চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পঙ্গুর ভার কেউ নিতে চায় না

ইমাম হোসাইন রাজু

১৫ মার্চ, ২০২৩ | ১২:৫৮ অপরাহ্ণ

মো. জামাল। এক সময় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন চট্টগ্রামের প্রথম সারির একটি স্টিল কারখানায়। ২০১৭ সালে কারখানাটিতে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন মধ্যবয়সী জামাল। এ দুর্ঘটনায় তাকে হারাতে হয় দুই পা। পা হারানোর সঙ্গে সঙ্গে অক্ষম হয়ে পড়া জামালকে চাকরিও হারাতে হয়। মো. জামালের দাবি- সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে এখন চট্টগ্রাম নগরীর অলি-গলিতে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন তিনি।

গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সামনে কথা হয় জমালের সঙ্গে। প্রায় ৬ বছর আগের দুর্ঘটনার স্মৃতিচারণ করে জামাল বলেন, ‘নগরীর বায়েজিদের একটি কারখানায় কাজ করতাম। সুন্দরভাবেই আমার সংসার চলছিল। কিন্তু দুর্ঘটনায় দুটো পা হারিয়ে ফেলার পর সেখানে ছন্দপতন হয়। প্রথম প্রথম কেউ কেউ খোঁজ-খবর নিলেও এখন আর কেউই আমার খবর নেন না। পরিবারের জন্য বাধ্য হয়েই ভিক্ষা করছি। এখন আমি বুজতে পারছি, পঙ্গু হয়ে গেলে কেউই আর তার ভার নিতে চায় না।

জামালের মতো প্রতিবছর দেশের হাজারো মানুষ কোন না কোন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পঙ্গুত্বের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়তই। যারা বেঁচে থাকলেও পরবর্তীতে তাদের জীবনজুড়ে নেমে আসে অন্ধকার অমানিশা। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব পঙ্গু দিবস। যদিও এ দিবসটি নিয়ে বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে তেমন কোন কর্মসূচি নেই।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রতিবছর যে বিপুলসংখ্যক লোক পঙ্গু হচ্ছে, তার বড় অংশই পঙ্গু হন সড়ক দুর্ঘটনার কারণে। আর শিশুদের একটা বড় অংশ ছাদ বা গাছ কিংবা অন্যান্য জায়গা থেকে পড়ে পঙ্গু হচ্ছে। এছাড়া কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনাসহ অন্যান্য কারণেও পঙ্গু হওয়ার ঘটনা ঘটছে। যদিও সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই, তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা দেশে প্রতি বছর গড়ে ১৫ হাজারের বেশি মানুষ পঙ্গু হচ্ছেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ‘চমেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে যে পরিমাণ রোগী ভর্তি হয়ে থাকে, তার বেশিরভাগই হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়া রোগী। প্রতিদিনই এমন দুর্ঘটনার শিকার হয়ে শুধু এ ওয়ার্ডেই ৩০-৪০ জন রোগী ভর্তি হয়ে থাকে।

পূর্বকোণ/মামুন

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট