চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের হাওয়া টেকনাফে, চলছে প্রস্তুতি

নিজস্ব সংবাদদাতা , টেকনাফ-উখিয়া

১৯ আগস্ট, ২০১৯ | ২:০২ পূর্বাহ্ণ

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে কক্সবাজারের টেকনাফে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তবে রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসন নিয়ে উদ্বিগ্ন। টেকনাফের কেরণতলী প্রত্যাবাসন ঘাট ও নয়াপাড়া শালবন রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করে এবং সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। শনিবার বিকেলে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের কেরণতলী প্রত্যাবাসন ঘাটে বেশ কিছু

শ্রমিককে কাজ করতে দেখা গেছে। এসময় একটি দল প্রত্যাবাসন কেন্দ্রের বিভিন্ন স্থান ও কক্ষ ঘুরে দেখেন। সেখানে কথা হয় শ্রমিক হামিদুল রহমান ও মোহাম্মদ সেলিমের সঙ্গে। তারা জানান, এখান থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর কথা রয়েছে। ফলে ক্যাম্প ইনচার্জের নির্দেশে গত কয়েকদিন প্রত্যাবাসন ঘাটে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা চলছে। এছাড়া প্রতিদিন সংশ্নিষ্ট অফিসের লোকজন এসে তদারকি করছেন।
প্রত্যাবাসন ঘাটের দায়িত্বে থাকা প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের প্রতিনিধি মোহাম্মদ শহীদুল হাসান জানান, এ ঘাট দিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হওয়ার কথা রয়েছে। তাই কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এখানে কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন কাজকর্ম চলছে।
গত বছরের ১৫ নভেম্বর প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনের কথা থাকলেও রোহিঙ্গাদের প্রতিবাদে তা শুরু হয়নি। সে সময় উখিয়ার ঘুমধুম ও টেকনাফের নাফ নদের তীরে কেরণতলী (নয়াপাড়া) প্রত্যাবাসন ঘাট নির্মাণ করা হয়েছিল। ২২ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তিন হাজার ৫৪০ রোহিঙ্গার মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার কথা রয়েছে।
প্রত্যাবাসন ঘাটে দায়িত্বরত ১৬ আনসার ব্যাটালিয়নের হাবিলদার মোহাম্মদ আইনুল হক বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঘাটে কয়েকদিন ধরে কাজ চলছে। এ কাজে তারা সহযোগিতা করছেন। কয়েকদিনের মধ্যে এ ঘাট দিয়ে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত যাবে বলে তিনি শুনেছেন।
একই দিন নয়াপাড়া শালবন রোহিঙ্গা শিবিরে সিআইসি কার্যালয়ের পাশে প্রত্যাবাসনের তালিকায় নাম থাকা রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য তড়িঘড়ি করে প্লাস্টিকের ছোট ঘর তৈরি করে বেড়া দিতে দেখা গেছে। এখানে বেশ কিছু রোহিঙ্গা শ্রমিক কাজ করছেন। আবদুল করিম নামে এক শ্রমিক বলেন, মিয়ানমারে ফেরত যাবে এমন রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য এসব ঘর তৈরি করা হচ্ছে। এ শিবিরের চেয়ারম্যান রমিদা বেগম বলেন, শুনেছি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হবে। তবে হঠাৎ করে কারও সঙ্গে কথা বলে না এই প্রত্যাবাসন হচ্ছে। এতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
টেকনাফের জাদিমুড়া ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হোক সেটি তারাও চান। তবে রাখাইনে নির্যাতনের বিচার ও মিয়ানমারে তাদের নাগরিকত্ব দিলে রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে প্রস্তুত। হঠাৎ করে প্রত্যাবাসনের খবরে রোহিঙ্গারা উদ্বিগ্ন। কীভাবে কী হচ্ছে তারা তা বুঝতে পারছে না।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে কখন প্রত্যাবাসন শুরু হবে, সে বিষয়ে এখনও অবগত নই।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট