চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

চসিককে পচা চামড়া অপসারণ করতে হবে এটা কোনদিন ভাবিনি : সিটি মেয়র নাছির

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ আগস্ট, ২০১৯ | ৪:২৫ অপরাহ্ণ

কোরবানির পরদিন থেকে আজ বুধবার (১৪ আগস্ট) পর্যন্ত চসিকের পরিচ্ছন্নতা বিভাগ আতুরার ডিপো-হামজারবাগ এলাকা থেকে এক লাখ, বহদ্দারহাট থেকে ৯ হাজার ও আগ্রাবাদ থেকে ১২ হাজারের বেশি পচা চামড়া নগরীর দুইটি আবর্জনার ভাগাড়ে ফেলেছে বলে জানিয়েছে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

এ ঘটনাকে অত্যন্ত দুঃখজনক ও নজিরবিহীন আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, চামড়ার সরকার নির্ধারিত দাম না পাওয়ার পেছনে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠিত চক্রের দুরভিসন্ধি আছে কি না খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ ঘটনায় কোরবানিদাতারা হতাশ, মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব, দেশ বঞ্চিত হয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে। তিনি আরো বলেন, চামড়া পচবে, সেই চামড়া চসিককে অপসারণ করতে হবে এ ধরনের কোনো ভাবনাই আমাদের কোনো কালে ছিলো না।

এদিকে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের হাজার হাজার পচা চামড়া হালিশহর আনন্দবাজার ও আরেফিন নগরের আবর্জনার ভাগাড়ে ফেলতে হয়েছে। কারণ পুঁজি হারিয়ে মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা পচা চামড়ার স্তূপ রেখে ঘরে ফিরেছেন।

ঈদের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুর ১২টা থেকে রাত আড়াইটা পর্যন্ত ২০০ শ্রমিক ও ৮টি পে-লোডারের সাহায্যে ৩২টি ট্রাকে ৯০ ট্রিপে এক লাখ পঁচা চামড়া অপসারণ করা হয়।

নগরীর কাঁচা চামড়ার প্রধান বাজার হামজারবাগ, আতুরার ডিপোসহ বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পচা চামড়াগুলো সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগের প্রধান শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী যিশু।

তিনি জানান, এটি একেবারে অপ্রত্যাশিত কাজ। চাকরি জীবনে এমনটি আর দেখিনি। বড় বড় গরুর সুন্দর সুন্দর চামড়া পচে-গলে গেছে। যত রাত হচ্ছিলো তত দুর্গন্ধ বাড়ছিলো। আমরা এক হাজার কেজি ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়েছি পচা চামড়া অপসারণের জায়গাগুলোতে।

৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী জানান, চার বছর সফলতার সঙ্গে কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেছি। এতদিন আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিলো-আড়তদারেরা চামড়ায় লবণ দেয়ার পর সড়কে ফেলা পশুর কান, লেজ, পচা মাংস এসব বর্জ্য দ্রুত অপসারণ। এবার নতুন সমস্যা পচা চামড়া অপসারণ। মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের নির্দেশনায় এ সমস্যাও দ্রুততার সঙ্গে সমাধান করতে সক্ষম হয়েছি আমরা।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম জেলার সবচেয়ে বড় কাঁচা চামড়ার আড়ত হামজারবাগ-আতুরার ডিপো। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এখানে ট্রাকে ট্রাকে কাঁচা চামড়া নিয়ে আসেন মৌসুমী ব্যাপারি আর বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানার লোকজন। কিন্তু এবার চামড়ার দামে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে।

প্রথমে ৩০০ টাকায় বড় চামড়া কিনছিলেন। এরপর ২০০-১০০ টাকায় নেমে আসে। তারপর ক্রেতার দেখা মেলেনি বাজারে। চামড়া নিয়ে যেসব ট্রাক এসেছিল অনেকে ভাড়াটাও তুলতে পারেনি চামড়া বেচে। পরে একপর্যায়ে চামড়ার স্তুপ, ট্রাকভর্তি চামড়া ফেলেই পালিয়ে যান তারা।

তিনি আরো বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জানলাম, চট্টগ্রামের আড়তদারেরা ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে গত বছরের যে টাকা পাবে তার সিকি ভাগও দেয়নি। এর ফলে তারা পর্যাপ্ত লবণ, শ্রমিক জোগাড় করতে পারেনি। দাম কম থাকায় ধার-দেনা করে কিছু চামড়া সংগ্রহ করে তারা বাজার থেকে সরে পড়ে। যদি পর্যাপ্ত লবণ মজুদ থাকতো তবে বাকিতে হলেও চামড়া নিতে পারতো।’

 

 

পূর্বকোণ/ময়মী

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট