২৩ মার্চ, ২০২৩ | ১২:১৬ অপরাহ্ণ
মোহাম্মদ আলী
রমজানে ওয়াসার নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহে ছেদ পড়েছে লবণ পানি। হালদা নদীতে লবণ পানির আগ্রাসনের কারণে এ সংকট তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি না হলে রমজানে ওয়াসার পানি নিয়ে ভোগাবে নগরবাসীকে। যদিও ওয়াসা রমজানকে ঘিরে একটি কন্ট্রোল রুম ও আটটি ভিজিলেন্স টিম গঠন করেছে। একইসাথে পাঁচটি পানির ভাউচার প্রস্তুত রাখা হবে। যেখানে সমস্যা হবে সেখানে পরিস্থিতি সামাল দিতে পানি পাঠাবে ওয়াসা।
মোহরা পানি শোধনাগার ও মদুনাঘাট শেখ রাসেল পানি শোধনাগার নামে হালদা নদীতে ওয়াসার দুইটি পানি শোধনাগার রয়েছে। এ দুইটি শোধনাগার থেকে দৈনিক ৯ কোটি লিটার করে মোট ১৮ কোটি লিটার পানি উত্তোলন করে ওয়াসা। কিন্তু কাপ্তাই লেক থেকে পানি ছাড়া বন্ধ থাকায় ওয়াসার পানিতে অসহনীয়মাত্রায় লবণ মিলছে। পরিস্থিতি সমাল দিতে জোয়ারে পানি তোলা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এতে দৈনিক ৫ কোটি লিটার উৎপাদন কমেছে ওয়াসার। এ অবস্থায় রেশনিং পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ দিচ্ছে সরকারি সেবা সংস্থাটি। বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি আরো অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ওয়াসা সূত্র জানায়, গত ২০ থেকে ২৫ দিন ধরে হালদার পানিতে অতিরিক্ত লবণ পাওয়া যাচ্ছে। এতদিন দৈনিক এক হাজার থেকে দেড় হাজার মিলিগ্রাম পার লিটার লবণ পাওয়া গেলেও মারাত্মক রূপ ধারণ করে ২০ মার্চ থেকে। এ তিনদিনে এক লাফে হালদার পানিতে তিনগুণের বেশি লবণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। গত তিন দিনে মোহরা পানি শোধনাগারে ৩১০০ মিলিগ্রাম পার লিটার এবং মদুনাঘাট শেখ রাসেল পানি শোধনাগারে ১৮০০ মিলিগ্রাম পার লিটার লবণের উপস্থিতি মিলেছে। এতে জোয়ারের সময় ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা পানি উৎপাদন বন্ধ রাখছে ওয়াসা। এ অবস্থায় পানি উৎপাদন কমে গেছে সেবা সংস্থাটির। এতদিন ওয়াসার দৈনিক পানি উৎপাদন হতো ৪৭ থেকে ৪৮ কোটি লিটার। কিন্তু উৎপাদন কমিয়ে দেওয়ায় এখন নগরীতে ওয়াসা পানি সরবরাহ দিচ্ছে ৪১ থেকে ৪২ কোটি লিটার। পরিস্থিতি সামাল দিতে নগরীতে রেশনিং পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ দিচ্ছে ওয়াসা। তাতে সরবরাহে ব্যাঘাত হচ্ছে কাট্টলী, পতেঙ্গা, মোহরা, ফিরোজশাহ, বিশ^কলোনি, সাগরিকাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকা। প্রসঙ্গত, হালদার নদীর পানিতে স্বাভাবিক লবণের (ক্লোরাইড) মাত্রা থাকে প্রতি লিটারে ২০ থেকে ৩০ মিলিগ্রাম। তবে বাংলাদেশের স্টান্ডার্ড অনুযায়ী সহনীয় মাত্রা হচ্ছে ৬০০ মিলিগ্রাম পার লিটার।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাসকে ঘিরে একটি কন্ট্রোল রুম ও আটটি ভিজিলেন্স টিম গঠন করেছে ওয়াসা। একইসাথে পাঁচটি পানির ভাউচার প্রস্তুত রাখা হবে। যেখানে সমস্যা হবে সেখানে পরিস্থিতি সামাল দিতে পানি পাঠাবে ওয়াসা। কিন্তু হালদায় লবণ পানির আগ্রাসনের কারণে এবার প্রস্তুতিতে ছেদ পড়েছে। জোয়ারের সময় ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা পানি উত্তোলন বন্ধ থাকে মোহরা ও মদুনাঘাট শেখ রাসেল পানি শোধনাগারে। এ দুইটি শোধনাগার হালদা নদীতে স্থাপন করা হয়েছে। এতে দৈনিক ৪ থেকে ৫ কোটি লিটার পানি উৎপাদন কম হচ্ছে ওয়াসার। পরিস্থিতি সামাল দিতে রমজানের আগে থেকে রেশনিং পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে।’
পূর্বকোণ/পিআর