চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ‘উপেক্ষিত চট্টগ্রাম’

ইফতেখারুল ইসলাম

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ২:৪৬ অপরাহ্ণ

নামে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) হলেও সব কাজ ঢাকায়। আগামী বোর্ড সভার জন্য সম্প্রতি যে ৭ জন স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে তারাও সবাই ঢাকায় বসবাসকারী। ভঙ্গ করা হয়েছে অতীতের কনভেনশনও। সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তাদের নিয়োগ দেয়। এনিয়ে চট্টগ্রামের সচেতন মহলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সিএসই’তে স্বাধীন পরিচালক নিয়োগের জন্য চট্টগ্রাম থেকে কাউকেই খুঁজে পেল না বিএসইসি? এমন প্রশ্ন তুলেছে চট্টগ্রামের সচেতন মহল। নিয়ম অনুযায়ী যারা প্রথমবার স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ পান তাদেরকে দ্বিতীয়বারও রাখা হয়। যাতে অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারেন। এটি ছিল অতীতের কনভেনশন। এবার সেই প্রথাও ভঙ্গ করা হয়েছে। সিএসই সূত্র জানায়, বিএসইসি থেকে অনুমোদনের জন্য সম্প্রতি যে ২৭ জনের নামের তালিকা পাঠানো হয় সেখানে চট্টগ্রামের স্থপতি সোহেল মাহমুদ শাকুর এবং মো. লিয়াকত হোসাইন চৌধুরীর নাম ছিল। যারা গত মেয়াদে স্বাধীন পরিচালক ছিলেন। তাদেরকে দ্বিতীয় মেয়াদে আর পরিচালক হিসেবে রাখা হয়নি। অথচ পুঁজিবাজার এমন একটি খাত যেখানে সবকিছু বুঝে উঠতেও অন্তত তিন বছর পেরিয়ে যায়। তাদেরকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দিলে তারা তাদের অভিজ্ঞতা জনস্বার্থে কাজে লাগাতে পারতেন। চট্টগ্রাম থেকে আরো নাম ছিল ইনফিনিয়া গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক প্রদীপ পাল, ডা. মইনুল ইসলাম মাহমুদ, পূর্বকোণ গ্রুপের চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিন চৌধুরী, ইনফিনিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ আলম, ইস্টার্ন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী এবং চার্টার্ড একাউন্টেন্ট মোহাম্মদ সোলাইমান। তালিকায় বাকি যে ১৯ জনের নাম ছিল তাদের সবাই ঢাকা কিংবা অন্য জেলার বাসিন্দা। এই তালিকা থেকে চট্টগ্রামের কাউকে রাখা হয়নি। অথচ প্রস্তাবিত তালিকায় চট্টগ্রামের যে ৮ জনের নাম রয়েছে তাদের বেশ কয়েকজন সিএসই’র চেয়ারম্যান হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। তালিকার দু’জন অতীতে দুইবার করে স্বাধীন পরিচালক ছিলেন। তাদের বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন মুখ এখানে আনা হয়েছে। বর্তমানে সিএসই’র বোর্ডে যারা পরিচালক হিসেবে আছেন তাদের মধ্যে একমাত্র চট্টগ্রামে বসবাস করেন মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এফসিএমএ। তাই ভবিষ্যতে সিএসই’র বোর্ড সভা চট্টগ্রামে হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক কম।

 

সিএসই’র নবনিযুক্ত স্বাধীন পরিচালকরা হলেন সিএসই’র চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, আবদুল হালিম চৌধুরী, কাশফি রেজা চৌধুরী, মনজুরুল আহসান বুলবুল, মো. সজিব হোসাইন, ইশতার মহল এবং মোহাম্মদ নকিব উদ্দিন খান। এরমধ্যে নকিব খানের বাড়ি চট্টগ্রামে হলেও তিনি ঢাকায় বসবাস করেন।

 

বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের জন্য নিয়োগ দেয়া সাত জন পরিচালকের তিন বছরের মেয়াদ প্রথম বোর্ড সভা থেকে শুরু হবে। গত ২৫ জানুয়ারি স্বাক্ষরিত চিঠিতে বিএসইসি’র অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম তাদেরকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন।

 

জানতে চাইলে সিএসই’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এফসিএমএ পূর্বকোণকে বলেন, যাদের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা ঢাকার বাসিন্দা হওয়ার কারণে বোর্ড মিটিংয়ে খরচ বাড়বে। তাদেরকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এনে রাখতে হবে। তার সাথে রয়েছে যাতায়াত খরচ। চট্টগ্রামে থাকে এমন ব্যক্তিদের স্বাধীন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিলে এই ঝামেলা থাকে না। তাছাড়া চট্টগ্রামের লোকের কাছে চট্টগ্রামের জন্য বাড়তি আন্তরিকতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

 

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক এডভোকেট আকতার কবির চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, কিছু লোককে রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন পর্যায়ে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেয়ার জন্য সাধারণত এই ধরনের ঘটনাগুলো ঘটানো হয়। নতুবা সিএসই’র ভালো চাইলে, এই প্রতিষ্ঠানের সেবা প্রার্থীদের ভালো চাইলে পরিচালক নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত তিনি কোথায় বসবাস করেন। এক্ষেত্রে চট্টগ্রামে বসবাসকারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে বেছে নেয়া উচিত। চট্টগ্রামে সিএসই’র পরিচালক এমনকি চেয়ারম্যান হওয়ার মত অনেক যোগ্য ব্যক্তি আছেন।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট