চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ফরম নেননি চট্টগ্রামের কেউ

মোহাম্মদ আলী

২২ আগস্ট, ২০১৯ | ২:২৯ পূর্বাহ্ণ

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের কাউন্সিল
হ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক
পদে ১১০টি ফরম বিক্রি ও
৭৬টি জমা
হ ‘নগর ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ
কমিটি না হওয়ায় চট্টগ্রাম
থেকে নতুন নেতৃত্ব নেই

নতুন নেতৃত্বের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১১০টি ফরম বিক্রি এবং ৭৬টি ফরম জমা হলেও চট্টগ্রাম থেকে কেউ সংগ্রহ ও জমা দেননি। নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব গঠনের লক্ষ্যে ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর। এই দুই পদের নেতা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে যাতে সারাদেশের ছাত্র দলের ১১৬টি সাংগঠনিক ইউনিটের ৫৮০ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন।

ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্বে স্থান পেতে গত ১৭ ও ১৮ আগস্ট দুইদিন ফরম বিক্রির নির্ধারিত দিনক্ষণ ছিল। ওই দুইদিনে সভাপতি পদে ৪২ ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৬৮ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে সভাপতি পদে ২৭ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৪৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গত ২০ আগস্ট মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে দুই পদে মোট ৭৬টি ফরম জমা পড়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা থেকে শুধুমাত্র মো. আসাদুল আলম টিপু নামে এক ছাত্রদল নেতা সভাপতি পদে ফরম সংগ্রহ ও জমা দেন। তিনি সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
মনোনয়নপত্র জমার বিষয়টি জানিয়ে ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি বলেন, সর্বমোট ৭৬টি ফরম জমা পড়েছে। বিক্রি হয়েছিল ১১০টি। ২১ আগস্ট থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত পাঁচদিন জমা করা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করবেন ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে বাছাই কমিটি।

তিনি জানান, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৩১ আগস্ট। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীদের প্রচারণা ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর মধ্য রাত পর্যন্ত। সর্বশেষ ছাত্রদলের কমিটি গঠন হয়েছিল ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর। ওই কমিটিতে সভাপতি হিসেবে রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আকরামুল হাসানকে নির্বাচিত করা হয়।
এদিকে চট্টগ্রাম থেকে কেউ ফরম সংগ্রহ না করার বিষয়টি স্বীকার করে মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘আমার জানা মতে চট্টগ্রাম থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নতুন কমিটির জন্য কেউ ফরম সংগ্রহ করেনি। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা থেকে শুধুমাত্র মো.আসাদুল আলম টিপু নামে এক ছাত্রদল নেতা সভাপতি পদে ফরম সংগ্রহ ও জমা করেছে।’

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সর্বশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছিল ২০১৩ সালের ২১ জুলাই। ১১ সদস্যের নগর ছাত্রদল কমিটিতে গাজী মুহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ সভাপতি ও বেলায়েত হোসেন বুলু সাধারণ সম্পাদক হন। দীর্ঘ ৬ বছরেও এ কমিটি আর পূর্ণাঙ্গ করা যায়নি। এর মধ্যে গাজী মুহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এবং বেলায়েত হোসেন বুলু নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক হন। বর্তমানে তাদের দিয়েই নগর ছাত্রদলের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ কারণে নতুন করে নেতৃত্ব ওঠে আসছে না বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের নেতারা।

এদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে চট্টগ্রাম থেকে কেউ ফরম না নেওয়ার প্রসঙ্গে মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও নগর ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব ইয়াছিন চৌধুরী লিটন দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নগর ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়া এবং নিয়মিত কমিটির ধারাবাহিকতা না থাকায় চট্টগ্রাম থেকে নতুন নেতৃত্বে ওঠে আসছে না। নেতৃত্বের মধ্যে এক ধরনের বন্ধ্যাত্ব দেখা দিয়েছে। এ কারণে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে এখান থেকে ফরম নেওয়ার কেউ আগ্রহ দেখায়নি।’
মহানগর ছাত্রদলের এক নেতা জানান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলে চট্টগ্রাম থেকে অতীতে কেউই সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক হতে পারেননি। সর্বোচ্চ সহ-সভাপতি পর্যন্ত হয়েছেন। ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহ সভাপতি ছিলেন সীতাকু-ের ফেরদৌস মুন্না এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সভাপতি হন মিরসরাইয়ের সরোয়ার উদ্দিন সেলিম। এছাড়া নগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সভাপতি আমিনুল ইসলাম তৌহিদ সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। অতীতে চট্টগ্রাম থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ সভাপতি হন ইফতেখার মহসিন চৌধুরী, নাজিমুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, আহমেদুল আলম রাসেল প্রমুখ ছাত্রদল নেতা। এর মধ্যে মোহাম্মদ আলী ইন্তেকাল করেন। অন্যরা বিএনপির সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট