চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

আলোচনা সভায় বক্তাদের অভিমত

শেখ হাসিনার কণ্ঠ স্তব্ধ করতেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ আগস্ট, ২০১৯ | ২:২২ পূর্বাহ্ণ

‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য ঠা-া মাথায় ষড়যন্ত্র করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছিলো।’ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা স্মরণে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনসমূহ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। জড়িতদের বিচার দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলা দিবস পালিত হয়েছে।
মহানগর আওয়ামী লীগ: সেই নারকীয় হত্যাযজ্ঞে আইভি রহমানসহ ২৪ জন শহীদ হয়েছেন। এছাড়া, আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করেছেন দুই শতাধিক নেতা-কর্মী।’ গতকাল বুধবার জেলা পরিষদ মিলনায়তনে নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত ২১ আগস্টের শহীদদের স্মরণে দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বক্তারা আরো বলেন, আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ অনেক জাতীয় নেতা আহত হয়েছেন। তাদের শরীরে বোমার স্প্রিন্টার রয়েছে। আল্লাহর অশেষ রহমত থাকায় শেখ হাসিনা রক্ষা পেয়েছেন।’ প্রকাশ্য দিবালোকে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা দুঃসাহসী ঘটনা উল্লেখ

করে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, তৎকালীন বিএনপি সরকার জজ মিয়া নাটক সাজানোর চেষ্টা হয়েছিল। আলামত নষ্ট করে অপকর্ম আড়ালের চেষ্টা করেছিলো। মামলা নিতে গড়িমসি করেছে, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিলো। এর থেকে প্রমাণ হয়-খালেদা জিয়ার সরকার এ হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলো। কুলাঙ্গার তারেক জিয়া পরিকল্পিতভাবে এ হামলা করেছিলো। তাদের ভরসা ছিলো সরকার সমর্থন দেবে। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিভিন্ন দেশে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন। এ হামলার পরও একই কাজ করতে চেয়েছিলেন।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে পঙ্গু করতে অনেক চেষ্টাই করেছে বিএনপি। কিন্তু জনগণ থেকে আওয়ামী লীগকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি। ২১ বছরের দুঃশাসন, পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশ পরিচালনার অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। বঙ্গবন্ধু আন্দোলন-সংগ্রাম করে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে যে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী ভিশন ঠিক করেছেন। তার নেতৃত্বে আমরা যদি অর্পিত নাগরিক দায়িত্ব দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে পালন করতে পারি তবে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্র পাবো।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জড়িতদের দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বক্তারা খুনিদের আশ্রয় না দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনমত সৃষ্টির আহ্বান জানান।
বক্তারা আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা, শেখ হাসিনার স্বপ্নের রাষ্ট্র গড়া আমাদের লক্ষ্য। আমাদের আত্মার বন্ধন সুদৃঢ় হোক এটাই চাই। যেকোনো পরিস্থিতিতে যাতে শক্ত অবস্থানে থাকতে পারি সেটাই মূল লক্ষ্য। ঐক্যবদ্ধভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, এডভোকেট সুনীল সরকার, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী প্রমুখ।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ: সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি বলেছেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকা-ের নেপথ্য নায়ক ছিলেন জেনারেল জিয়া, আর ২১ আগস্ট হত্যাযজ্ঞের নায়ক তারেক জিয়া। তিনি তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনে গ্রেনেড হামলার বিচার সম্পন্ন করে ফাঁসি দেয়ার দাবি জানান। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অতীতেও ষড়যন্ত্র হয়েছে, বর্তমানেও ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেকোন অশুভ ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ প্রস্তুত। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানে কিভাবে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে ষড়যন্ত্র রুখতে হয়। ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ১৫তম বার্ষিকী পালন উপলক্ষে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। গতকাল বুধবার বিকেলে সংগঠনের দোস্ত বিল্ডিংস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালাম। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জসিম উদ্দিন শাহ্র সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহসভাপতি অধ্যাপক মো. মঈনুদ্দিন, এডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ মো. গিয়াস উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুস গণি চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আনোয়ার বাহার, দেবাশীষ পালিত, সম্পাদক ম-লীর সদস্য স্বজন কুমার তালুকদার, মুহাম্মদ আলী শাহ, বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার, ভবতোষ নাথ, এড. এম এ নাসের চৌধুরী, আলাউদ্দিন সাবেরী, কার্যনির্বাহী সদস্য মহিউদ্দিন রাশেদ, দিদারুল আলম বাবুল, মোহাম্মদ ইউনুস, আলহাজ জাফর আহমেদ, এসএম শফিউল আজম, শওকত আলম, শাহনেওয়াজ চৌধুরী, উত্তর কৃষকলীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবলীগ সহসম্পাদক মো. সেলিম উদ্দিন, মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এড. বাসন্তী প্রভা পালিত, রাশেদ খান মেনন। সভার শুরুতে শহীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ: সংগঠনের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা ছিল তৎকালীন জামাত-বিএনপি সরকারের সন্ত্রাসী কর্মকা-ের অংশ। বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনীতির ইতিহাসে বর্বরোচিত ও কলঙ্কিত দিন ২১ আগস্ট। ২১ আগস্ট হামলার মূল টার্গেট ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী (তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী) শেখ হাসিনা। সেদিন নারী নেত্রী আইভি রহমানসহ বেশকিছু নেতা-কর্মী নিহত ও কয়েক শ’ নেতা-কর্মী, সমর্থক আহত হন। গতকাল (বুধবার) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলায় হত্যাকা- ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকা-ের ধারাবাহিকতার অংশ। জামায়াত-বিএনপি সরকারের মদদপুষ্ট হায়নারা শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য একের পর এক গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ উপ দপ্তর সম্পাদক বিজয় কুমার বড়–য়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সহ-সভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী, সহ-সভাপতি আবু সঈদ, বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আলম, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. মির্জা কছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এড. জহির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ কুমার দাশ, শ্রম সম্পাদক খোরশদ আলম, দপ্তর সম্পাদক আলহাজ আবু জাফর, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন এমরান, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক তিমির বরণ চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী, বন সম্পাদক এড. মুজিবুল হক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য মোস্তাক আহমদ আঙ্গুর, একে আজাদ, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা, দক্ষিণ জেলা যুবলীগ সভাপতি আ ম ম টিপু সুলতান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক পার্থ সারথী চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক ও বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চৌধুরী মো. গালিব সাদলী, দক্ষিণ জেলা কৃষকলীগ সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা তাতীলীগ আহবায়ক দিদারুল আলম, আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম বাবুল, নুরুল আবছার, মাস্টার সিরাজুল ইসলাম, নাছির উদ্দিন, এড. শফিউল আলম, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগ নেত্রী নুর নাহার জালাল, রেহেনা ফেরদৌস, খালেদা আক্তার চৌধুরী, জীবন আরা বেগম, শাহিন আক্তার সানা, তামান্না সুলতানা, বিবি জয়নাব, জেবুন্নেছা জেবু, রয়ন জান্নাত, নিলুফার জাহান বেবী, কামরুন নাহার কমরু, রুনু দাশ, আয়েশা সিদ্দিকা রুমি, শাহানা আক্তার টিয়া, জগধা চৌধুরী সুপ্রিয়া, আয়েশা আকতার, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এম এ মালেক, রাজিন দাশ রাহুল।
এমএ লতিফ এমপি : ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস স্মরণে আলোচনা সভা সকাল ১১ টায় আগ্রাবাদস্থ পুরাতন চেম্বার হাউজ মিলনায়তনে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাংসদ এম এ লতিফ এমপি’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুল হক মিয়া’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি এম এ লতিফ এমপি বলেন, ১৫ আগস্টের ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। সেই হামলায় আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী আইভী রহমানসহ আওয়ামীলীগ’র কেন্দ্রীয় ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত ও ৪০০ জন আহত হন। যাদের মধ্যে অনেকেই এখন অসুস্থ ও পঙ্গুত্ব বরণ করে জীবন যাপন করছেন। আলোচনা সভায় ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হোসেন মুরাদ’র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, ২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. আসলাম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ’র সা. সম্পাদক মো. শফিউল আলম, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আজিজ মোল্লা, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ’র সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা, ৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ’র সাধারণ সম্পাদক নুুরুল আলম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, লবণ শ্রমিকলীগ সভাপতি আব্দুল মতিন মাস্টার, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারী শ্রমিক কর্মচারী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. ইমাম হোসেন, বন্দর সিবিএর যুগ্ম সম্পাদক নায়েবুল ইসলাম ফটিক, রেলওয়ে শ্রমিক লীগ নেতা কামাল উদ্দিন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন মোরশেদ, স্বাধীনতা নারী শক্তির পরিচালক অধ্যাপিকা বিবি মরিয়ম ও মনিকা ভট্টাচার্য্য বক্তব্য রাখেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট