চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

গ্রাহকের দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ, ব্যবস্থাপকসহ ৩ জনের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ

একজন গ্রাহকের ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ইস্টার্ন ব্যাংকের সাবেক শাখা ব্যবস্থাপকসহ দুই ব্যববসায়ীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ মুন্সী আবদুল মজিদের আদালত এ রায় দেন। 

 

কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সীতাকুণ্ড থানার দারোগারহাটের মাদারবাড়ির আলমগীর কবিরের ছেলে মো. ইফতেখারুল কবির। তিনি ইস্টার্ন ব্যাংকের ওআর নিজাম রোড শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক ছিলেন। সীতাকুণ্ড থানার পূর্বমাদার বাড়ির দারোগারহাট রোডের আবদুল সবুর মাস্টারবাড়ির মৃত আবুল মালেকের ছেলে আব্দুল মাবুদ। তিনি জুলেখা ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক। নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী থানা রায়পুর বেপারি বাড়ির আবুল কাশেমের ছেলে জাকির হোসেন বাপ্পী। তিনি লাবিবা ট্রেডিং এর মালিক ।

 

দুদকের পিপি আইনজীবী মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিডেট (ইবিএল)  চান্দগাঁও শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মো. ইফতেখারুল কবিরকে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় ১০ বছর কারাদণ্ড ও ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা জরিমানা, ৪২০ ধারায় ২ বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ৪৬৭ ধারায় ৭ বছর কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা, ৪৬৮ ধারায় ২ বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ৪৭১ ধারায় ৫ বছর কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং দুদক আইনের ৫(২) ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মোট ২৭ বছর কারাদণ্ড ও ১ কোটি ৬৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। তবে বিভিন্ন ধারায় একত্রে সাজা হওয়ায় মোট ১৪ বছর কারাভোগ করতে হবে।

 

তিনি আরও  বলেন, আসামি আবদুল মাবুদকে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় ৫ বছর কারাদণ্ড ও ৭০ লাখ টাকা জরিমানা, ৪২০ ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, ৪৬৭ ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা, ৪৬৮ ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, ৪৭১ ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, দুদক আইনের ৫(২) ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। আবদুল মাবুদের ১০ বছর কারাদণ্ড হলেও ৫ বছর কারাভোগ করতে হবে।

 

এছাড়াও আসামি জাকির হোসেন বাপ্পীকে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় ৩ বছর কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা, ৪২০ ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, ৪৬৭ ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা, ৪৬৮ ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, ৪৭১ ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, দুদক আইনের ৫(২) ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জাকির হোসেন বাপ্পীর ৮ বছরের পরিবর্তে ৩ বছর কারাভোগ করতে হবে।

 

মামলার নথি থেকে জানা যায়, আসামিদের মধ্যে ব্যাংক কর্মকর্তা ইফতেখারুল কবির ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গ্রাহক আলী করিমের ১ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার চারটি ভুয়া এফডিএ খোলেন। আর জাল কাগজপত্র করে গ্রাহককে দেন। একইসঙ্গে গ্রাহকের কাছ থেকে আটটি চেক সই করে রাখেন। পরে একটি চেকের মাধ্যমে ৬৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা আসামি আব্দুল মাবুদের মালিকানাধীন জুলেখা ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ব্যাংক হিসাবে এবং অপর একটি চেকের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা জাকির হোসেন বাপ্পীর মালিকানাধীন লাবিবা ট্রেডিং এর ব্যাংক হিসাবে পাঠান। এভাবে আসামিরা এক কোটি ৫৯ লাখ এক হাজার ৯৮২ টাকা আত্মসাৎ করেন। 

 

পূর্বকোণ/রাজীব/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট