চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ তদন্তে দুদক

ইমাম হোসাইন রাজু

২২ আগস্ট, ২০১৯ | ২:৩৩ পূর্বাহ্ণ

হ কয়েকটি এলাকা থেকে
পানির নমুনা সংগ্রহ
হ পানি না পেলেও বিল
দিতে হয় গ্রাহককে
হ মান ঠিক আছে স্পিড
কিছুটা কম : এমডি

নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার সরবরাহকৃত পানিতে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানি সরবরাহের অভিযোগের তদন্তে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। একই সাথে নিয়মিত পানি না পেয়েও মাসশেষে পানির বিল আদায়ের বিষয়টিও নজরে নিয়েছে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল নগরীর কয়েকটি এলাকা থেকে পানির নমুনাও সংগ্রহ করেছে। তাদের কাছে প্রাথমিকভাবে পানির মান যথাযথ নয় বলে প্রতীয়মান হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা। এ বিষয়ে আগামী সপ্তাহে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর উপপরিচালক লুৎফুল কবির চন্দন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম ওয়াসার সরবরাহকৃত পানির মানের বিষয়ে দুদকের হটলাইন নম্বর ১০৬-এ একাধিক অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরীর কয়েকটি এলাকায় সরেজমিনে পরিদর্শন করে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর উপ-সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম। এরমধ্যে নগরীর ফিরোজশাহ ও নিউ মনসুরাবাদ এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় যায় টিম। এসময় দুদকের ওই টিম একাধিক বাসা-বাড়ি থেকে ওয়াসার সরবরাহকৃত পানির নমুনা সংগ্রহ করে। এসময় চট্টগ্রাম ওয়াসার এক প্রতিনিধিকেও ডেকে সরেজমিনে বিষয়টি অবহিত করে এবং এ বিষয়ে ব্যাখাও চায় দুদক টিম। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যহানি রোধে ওয়াসার প্রতিনিধিকে সরবরাহকৃত পানির গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্যও দুদক টিম সুপারিশ প্রদান করে।

দুদক জানায়, পরিদর্শনের সময় স্থানীয়দের সাথে কথা বলা হয় এবং একাধিক বাসা-বাড়ি থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের বিষয়ে সত্যতাও পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র। সূত্র বলে, ওইসব এলাকায় নিয়মিত পানি সরবরাহ হয় না। তবুও মাসশেষে তাদের বিল প্রদান করতে হয়। সরেজমিনে গিয়েও সব প্রমাণ পাওয়া গেছে। টানা তিন থেকে চারদিন পানি না পেয়ে ওই এলাকার লোকজন বাইরে থেকে পানি কিনে ব্যবহার করে থাকেন বলেও সূত্র জানায়। এরপরও মাসশেষে ওয়াসার বিল পরিশোধ করতে হয় গ্রাহককে।

দুদক জানায়, এর আগেও একাধিকবার ওয়াসায় গণশুনানি করে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। গণশুনানিতে এসব বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর উপপরিচালক লুৎফুল কবির চন্দন এ প্রসঙ্গে পূর্বকোণকে বলেন, ‘আমাদের টিম বেশকিছু ভবনের পানির নমুনা সংগ্রহ করেছে। প্রাথমিক বিশ্লেষণে পানির মান যথাযথ নয় মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে। তারপরও সংগৃহীত পানির নমুনা যাচাইয়ের পর কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থান করা হবে। আগামী সপ্তাহে প্রতিবেদনটি কমিশনে পাঠানো হবে। এরপর কমিশন যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, ওই সিদ্ধান্তেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ.কে.এম ফজলুল্লাহ পূর্বকোণকে বলেন, ‘ফিরোজশাহ এলাকায় দুদকের টিম যাওয়ার সময় আমাদের একটি টিমও সেখানে গিয়েছে। ওই এলাকাগুলো সাধারণ এলাকার চেয়ে কিছুটা উঁচু হওয়ায় পানির স্পিড কম, তাই সেখানে ঠিকমতো পানি পৌঁছাতে পারে না। সামনে আমাদের কাজ চলবে, তখন লাইনগুলো সচল হয়ে যাবে। আর পানির মধ্যে যে ময়লার কথা বলা হচ্ছে, তা সঠিক নয়। আমাদের প্রতিনিধি দল তো আমাকে জানিয়েছে, সব ঠিক আছে। তারপরও আমি বিষয়টির আরও খোঁজ নেব’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট