চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নতুন রূপে সেজেছে ‘স্বাধীনতা কমপ্লেক্স’

মোহাম্মদ আলী

৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ

নতুন রূপে সেজেছে ‘স্বাধীনতা কমপ্লেক্স’। দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বাড়াতে পুরো কমপ্লেক্সকে রংয়ের তুলিতে অনন্য সাজে সাজানো হয়েছে। তাতে আকর্ষণ বেড়েছে দর্শনার্থীদের। নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালের বিপরীতে কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র সংলগ্ন প্রায় ১৬ দশমিক ৩৭ একর জায়গাজুড়ে স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের অবস্থান।

 

 

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থাপনার আদলে স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে তৈরি করা হয়েছে জাতীয় সংসদ ভবন, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, সোনা মসজিদ, আহসান মঞ্জিল, কার্জন হল, লালবাগ কেল্লা, শহীদ মিনার, কান্তজির মন্দির, বড় কুঠি, ছোট কুঠি, দরবার হল, সেন্ট নিকোলাস চার্চ, হাইকোর্ট, পাহাড়পুর বিহার, চিরন্তন পল্লীসহ উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান। এছাড়া চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তা এবং বিভিন্ন জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে। রয়েছে ২৪তলা বিশিষ্ট ঘূর্ণায়মান হোটেলের সাথে ওয়াচ টাওয়ার ও এমিউজমেন্ট রাইড, প্যাডেল বোট, ফ্যামিলি কোস্টার, বেবি ক্যাসেল, বেলুন হুইল, মিউজিক সুইং, বাম্পার কার, আরবি ট্রেন ইত্যাদি।

 

 

স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের ইজারাদার ‘মেসার্স ওয়েল এন্টারপ্রাইজ’। এটির প্রোপ্রাইটর মো. হেলাল উদ্দিন দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘স্বাধীনতা কমপ্লেক্স বাস্তবিক অর্থে এক খণ্ড ‘মিনি বাংলাদেশ’। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সকল স্থাপনার নিদর্শন। এগুলোকে আরো সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানা-রংয়ে সাজানো হয়েছে। তাছাড়া দর্শনার্থীরা দেখতে পাবেন বাংলার চিরাচরিত শান্ত-সৌম্য প্রাকৃতিক নিসর্গ। এ কমপ্লেক্সে রয়েছে সু-বিস্তৃত স্বচ্ছ জলরাশির লেক, রয়েছে সবুজের সমারোহ।

 

 

একই সাথে সকল বয়সিদের চিত্তবিনোদনের জন্য আছে আধুনিক সব রোমাঞ্চকর রাইড যেমন- কিডস প্লে জোন, পাইরেট শিপ, ভার্চুয়াল মুভি, বাম্পার কার, রোলার কোস্টার, ডল বোট, আর.বি ট্রেন, ম্যাজিক সুইং, বেলুন হুইল, বেবি কেরোসল, বেবি রেসিং কার যা সময়ের সাথে সাথে আরো আধুনিকতর করা হচ্ছে। আছে লেকের স্বচ্ছ জলে কৃত্রিম ফোয়ারার অপূর্ব দৃষ্টিনন্দন জলকেলি। পার্কের সম্মুখ ভাগে রয়েছে নিরাপত্তা বেষ্টিত আড়াই একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত গাড়ি পার্কিং এর সুব্যবস্থা।’

 

 

মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে রয়েছে আধুনিক কমিউনিটি হল। যেখানে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা বেষ্টনীতে আয়োজন করা যায় বিয়ে, গায়ে হলুদ, মেজবান, সেমিনারসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠান। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা সফর ও পিকনিকের জন্য রয়েছে বিশেষ আয়োজন। এছাড়া বিভিন্ন জাতীয় দিবসে, নববর্ষে, নবান্নে, বসন্তের আগমনী দিনে, ভালোবাসা দিবসে আয়োজন করা হয় বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।’

 

 

প্রসঙ্গত, পৃথিবীতে প্রথম এমিউজমেন্ট পার্কের ধারণা শুরু হয় ১১৩৩ সালে। ঐতিহ্যবাহী মেলাকে কেন্দ্র করে ইংল্যান্ডে এমিউজমেন্ট পার্কের সূচনা হয়। তবে তা কয়েকদিন চলার পর শেষ হয়ে যেত। এ ধরনের পার্কে শারীরিক কসরত, গান, বাদ্যবাজনাসহ বিভিন্ন জমজমাট অনুষ্ঠান হতো। এরপর ১৫৮৩ সালে ডেনমার্কের উত্তর কোপেনহেগেন শহরে বেকেন নামে এমিউজমেন্ট পার্ক চালু করা হয়। তবে তাও ছিল অস্থায়ী।

 

 

এটির আরো প্রায় ৩১২ বছর পর স্থায়ীভাবে এমিউজমেন্ট পার্ক চালু করা হয় আমেরিকার ব্রুকলিন শহরে। ১৮৯৫ সালে বর্তমান ধারণার এই এমিউজমেন্ট পার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। সমুদ্রের প্রাণিনির্ভর এ পার্কের নাম ছিল ‘সি লায়ন পার্ক’। এটিতে দর্শনার্থীরা প্রথম টাকা দিয়ে টিকেট ক্রয় করে পার্কে প্রবেশ করেছিল। এটির এক বছর পর যান্ত্রিক রাইডস নির্ভর এমিউজমেন্ট পার্ক করা হয় ইংল্যান্ডে। ১৮৯৬ সালে চালুকৃত পার্কের নাম ছিল ‘ব্ল্যাকপোল প্ল্যাজার বিচ’।

 

 

এরপর পৃথিবীর দেশে দেশে এমিউজমেন্ট পার্ক চালু করা হয়। বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এমিউজমেন্ট পার্ক হচ্ছে ‘ওয়াল্ট ডিজনি ওয়ার্ল্ড’। আমেরিকার ফ্লোরিডা রাজ্যে এ পার্কের অবস্থান। ১৯৭৩ সালে প্রায় ২০০ একর জায়গার ওপর এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ পার্কে রয়েছে রেস্টুরেন্ট ও আধুনিক সব শিক্ষণীয় রাইডস। এরমধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কয়েকটি রাইডস হচ্ছে ফ্ল্যাট রাইডস, রোলার কোস্টার, ট্রেন রাইডস, ওয়াটার রাইডস, ডার্ক রাইডস, ফেরিস হুইল, ট্রান্সপোর্ট রাইডস। একই সাথে তুলে ধরা হয়েছে বিশ্বের বড় বড় ঐতিহ্যসমূহ।

পূর্বকোণ/আরএ

 

 

 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট