চট্টগ্রাম বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

স্বপ্নপূরণের কাণ্ডারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

অনলাইন ডেস্ক

৪ ডিসেম্বর, ২০২২ | ১২:৫০ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার উদ্যোগে আয়োজিত পলোগ্রাউন্ডের জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ রাখবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে নভেম্বরের শুরু থেকেই চঞ্চল ও কর্মমুখর হয়ে ওঠে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো। করোনা মহামারীর কারণে দেশে দীর্ঘ দিন ধরে বড় কোন জমায়েত বন্ধ ছিল। এরপর স্বল্প পরিসরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন হতে থাকলেও প্রযুক্তি সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থেকে তিনি রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন এবং উন্নয়ন কর্মকা- সমূহ উদ্বোধন করেন। দীর্ঘ প্রায় দুই থেকে আড়াই বছর পর তিনি এখানে সশরীরে কোন অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগ প্রধান হিসেবে দলীয় কর্মসূচিতে তিনি সর্বশেষ চট্টগ্রামের কোন জনসভায় সশরীরে উপস্থিত হয়েছিলেন ২০২০ সালের ২১মার্চ। সেই তাঁর আগমন উপলক্ষে জনসভাটি চট্টগ্রাম মহানগরীর কোন একটি স্থানে হওয়ার কথা থাকলেও শেষমেশ জনসভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল পটিয়ায়। সশরীরে দলীয় কর্মসূচিতে চট্টগ্রামের কোন সভায় বক্তব্য রাখবেন তাই চট্টগ্রামের আওয়ামী পরিবারে আজ খুশির ঢেউ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই তাঁর জেলায় জেলায় সফর এর অংশ হিসেবেই তিনি চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দিয়ে ভাষণ রাখতে চলেছেন। ২০০৮ সালের পর আরো দুটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও তখন কোন নির্বাচনী জনসভায় এখানে আসেননি। এবারের জনসভাটি সরাসরি নির্বাচনী জনসভা না হলেও এ সভা থেকে আগামী নির্বাচনে বিজয় লাভের লক্ষ্যে করণীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনা আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধুকন্যা এ জনসভায় রাখতে পারেন বলে ধারণা করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। সবদিক বিবেচনায় রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এবারের আগমন চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগসহ সমগ্র চট্টগ্রামবাসীর কাছে ভিন্ন রকম গুরুত্ব পেয়েছে। তাই, এখানকার আওয়ামী লীগ চায় চট্টগ্রামের ইতিহাসে স্মরণকালের সর্বোচ্চ সংখ্যক জনসমাগম এ জনসভায় ঘটাতে। নভেম্বরের শুরু থেকেই চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ পৃথক পৃথক প্রস্তুতি সভা করেছে। যৌথভাবেও প্রতিনিধি সভা করেছে এ তিন সাংগঠনিক জেলা মিলে। এছাড়া প্রতিটি থানা ও উপজেলায়ও হয়েছে প্রস্তুতি সভা। প্রস্তুতি সভা করেছে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোও। ২০০৮সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ তথা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার চট্টগ্রামে যে পরিমাণ উন্নয়ন সাধিত করেছে, এর আগে পুরো শতক জুড়েও সে পরিমাণ উন্নয়ন চট্টগ্রামে হয়নি। এখনো তাঁর বদান্যতায় চট্টগ্রামে যে সমস্ত উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে তা সম্পন্ন হলে আগামী প্রজন্ম দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উন্নত চট্টগ্রাম পাবে। তাই চট্টগ্রামবাসী জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ।

 

চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জেলা। এ জেলা প্রকৃতির অপূর্ব একটি দান। পাহাড়, নদী, সাগর, সমতলের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যতা ও সমম্বয়ে গড়া চট্টগ্রামের পরতে পরতে লুকিয়ে আছে অপার সম্ভাবনা। ২০০৮ সালের পূর্বে ১৯৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো অফুরান সম্ভাবনার চট্টগ্রামকে সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি। অথচ কর্ণফুলী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় প্রাকৃতিক পোতাশ্রয়ে গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর। ঐতিহাসিক কাল হতেই দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের শতকরা ৯০ভাগেরও বেশি কার্যক্রম এই বন্দর দিয়েই হয়েছে। দেশের রাজস্ব আয়ের শতকরা ৮০ভাগই আসে এ চট্টগ্রাম থেকেই। চট্টগ্রামের রয়েছে পতেঙ্গা, পারকীর চর ও বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার এবং রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ির ঘন অরণ্য সুশোভিত পার্বত্য এলাকাসহ পুরো জেলাময় ছোট বড় পাহাড়, টিলার মত নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। চট্টগ্রামের সৌন্দর্য, ভৌগলিক অব¯’ানগত সুবিধা ও বাণিজ্যিক সুবিধার কারণে এদেশে ছুটে এসেছিল আরকান, আরব, ফার্সি, পর্তুগিজ, মোগল ও ইংরেজরা। তাদের ঐতিহাসিক নানা স্মৃতি চিহ্ন এখনো চট্টগ্রামে বিদ্যমান। চট্টগ্রামের মানুষের কঠোর পরিশ্রম, কারিগরি জ্ঞান, শিল্প সাহিত্যে পারদর্শিতা ও নানা কাজে সাহসিকতা পূর্বপুরুষ থেকেই পাওয়া, তাই চট্টগ্রামের মানুষ সবসময়ই দেশের দক্ষ জনগোষ্ঠী হিসেবে সর্বক্ষেত্রে অবদান রেখে আসছে পূর্বপুরুষদের সময় থেকেই। অন্যায়, অত্যাচারে বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা, জীবনবাজি রেখে দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ার ইতিহাস চট্টগ্রামকে সারা উপমহাদেশের কাছে বীর চট্টলা হিসেবে পরিচিত করে তুলেছিল ইংরেজ আমল থেকেই। ১৯৩০ সালে মাস্টার দা সূর্যসেন, প্রীতিলতা, কল্পনা দত্তদের চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন ও চট্টগ্রামকে স্বাধীন ঘোষণা করার ঘটনা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ইতিহাসে অনন্য সাধারণ ঘটনা হিসেবে প্রতিভাত হয়। এ ঘটনার অনুপ্রেরণা থেকেই দেড় দশকের সংগ্রামী পথ চলায় ১৯৪৭ সালে এ উপমহাদেশ থেকে দীর্ঘ ২০০ বছরের দুঃশাসনের অবসান হয়েছিল। চট্টগ্রামের অপার সম্ভাবনা ও চট্টগ্রামের মানুষের অসম দৃঢ়তাকে চিনেছিলেন আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রথম সকালেই চট্টগ্রামকে দেখেছিলেন, ১৯৪৫ সালে ইংরেজ শাসকদের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেছিলেন এ চট্টগ্রামের সঙ্গীদের নিয়ে এ চট্টগ্রাম থেকেই। সে সময় তাঁর সাথে ছিলেন চট্টলার অবিসংবাদিত নেতা জহুর আহমদ চৌধুরী ও এ এ আজিজ প্রমুখ। ইংরেজ হটিয়ে পাকিস্তান সৃষ্টির সময়কাল থেকেই বঙ্গবন্ধু পৃথক স্বাধীন বাংলাদেশের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন। ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন এর মাধ্যমে তিনি বাংলার স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই এগুচ্ছিলেন। তাঁর এ পথ চলায় তিনি চট্টগ্রামের উপর ছিলেন দৃঢ় আস্থাশীল। তাই, ১৯৬৬ সালে তিনি স্বাধীনতার আকাক্সক্ষাকে লেলিহান শিখার মত জনমানসে ছড়িয়ে দিতে প্রণয়ন করেছিলেন ঐতিহাসিক ৬ দফা। বাঙালির মুক্তির সনদ হিসেবে পরিগণিত ৬ দফার প্রকাশ্য ঘোষণা তিনি চট্টগ্রামের লালদিঘির মাঠেই দিয়েছিলেন। অর্থাৎ মুক্তি আন্দোলনের অনির্বাণ শিখা তিনি চট্টগ্রামেই জ্বালিয়েছিলেন এবং তার আগুন সারা বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের রক্তে লেগেছিল, ৭১-এ এসেছিল স্বাধীনতা। তিনি চট্টগ্রামকে ভালোবাসতেন, চট্টগ্রামের প্রতি ছিল আস্থা ও বিশ্বাস। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়নে অনেকগুলো পরিকল্পনা চিন্তা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, দুর্ভাগ্য বাংলা মায়ের। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরে ৭১’র পরাজিত শক্তি ও স্বার্থান্ধ দেশি বিদেশিদের ষড়যন্ত্রে সপরিবারে শহীদ হন জাতির জনক। এরপর আসে অস্ত্রমুখে ক্ষমতা দখলের পালা। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী স্বৈরাচারী সরকারগুলো না ভেবেছে দেশের উন্নয়ন, না ভেবেছে চট্টগ্রামের কথা। অনেক আগে থেকেই দেশের বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে কর্পোরেট অফিসগুলো চট্টগ্রামে থাকলেও নিজেদের স্বার্থে দেশের ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে নিতে স্বৈরাচার ও তাদের দোসর সরকার ধীরে ধীরে এর প্রায় সবকটি ঢাকায় সরিয়ে নেয়। তাই, কথিত বাণিজ্যিক রাজধানী ধীরে ধীরে গুরুত্ব হারাতে থাকে এবং উন্নয়ন বঞ্চিত থেকে যায়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশের অর্থনীতি। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা, আওয়ামী লীগ প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনায় আসলে চট্টগ্রামের উন্নয়নকে গুরুত্ব দেন তিনি। তিনি মনে করলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠা উন্নয়নের পূর্ব শর্ত। পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে পাহাড়ি বি”িছন্নবাদীদের দীর্ঘদিনের সহিংসতা বন্ধ করতে ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি করলেন এবং চট্টগ্রাম পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশে উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলেন। ২০০১সালে নানামুখী ষড়যন্ত্রের নির্বাচনে বিএনপি-জামাত জোট সরকার গঠন করে আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে সারাদেশ ও চট্টগ্রামের উন্নয়নকে স্থবির করে দেয়। বঙ্গবন্ধুকন্যার উপস্থিতিতে চট্টগ্রামে সর্বশেষ নির্বাচনী জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালে, ঐতিহাসিক লালদিঘি ময়দানে। সেদিন তিনি দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, সরকার গঠন করতে পারলে চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধেই নিবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে তিনি সরকার গঠন করলেন এবং ঠিকই চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নিলেন। চট্টগ্রামে শুরু হয় উন্নয়নের মহাযজ্ঞ, সৃষ্টি হয় উন্নয়নের অনবদ্য ইতিহাস। এত এত উন্নয়ন এখানে হয়েছে, হচ্ছে তার সবইতো দৃশ্যমান। এখানে না হয় তার সবকটি নাইবা উল্লেখ করলাম। তবে কয়েকটি বৃহৎ প্রকল্পের কথাতো উল্লেখ করতেই হয়।  দেশরত্ম শেখ হাসিনার হাত ধরে চট্টগ্রাম বন্দর পেয়েছে নতুন রূপ, সংযুক্ত হয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি, চালু হয়েছে সিটিএমএস, সংযোজিত হয়েছে নতুন নতুন ইয়ার্ড ও সার্ভিস জেটি, বন্দরের সক্ষমতা বেড়েছে বহুগুন, বেড়েছে রাজস্ব অর্জনের পরিমাণ। পতেঙ্গা এলাকায় ৪টি জেটি নিয়ে চালু হতে যাচ্ছে পিসিটি। পতেঙ্গা, হালিশহর, কাট্টলি অংশের সমুদ্র পাড়ে তৈরি হচ্ছে জোয়ার ভাটার যে কোন  সময়েই মাদার ভেসেল বার্থিং করতে সক্ষমতা সম্পন্ন বে-টার্মিনাল। তাছাড়া মহেশখালীতে হচ্ছে গভীর  সমুদ্র বন্দর নির্মাণের কাজও এগিয়ে চলেছে। ছোট ও মাঝারি আকারের অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন ছাড়াও বাঁশখালীর গন্ডামারা ও মহেশখালীর মাতারবাড়িতে নির্মিত হচ্ছে বৃহৎ আকারের কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার এর সাথে সারা দেশের যোগাযোগ সহজতর করতে কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে দুই টিউব বিশিষ্ট দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘতম সুরঙ্গ সড়ক বঙ্গবন্ধু টানেলএর একটি টিউব ২৬ নভেম্বর ২০২২ ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আশা করা হচ্ছে নতুন বছরের শুরুতেই এর দুইটি টিউব দিয়েই গাড়ি চলাচল শুরু হবে। পতেঙ্গা সিবিচকে আধুনিকরূপে সজ্জিত করে পর্যটনবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। পতেঙ্গা হতে ফৌজদারহাট পর্যন্ত সমুদ্র তীর ধরে নির্মিত হয়েছে মেরিন ড্রাইভ সিটি আউটার রিং রোড। পণ্য পরিবহনের যা চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে সারাদেশের যোগাযোগকে সহজতর করার পাশাপাশি শহর রক্ষা বাঁধ হিসেবে শহরকে রক্ষা করছে সামুদ্রিক জলো”ছাস ও নোনা পানির কুপ্রভাব থেকে। এছাড়াও এ এলাকার বিস্তীর্ণ পরিত্যক্ত ভূমি নিয়ে  দেখা দিয়েছে উন্নয়ন ও সম্ভাবনার হাতছানি। দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারায় হচ্ছে চায়না ইকোনোমিক জোন, মিরশরাই ও ফেনী অংশ নিয়ে হচ্ছে বিশাল এক অর্থনৈতিক অঞ্চল। চান্দগাঁও এ গড়ে তোলা হয়েছে আইটি পার্ক। সমগ্র বৃহত্তর চট্টগ্রাম জুড়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর সুফল পেতে  মাল্টিপল কানেকটিভিটি মজবুত করা হচ্ছে। দোহাজারী হতে রামু, কক্সবাজার হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত রেল লাইনকে সম্প্রসারিত করার কাজ এগিয়ে চলেছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আধুনিক ও আন্তর্জাতিকীকরণ করা হয়েছে। শহরের অভ্যন্তরীণ সড়ক গুলোর উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও প্রশস্ত করা হয়েছে অভাবনীয় মাত্রায়। কাপ্তাই রোডের কুয়াইশ হতে রাঙামাটি রোডের অক্সিজেন, রাঙামাটি রোডের বায়েজিদ থেকে ঢাকা রোডের ফৌজদারহাট পর্যন্ত বাইপাস রোড নির্মাণ করা হয়েছে এবং কর্ণফুলীর তীর ধরে চাক্তাই হতে কালুরঘাট পর্যন্ত রিভার ড্রাইভ রিং রোড কাম বেড়ি বাঁধ শহরকে বাড়তি যানজটের চাপ থেকে মুক্তি দিবে। নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বাস্তবায়িত হ”েছ খাল খনন, সংস্কার ও উদ্ধারে ৬০০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ের মেগা প্রকল্প। গুরুত্বপূর্ণ ২১টি খালের মুখে স্বয়ংক্রিয় ও শক্তিশালী পাম্প সমন্বিত স্লুইস গেট। তৈরি করা হয়েছে কর্ণফুলী শাহ আমানত তৃতীয় সেতু সংযোগ সড়ক হতে বহর্দার হাট হয়ে মুরাদপুর পর্যন্ত মরহুম এম এ মান্নান ফ্লাইওভার এবং বায়েজিদ, মুরাদপুর, জিইসি, ওয়াসা হয়ে লালখান বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটারের অধিক দৈর্ঘ্যরে মরহুম আখতারুজ্জামান বাবু ফ্লাইওভার, এছাড়াও হয়েছে অনেকগুলো ওভারপাস। শাহ আমানত বিমান বন্দর হতে বারিক বিল্ডিং হয়ে লালখান বাজার পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে অনেকটাই। সাংস্কৃতিক উন্নয়নে শহীদ মিনার কমপ্লেক্স কাম সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের সিংহভাগ কাজ ইতিমধ্যেই সুসম্পন্ন হয়েছে। এসকল কাজের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন চট্টগ্রামের প্রতি তাঁর আন্তরিকতা ও ভালোবাসা। বিগত দিনে অন্যরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভুলিয়ে ভোট নিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে সমস্ত অঙ্গীকার ভুলে বঞ্চনা করলেও জাতির জনকের কন্যা তাঁর দেয়া প্রতিশ্রুতির চেয়েও অধিক দিয়েছেন চট্টগ্রামবাসীকে। তাই চট্টগ্রামবাসী এবারও প্রাণের নেত্রী শেখ হাসিনাকে ভোট দিতে মুখিয়ে আছে বলে আমার বিশ্বাস। ৪ডিসেম্বরে পোলোগ্রাউন্ডের জনসমাগম প্রমাণ করবে চট্টগ্রামবাসী জাতির জনকের কন্যাকে ভালোবাসেন এবং তাঁর সাথে আছেন, তাঁকেই বারবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়। চট্টগ্রামের এ জনসভা থেকে চট্টগ্রামবাসী গুজব ও নীলনকশার জনক বিএনপি ও স্বাধীনতা বিরোধী চক্রকে সুস্পষ্ট  বার্তা দিতে চাই আমরা স্বাধীনতার পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে, উন্নয়নের পক্ষে। সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে জনগণ আবারো শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চায় এটি চট্টগ্রামের মানুষ প্রমাণ করে দিবে এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও নৌকার জয়গান চট্টগ্রাম সমগ্র দেশবাসীকে শোনাবে, জাগ্রত করবে-এ শুভ প্রত্যাশা রইল।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় নৌকার জয়, জয়তু শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

লেখক : বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জ্যেষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ এবং মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট