চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করতে চাওয়ায় মেয়েকে খুন, ভণ্ড পীরের বিচার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ নভেম্বর, ২০২২ | ৬:২৯ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামে ফতোয়ার অপব্যাখ্যা দিয়ে ভণ্ড পীর মতিনের হাতে মেয়ে হাফসা খুনের ঘটনার ১০ বছর পর বিচারকাজ শুরু করেছেন আদালত। উচ্চ আদালতে আসামিপক্ষের মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন খারিজ হওয়ায় মতিনের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচার শুরু হলো সোমবার (১৪ নভেম্বর)।

 

সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত ২য় মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আমিরুল ইসলামের আদালতে মামলাটির বিচার শুরু হয়। এ দিন মেয়ে হাফসা হত্যা মামলায় পিতা ভণ্ড পীর মতিনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন পুত্র ও কন্যারা। ২০০৯ সালে ১৯ আগস্ট পাহাড়তলীর গ্রিনভিউ আবাসিকে পীর মতিনের আস্তানায় নিজের পছন্দ করা পাত্রকে বিয়ে করতে চাওয়ায় মেয়ে হাফসাকে দোররা মারেন বাবা মতিন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন চাচা আব্দুস সবুর ও বাবার কথিত প্রেমিকা নার্গিস। হাফসার সঙ্গে তার আরও দুই বোনকে একই অভিযোগে মাথা ন্যাড়া করে দোররা মেরে মারাত্মকভাবে জখম করা হয়। নির্যাতনে হাফসার মৃত্যুর পর রাতের আঁধারে ঘরের মধ্যে জানাযা পড়ে গোরস্থানে কবর দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা নেয়নি থানা।

 

পরে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে নির্যাতিতদের আইনি সহায়তা দেওয়া হয়। এ ঘটনার নির্যাতিতদের পক্ষে তার এক ভাই বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় আদালতে মামলা দায়ের করেন। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী তদন্ত শেষে আদালতে মামলার মূল আসামি ভণ্ডপীর মতিনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন।  মামলায় কথিত পীর মতিন ছাড়াও মতিনের ভাই সবুর, স্ত্রী ডা. শাহিদা বেগম, মতিনের প্রণয়সঙ্গী নার্গিস বেগম এবং ছোট বোন বিনু বেগমকে আসামি করা হয়।

 

পরে ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। কিন্তু ওইদিন আদালতে মামলার প্রধান আসামি ভণ্ড পীর আব্দুল মতিনের পক্ষে উচ্চ আদালতের ফৌজদারি রিভিশন ফাইল করলে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উচ্চ আদালত বিচারিক আদালতের মামলায় স্থগিতাদেশ দেন।

 

আইনজীবী জিয়া হাবিব আহসান জানান, ২০১৯ সালে ১৪ মে উচ্চ আদালতে আসামির ফৌজদারি রিভিশন খারিজ হলে আদালত ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর মামলার বাদি আবু দারদা জবানবন্দি দেন। পরবর্তীতে আজ অন্যান্য সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য দেন। 

 

পূর্বকোণ/রাজীব/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট