চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

কর আদায়ের লক্ষ্য ৬ হাজার কোটি

মিজানুর রহমান

৩১ অক্টোবর, ২০২২ | ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ

করোনা মহামারীর পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই বড় অঙ্কের আয়কর আদায়ের টার্গেট নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। আগামী নভেম্বরের মধ্যেই চট্টগ্রামের চার কর অঞ্চল থেকে ৬ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা আয়কর আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে টার্গেট অনুযায়ী কর আদায় করতে আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান- চট্টগ্রামের চারটি কর অঞ্চলের অধীনে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬৩ জন। এরমধ্যে সেপ্টম্বর পর্যন্ত চালু নথির সংখ্যা ৩ লাখ ৭২ হাজার ৮০২টি। এসব ই-টিআইএনধারীর কাছ থেকেই চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ৬ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা আয়কর আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

 

কর অঞ্চল-১ এর অধীনে ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ২ লাখ ৫৫ হাজার ৬৩১ জন। এরমধ্যে চালু নথির সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার ২৭২টি। কর আদায়ের লক্ষ্য ৩ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা। কর অঞ্চল-২ এর অধীনে ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯৩৬ জন। এরমধ্যে সেপ্টম্বর পর্যন্ত চালু নথির সংখ্যা ৭৮ হাজার ৭৯০টি। কর আদায়ের লক্ষ্য ১ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। এছাড়া কর অঞ্চল-৩ এর অধীনে ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৩৮ জন। এরমধ্যে সেপ্টম্বর পর্যন্ত চালু নথির সংখ্যা ৭২ হাজার ৭৪২টি। কর আদায়ের লক্ষ্য ১ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। অঞ্চল-৪ এর অধীনে ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫৮ জন। এরমধ্যে সেপ্টম্বর পর্যন্ত চালু নথির সংখ্যা ৯০ হাজার ৯৯৮টি। কর আদায়ের লক্ষ্য ৪৯৬ কোটি টাকা।

 

আয় কত হলে দিতে হবে কর : ই-টিআইএনধারীর মধ্যে সাধারণ করদাতা ক্যাটাগরিতে করযোগ্য আয় ৩ লাখ টাকার বেশি হলে কর দিতে হবে। তৃতীয় লিঙ্গ, নারী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী করদাতাদের করযোগ্য আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকার বেশি হলে কর দিতে হবে। প্রতিবন্ধী করদাতাদের বার্ষিক আয় সাড়ে ৪ লাখ টাকা ও গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতাদের আয় পৌনে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত।

 

তবে ই-টিআইএনধারীর মধ্যে কারও করযোগ্য আয় না থাকলেও তাকে রিটার্ন জমা দিতে হবে। অর্থাৎ প্রত্যেক ই-টিআইএনধারীর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী রিটার্ন জমা দিয়ে নিজ কর অঞ্চল থেকে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র না নিলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ইউটিলিটি সংযোগ, ক্রেডিট কার্ড পাওয়া থেকে শুরু করে ৩৯টি পরিষেবা মিলবে না।

 

৩০ নভেম্বর পর্যন্ত জরিমানা ছাড়াই রিটার্ন দাখিল করতে পারেন করদাতারা। তবে যৌক্তিক কারণে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন দাখিল না করতে পারলে সংশ্লিষ্ট উপ-কর কমিশনারের কাছে আবেদন করে সময় নিতে হয়। আবেদন না করলে তাকে প্রদেয় করের ১০% বা ১০০০ টাকার মধ্যে যা বেশি ওই পরিমাণ অর্থ এবং প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা করে জরিমানা দিতে হয়।

 

নভেম্বরজুড়ে সেবা বিশেষ বুথে : আয়কর তথ্য-সেবা মাস উপলক্ষ্যে নভেম্বরজুড়ে চট্টগ্রামের চার কর অঞ্চল কার্যালয়ে বিশেষ সেবা বুথ বসিয়ে করদাতাদের সেবা দেওয়া হবে। এসব বুথে রিটার্ন গ্রহণ, প্রাপ্তি স্বীকারপত্র প্রদান, ই-টিআইএন/ই-রিটার্ন/এ-চালান সংক্রান্ত সেবা প্রদান করা হবে। এছাড়া আয়কর রিটার্ন ফর্ম, চালান ও সিটিজেন চার্টার সরবরাহের পাশাপাশি আয়কর সম্পর্কিত পরামর্শ প্রদান করা হবে।

 

চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-২ এর কর কমিশনার সামিয়া আখতার পূর্বকোণকে বলেন, সেবা মাস মানে হচ্ছে আমরা যে কোনোভাবে আমাদের প্রত্যেক করদাতার কাছে এই ম্যাসেজটা পাঠাতে চাই- যে আমরা তাদের সব রকম সেবা দিতে ও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। আপনারা আসুন। নির্ঝঞ্ঝাটে রিটার্ন জমা দিন। আয়কর প্রদান করুন।

 

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট