চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসে ৪ শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১২:৩৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মারামারিতে জড়িয়ে একবার বহিষ্কার হওয়া ৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ৬২ ব্যাচের ৪ শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। জাহিদ হোসেন ওয়াকিল এবং সাকিব হোসেনকে আইসিইউ’তে ভর্তি করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার হওয়া অন্য দুইজন হলেন এম এ রায়হান, মোবাশ্বির হোসেন শুভ্র। তারা ৬২তম ব্যাচের ছাত্র।

জানা যায়, গত বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে প্রধান ছাত্রবাসের বিভিন্ন রুম থেকে এসব ছাত্রদের ডেকে নিয়ে নির্যাতন চালায় ছাত্রলীগ। গতকাল সন্ধ্যায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, অভিজিৎ দাশ, রিয়াজুল ইসলাম জয়, জাকির হোসেন সায়াল, মাহি আহমেদ, ইব্রাহিম সাকিবসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্তরা সকলেই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, অভিযোগ পেয়ে ছাত্রাবাসে নিয়মিত পুলিশের সাথে আরও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নির্যাতনকারীদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীদের একজনের বাড়ি কুমিল্লা এবং অপরজনের বাড়ি নারায়নগঞ্জ। নির্যাতনকারীরা আহত দুই শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ না দিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যেতে গাড়িতে তুলে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

ছাত্রাবাসে অবস্থানরত এক শিক্ষার্থী জানান, বুধবার দিবাগত রাত ৩টায় তাদেরকে ছাত্রাবাসের বিভিন্ন রুম থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। হোস্টেল এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ সকাল থেকে বিষয়টি জেনেও উদ্ধারের কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার রাত ১১টার দিকে পূর্বকোণকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। তবে তাদের কারা প্রহর করেছে, তা এখন পর্যন্ত নাম বলেনি। আমরা আগে তাদের (আঘাতপ্রাপ্তদের) চিকিৎসা নিশ্চিত করছি। পরে অভিযুক্তদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চমেক ছাত্রলীগ নেতা অভিজিত দাশ পূর্বকোণকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগমুহূর্তে নতুনভাবে সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছিল। তারা বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের ব্রেন ওয়াশ করার চেষ্টা করছিল। তারা সবাই শিবির নিয়ন্ত্রিত রেটিনার শিক্ষক। জিহাদী বই ও সরকার বিরোধী বিভিন্ন কর্মকা-ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করে আসছিল। বিষয়টি খবর পেয়ে আমরা তাদের কাছ থেকে সরকার বিরোধি বিভিন্ন তথ্য উদ্ধার করি। যার কারণে তাদের ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করি। এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। তাদের ভাষ্যে চমেকে একটি সংঘবদ্ধ শিবিরের চক্র কাজ করছে। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ অবগত থাকা স্বত্ত্বেও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছিল না। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ চকবাজার থানায় দাখিল করা হয়েছে। তাদের কোন ধরণের মারধর করা হয়নি। আঘাতের চিহ্নগুলোর বিষয়ে আমরা অবগত নই। হয়তো তারা নিজেরাই এসব নাটক সাজিয়েছে। দাবি অভিজিতের।

 

পূর্বকোণ/এএইচ

 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট