৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ৭:০৬ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে মশার ওষুধ কেনায় অনিয়ম পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত নগরীর টাইগারপাসে সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে এ অনিয়মের সত্যতা পায় তারা।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, দুপুরে দুদক কর্মকর্তারা সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়ের দোতলায় অবস্থিত মেয়রের একান্ত সচিবের কক্ষে প্রবেশ করেন। মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম এখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন।
এদিকে দুদকের কর্মকর্তারা পরিচ্ছন্নতা বিভাগের মশার ওষুধ কেনাকাটার ফাইল তলব করেন। পরিচ্ছন্নতা বিভাগ প্রধান কার্যালয়ের পঞ্চম তলায়। ওখান থেকে পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মীরা ফাইলপত্র দোতলায় নিয়ে আসেন। দুদকের কর্মকর্তারা ফাইলের প্রয়োজনীয় নথি যাচাই–বাছাই করে সংগ্রহ করেন।
অভিযান শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মশার ওষুধ নিয়ে অনিয়মের একটা প্রতিবেদনের সূত্র ধরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেছে। গত এক বছরে বেঙ্গল মার্ক ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৭৭ লাখ টাকার ওষুধ কেনা হয়েছে। সরকারি ক্রয়বিধি অনুযায়ী ৫ লাখ টাকার বেশি কেনাকাটা করতে হলে দরপত্র আহ্বান করতে হয়। কিন্তু একই ব্যক্তিকে কাজ দিতে ৫ লাখ টাকার নিচে রাখতে ১৬ লটে ভাগ করে ওষুধ কেনা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জানা গেছে, সরকারি তহবিলের টাকায় ই-জিপির (ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট) মাধ্যমে কেনাকাটা করা এবং দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও ঠিকাদার অরভিন সাকিব ইভান এর প্রতিষ্ঠান মেসার্স বেঙ্গল মার্ক ইন্টারন্যাশনালের কাছ থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি ও সেপ্টেম্বর দুই দফায় ৬ হাজার ৩৫০ লিটার মশা নিধনের ওষুধ কেনা হয়। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে কেনা হয়েছিল ৬ হাজার ৪০০ লিটার ওষুধ। এসব ওষুধের জন্য সিটি করপোরেশনের ব্যয় হয় ৭৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা।
সিটি করপোরেশন নিয়ে ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে নিরীক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়, উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়া ওষুধ কেনা আর্থিক ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী। পিপিআরের এই ধারা ব্যবহার করে কেনাকাটা বা কার্যাদেশ না দিতে বিভিন্ন সময়ে লিখিত নির্দেশনা দেন সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তবে পরিচ্ছন্নতা বিভাগ সেই নির্দেশনা না মেনে দরপত্র ছাড়াই ওষুধ কিনেছে।
পূর্বকোণ/পিআর/এএইচ