চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বহুল প্রতীক্ষিত বার্ন হাসপাতাল নির্মাণ কাজ শুরু এপ্রিলে

নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ মার্চ, ২০২৩ | ১১:২০ পূর্বাহ্ণ

গেল ১২ দিন ধরে চট্টগ্রামে অবস্থান করে বিশেষায়িত বার্ন হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প এলাকায় কারিগরি কার্যক্রম শেষ করেছে চীনা প্রতিনিধি দল। ভবনের নকশা, জায়গার পরিমাপ খতিয়ে দেখাসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কাজ শেষ করে কার্যবিবরণী স্বাক্ষরও করেন চীনা দল। গতকাল (শনিবার) দুপুরে চমেক হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে চীনা প্রতিনিধি দলের সাথে এক বৈঠকে কার্যবিবরণী স্বাক্ষরিত হয়। ফলে দীর্ঘ প্রতীক্ষার বিশেষায়িত বার্ন হাসপাতাল বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে।

 

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কার্যবিবরণী স্বাক্ষর হলেও সোমবার (কাল) বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।  এরপরপরই হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু করবে চীনা প্রকৌশলীরা। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসেই অবকাঠামোগত কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  শনিবার (গতকাল) দুপুরে চমেক হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের সেকেন্ড সেক্রেটারি শি চেন-সহ দেশটির প্রতিনিধি দলের সাথে এ সংক্রান্ত বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যাতে চমেক হাসপাতালের পরিচালকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন শেখ হাসিনা  বার্ন ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।

 

বৈঠক শেষে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘ গেল ১২ দিন ধরে চীনের প্রতিনিধি দল বার্ন হাসপাতাল নির্মাণের খুঁটিনাটি বিষয়ে কাজ করে গেছেন। তাঁরা দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালটি নির্মাণ করতে চান। আজকে আমাদের সাথে তাকের কার্যবিবরণী স্বাক্ষর হয়েছে। আগামী সোমবার (কাল) মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠাকি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এরপর পরই যে কোন মুহূর্তেই হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু করবে চীন। আশা করা যাচ্ছে সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মাস থেকেই কাজ শুরু হবে।’

 

এক প্রশ্নের জবাবে চমেক হাসপাতালের পরিচালক শামীম আহসান বলেন, ‘চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিট থাকলেও সেখানে আধুনিক কোন যন্ত্রপাতি নেই। রোগীর তুলনায় শয্যারও সংকট রয়েছে।  দেড়শ’ শয্যার এ হাসপাতালটি হবে মাল্টিস্পেশালাইটিজ হসপিটাল। যা শুধু চট্টগ্রামের মানুষের জন্য নয়, পুরো দেশের মানুষই হাসপাতালটিতে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। শুধু অবকাঠামো নির্মাণই নয়, হাসপাতালে সেবাদাতাদেরও হাতে কলমে প্রশিক্ষণ এবং বিশেষায়িত অস্ত্রোপচার কক্ষসহ আধুনিক সব যন্ত্রপাতিও স্থাপন করে দিবে চীন সরকার। ফলে এতে পোড়া রোগী উপকৃত হবেন।’

 

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীন দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি শি চেন বলেন, ‘জায়গা পরিদর্শনসহ আনুসাঙ্গিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এখন বাকি শুধু দুই দেশের চুক্তি স্বাক্ষর। চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর হাসপাতালটি নির্মাণ করতে আমাদের ২২ মাস সময় প্রয়োজন হবে। তারমধ্যেই প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করা সম্ভব হবে।’

 

এসময় ভার্চুয়ালি বক্তব্যে ডা সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘গত দশ বছর ধরে চট্টগ্রামে একটি বিশেষায়িত বার্ন হাসপাতাল স্থাপনের জন্য যুদ্ধ করে আসছি। অনেক প্রচেষ্টার পর অবশেষে সেটি আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। এটি অবশ্যই চট্টগ্রামবাসীর সুখের। আশা করছি মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর চুক্তি স্বাক্ষর হলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই হাসপাতালটি নির্মাণ কাজ শুরু হবে। তাহলে এ অঞ্চলের মানুষ উপকৃত হবে।’

 

বৈঠকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খান, চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. সুমন বড়ুয়া, আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জিয়া উদ্দিন, চমেক হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টি সার্জারি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পূর্বকোণ/একে

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট