয়া হয়েছে বেশকিছু সিদ্ধান্ত। যেমন- যেসব মার্কেটে পার্কিংয়ের স্থান রয়েছে তা উন্মুক্ত রাখতে হবে। পার্কিং না থাকলে সংশ্লিষ্ট মার্কেট কর্তৃপক্ষকে বিকল্প পার্কিংয়ের স্থান নির্ধারণ করতে হবে। কোনমতেই সড়কের পাশে গাড়ি পার্কিং করতে দেয়া হবে না। পার্কিংয়ে কয়টি গাড়ি রাখার স্থান রয়েছে তা লিখে সংশ্লিষ্ট মার্কেটের সামনে ডিসপ্লেতে রাখতে হবে। যাতে মার্কেটে আগতরা পার্কিংয়ের স্থান সম্পর্কে অবহিত হতে পারে। ফুটপাতে কোনভাবেই ইফতারি বিক্রি করতে দেয়া হবে না। জরুরি না হলে সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি না করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

 

ট্রফিক বন্দর : বন্দরকেন্দ্রিক যানজট এড়াতে বন্দর কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস, বেপজা, রেলওয়ে ও বন্দর সংশ্লিষ্ট পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও অফডক এসোসিয়েশন  নেতাদের সাথে গতকাল বৈঠক করেছেন ট্রাফিক বন্দর বিভাগ। এতে সভাপতিত্ব করেন বন্দর (ট্রফিক) জোনের উপকমিশনার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। রমজানে যানজট এড়াতে  যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা হলো- বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার, লং ভেহিকেল, ট্রেইলার, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ট্যাঙ্ক লরি চলাচল করতে পারবে না।  দিনের বেলায় বন্দরে ট্রেন প্রবেশ ও বের হবার সময় সল্টগোলা এলাকায় যানজট হয়। তাই রেলকে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধা ৭টা পর্যন্ত রেলের একজন প্রতিনিধি সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় রাখতে অনুরোধ করা হবে। বন্দরে গেটে জনবল বাড়াতে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। লং ভেহিকেল, ট্রেইলার, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চালকদের গাড়িতে অবস্থান করতে হবে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পণ্যবাহী যানবাহনকে বৈধ কাগজপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালক গাড়িতে থাকতে পারবে না। ঈদ উল ফিতরের তিনদিন আগে ও  পরের তিনদিন পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

 

ট্রাফিক দক্ষিণ : রমজানে যানজট এড়াতে ব্যবসাীয় ও পরিবহন নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেনর ট্রাফিকের দক্ষিণ বিভাগ। ট্রাফিকের উপকমিশনার এন এম নাসিরুদ্দিন জানান, সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে আমরা বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেমন- তামাকুম-ি লেন, রিয়াজ উদ্দিন বাজার, নিউমার্কেট, চট্টগ্রাম রেলস্টেশন আমতল ও তিনপুল এলাকায় দিনের বেলায় ভারী যানবাহন সড়কের পাশে রেখে মালামাল ওঠানামা করা যাবে না। সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ভারী যানবাহনে মালামাল ওঠানামার কাজ শেষ করতে হবে। স্টেশন রোডের ফুটওভারব্রিজের পাশে খালি জায়গায় গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। নিউমার্কেট এলাকা থেকে চলাচলকারী গণপরিবহনগুলোকে ফুটপাত ঘেঁষে থেমে যাত্রী ওঠানামা করাতে হবে। একই রুটের একাধিক গাড়ি একসাথে আসতে পারবে না। ডাবল লাইনে গাড়ি দাঁড় করানো যাবে না।  বিআরটিসি  ও স্টেশন রোডের বাস কাউন্টারে সকাল আটটা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত দূরপাল্লার বাস প্রবেশ করতে পারবে না। ঈদের ১০দিন আগে থেকে পলোগ্রাউ- মাঠে অস্থায়ীভাবে বাস রাখার ব্যবস্থা  নেয়া হবে। ফ্লাইওভারে কাজ চলাকালীন সময়ে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান  লং ভেহিক্যাল চলাচল করতে পারবে না। রমজান মাসে সকাল নয়টা থেকে ১১টা এবং বিকেল তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকবে, ফলমন্ডির সামনে সড়কে কোন ধরনের যানবাহন দাঁড়াতে পারবে না। টেরিবাজার এলাকায় সড়কের মাঝখানে গ্যাপ বন্ধ এবং লালদিঘি হতে টেরিবাজার হয়ে চাক্তাই, খাতুনগঞ্জে পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান প্রবেশ করতে পারবে না। পণ্যবাহী গাড়ি লালদিঘির উত্তর পাড় হয়ে আমানত শাহ মাজারের সামনে দিয়ে যাতায়াত করবে। চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও আসদগঞ্জ থেকে পণ্যবাহী গাড়ি মেরিন ড্রাইভ রোড হয়ে চলাচল করবে। জুবিলী রোডে মূল সড়কের উপর দিনের বেলায় কোন ধরনের যানবাহনে মালামাল ওঠানামা করা যাবে না।

 

শাহ  আমানত সেতুর গোলচত্বরে ডাবল লাইনে গাড়ি দাঁড় করানো যাবে না। ভাসমান হকার ও ফুটপাতের দোকান থাকতে পারবে না। সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আন্তঃজেলা বাস নগরীতে প্রবেশ করতে পারবে না, মৌসুমী কাউন্টার বসিয়ে কোন বাসের টিকেট বিক্রি করা যাবে না ও অনুমোদিত পণ্যবাহী গাড়ি বিকেল ৩টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নগরীতে প্রবেশ করতে পারবে না।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট