চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বারোমাসি আমের নতুন জাত: বারি-১১, বছরে ৩ বার ফলন

এহছানুল হক

১৯ মার্চ, ২০২৩ | ১:৩০ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামে আম মৌসুম শুরু হয় রাজশাহীসহ বিভিন্ন জাতের আম দিয়ে। জনপ্রিয় হলেও আক্ষেপের বিষয় এসব আম বাজারে বেশি দিন থাকে না। কারণ এসব আমের ফলন এক মৌসুমে হওয়ায় বাজারে দ্রুত ফুরিয়ে যায়। এবার সারাবছর আমের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন আমের নতুন জাত বারি-১১। নতুন উদ্ভাবিত উচ্চজাতের এই আম খুবই সুস্বাদু ও সুমিষ্ট। আমটির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- কাঁচা-পাকা খাওয়া যায়। এ জাতের গাছ থেকে বছরে ৩ বার ফলন পাওয়া যায়। মজার ব্যাপার হচ্ছে- প্রথম পর্বের আম শেষ না হতেই গাছে দ্বিতীয় পর্বের মুকুল দেখা দেয়। অর্থ্যাৎ- একই গাছে একসঙ্গে পাকা আম ও মুকুল। ফাইবার সমৃদ্ধ বারোমাসি এই আমের উৎপাদন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শনিবার (১৮ মার্চ) বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার পাহাড়তলী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শনকালে এসব বিষয় উঠে আসে। এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বাগানে উৎপন্ন সৌদি খেজুর, রুটিফল, তিন ফল, পেঁয়াজ, বারি লাউ, ম্যাংগোস্টিনসহ বিভিন্ন ধরনের ফল দেখান পাহাড়তলী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম হারুনুর রশীদ।

কয়েকজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন উদ্ভাবন বারি-১১ আম বছরব্যাপী ফুল ও ফল দেয়। বছরের তিন সময়ে ফুল ও ফল তুলনামূলক বেশি হয়। এ জাত থেকে ফেব্রুয়ারি -মার্চ, মে-জুন ও আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে সবচেয়ে বেশি ফল সংগ্রহ করা যায়। এ জাতের আমের মিষ্টতা ১৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আমের আকৃতি মাঝারি। প্রতি আমের ওজন ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম। চারা লাগানোর একবছর পর মুকুল আসে। এ জাতের গাছ থেকে বছরে ১২০ কেজি পর্যন্ত আম পাওয়া যায়। তবে অন্য প্রজাতির একটি গাছ থেকে বছরে ৩৫ কেজি আম পাওয়া যায় বলেও জানান তারা।

গান পরিদর্শন শেষে সচিব ওয়াহিদা আক্তার মসলা ফসল স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে গবেষণা সম্প্রসারণ-কৃষক সন্নিবদ্ধ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের দেশে রসুনের কোয়া এত ছোট যে গৃহিণীরা বিরক্ত হন। যার কারণে আমাদের ভারত থেকে রসুন আমদানি করতে হয়। আমার ধারণা আমরা দেশে পেঁয়াজ উৎপাদনে যেভাবে নজর দিচ্ছি সেভাবে বড় কোয়া রসুনের দিতে নজর দিতে হবে। আমরা সবকিছু উৎপাদন করব না, কারণ আমাদের জমি কম। আমাদের দেখতে হবে কোন মূল্যবান জিনিসটা চাষ করা যায়। কৃষকরা চাইলে মসলার চাষ করতে পারে। কারণ মসলার অনেক দাম। পাশাপাশি নতুন উদ্ভাবিত আম কৃষকের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। যাতে তারা স্বাবলম্বী হয়। এই আমের জাত দেশের বাজারে ছড়িয়ে দিতে পারলে আর আম আমদানি করতে হবে না।
বিআরআই গাজীপুরের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের (গবেষণা বিভাগ) যুগ্ম সচিব রেহানা ইয়াছমিন, খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, গাজিপুর বিআরআইয়ের পরিচালক ড. দিলোয়ার আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট