চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

কাঁচা ফুলের স্থান দখল করে নিচ্ছে প্লাস্টিকের ফুল

মরিয়ম জাহান মুন্নী

৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ | ১১:২২ পূর্বাহ্ণ

ইংরেজি নতুন বছরকে কেন্দ্র করে এবার বেশ জমে উঠছে ফুল ব্যবসা। করোনা পরবর্তী গত তিন বছরের চেয়ে এবার ভালো কিছুর আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। নগরীর মোমিন রোডস্থ ফুল ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফুল ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবারের থার্টি ফাস্ট নাইটকে কেন্দ্র করে ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা দুই- আড়াই কোটি টাকা। তিন বছর পর থার্টি ফাস্ট নাইটকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস, সাংস্কৃতিক সংগঠন, বিয়ে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বেশ আগ্রহ বেড়েছে।

 

তবে কাঁচাফুলের চেয়ে চাহিদা বেশি আমদানি করা প্লাস্টিকের চায়না ফুলের। কিন্তু চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচাফুলও। মোমিন রোডের ফুল ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন কাঁচাফুলের চেয়ে চাহিদা বেশি আমদানি করা প্লাস্টিকের ফুলের। এ কারণে দেখা গেছে কাঁচা ফুলের উৎপাদন ও সরবরাহ আগের চেয়ে কমে গেছে।

 

মূলত, চায়না প্লাস্টিকের ফুলের চাহিদা বেশি হওয়ার কারণ এটি কাঁচাফুলের চেয়ে বেশি সময় স্থায়ী হয়। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্লাস্টিকের ফুলের চাহিদা বেশি পাশাপাশি এখন বিয়ে সাদিতেও এ ফুল ব্যবহার বেশি। তবে থার্টি ফাস্ট নাইটকে কেন্দ্র করে চাহিদা বেড়েছে কাঁচাফুলেরও।

 

গতকাল (শুক্রবার) সরেজমিনে দেখা যায়, নানা রকম ফুলে ফুলে সেজে উঠেছে চেরাগী পাহাড় মোড়ের প্রতিটি ফুলের দোকান। হেঁটে যাওয়ার সময় বাতাসে ভেসে আসছে ফুলের মিষ্টি গন্ধ। কিন্তু এখনো দেখা মিলছে না খুচরা ক্রেতাদের। তবুও বেশ ব্যস্ত সময় পার করছে কর্মীরা। করোনার মধ্যে ঝিমিয়ে থাকা ব্যবসা যেন প্রাণ খুঁজে পেয়েছে এবার। প্রতিদিনই আসছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বড় বড় অর্ডার। সেই অর্ডার নিতেই ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা।

পাশাপাশি নিউ ইয়ারের রাতে বিয়েশাদির মত সামাজিক অনুষ্ঠানও হয়। এছাড়া সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোরও অর্ডার আছে। ফুল ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম বলেন, করোনা পরবর্তী গত তিন বছর আমাদের অবস্থা খুব খারাপ ছিল। কোনো কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের অর্ডার ছিল না। কিন্তু আমাদের এসব দিবসে মূলত ব্যবসা হয় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে। যা তখন ছিল না।

 

তবে এবার আশা করছি ভালো কিছু হবে। এবার বিভিন্ন পোশাক কারখানা, ব্যাংক, বীমা, রেস্টুরেন্ট, সামাজিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিউ ইয়ারের অর্ডার আসছে। যার কারণে এবার ভালো কিছু হবে বলে আশা করছি। চট্টগ্রামে ফুল ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ সংগঠনের সদস্য আছে ৪শ’র বেশি। সবাই মিলে আমাদের প্রায় দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা আছে এবার।

 

এসময় তিনি আরো বলেন, এখন কাঁচাফুলের চেয়ে প্লাস্টিকের ফুলের চাহিদা বেশি। এ ফুলের দামও কম, সহজে নষ্টও হয় না। তাই অল্প খরচে বেশি সময় স্থায়ীত্বের জন্য এ ফুলের কদর বেশি। এছাড়া প্লাস্টিকের ফুলের মধ্যে খুব সুন্দর দৃষ্টিনন্দন ফুল পাওয়া যায়। এদিকে চায়না প্লাস্টিকের ফুলের কারণে কাঁচা ফুলের উৎপাদন ও সরবরাহ কমে গেছে। তবে চায়না থেকে অনেক জাতের কাঁচাফুল আসে যা চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম বলা যায়। বাংলাদেশি ফুলের মধ্যে বেশি যশোর থেকে আসে। কিন্তু প্লাস্টিকের চেয়ে কাঁচা ফুলের দাম বেশি।

 

এখানকার ফুল বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এতো দিন দেশি প্রতিটি কাঁচাফুল বিক্রি হয়েছে ১০-২৫ টাকার মধ্যে। চায়নার আমদানি করা কাঁচাফুল বিক্রি হয়েছে ১২-৩০ টাকার মধ্যে। তবে থার্টি ফাস্ট নাইটের দিন ভিন্ন ভিন্ন জাতের চায়না ফুল ৪০-১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে পারে এবং দেশি ৩০-৫০ টাকার বেশিও বিক্রি হতে পারে। এ ফুলের সরবরাহ কম কিন্তু এ একদিনে সিঙ্গেল বা বুকেট কাঁচাফুলের চাহিদা বাড়ে। তাই দামটাও বাড়বে।

পূর্বকোণ/আর

 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট