চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

অপসারণে পরিচ্ছন্নকর্মীদের নির্ঘুম রাত

চট্টগ্রামে অবিক্রিত হাজার হাজার কোরবানির চামড়া পরিণত হলো আবর্জনায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ আগস্ট, ২০১৯ | ১০:০১ অপরাহ্ণ

কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির উদ্দেশ্যে নগরীর আতুরার ডিপো এলাকায় হাজির হন চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলার বহু মৌসুমী ব্যবসায়ী। কিন্তু ৩শ থেকে ৪শ টাকা দিয়ে সংগ্রহ করা প্রতি পিস চামড়া আড়তদারদের কাছে ৫০ টাকায়ও বিক্রি করতে পারেননি মৌসুমী কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা। এমনকি কম মূল্যেও ফড়িয়া ও ট্যানারি মালিকরা কিনে নিতে রাজি হননি এসব চামড়া। এ কারণে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে হাজার হাজার পিস চামড়া রাস্তার পাশে ফেলে চলে যান ব্যবসায়ীরা।ফেলে যাওয়া চামড়া পঁচে সৃষ্টি হয় উৎকট দুর্গন্ধের। বহদ্দারহাট থেকে মুরাদপুর এবং অক্সিজেন থেকে আতুরার ডিপো এলাকা পর্যন্ত হাটহাজারী সড়কের দুইপাশে আজ মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকেলেও এভাবেই পড়ে ছিল বহু চামড়ার স্তুপ। পরিত্যক্ত চামড়া অপসারণ কাজে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের। কোরবানির চামড়া নিয়ে এমন ঘটনা নজিরবিহীন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিকাল ৫টা থেকে আতুরার ডিপো এলাকায় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা বুলডোজারের সাহয্যে এসব চামড়া ট্রাকে তুলে ডাম্পিংয়ের জন্য নিয়ে যান বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। পটিয়া থেকে ৩শ চামড়া নিয়ে এসেছিলেন মৌসুমী ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর। তিনি জানান, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় গড়ে ২শ টাকা দরে চামড়া কিনে আড়তে এনেছিলাম বিক্রি করতে। কিন্তু আড়তদাররা চামড়া নিতে চান নি। তাই বিক্রি করতে পারিনি। চামড়ায় পচন ধরাতে ফেলে রেখে যাচ্ছি।

রাত ১০টায় যোগাযোগ করা হলে সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী কোরবানির পশুর চামড়া ময়লা হিসেবে ডাম্প করার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, বিকাল ৫টার পর থেকে চট্টগ্রামের আতুরার ডিপুসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কোরবানির চামড়া বর্জ্য হিসেবে অপসারণ শুরু করি। ৫০ হাজারেরও বেশি চামড়া ডাম্পিং করেছি। আরও অনেক চামড়া এখনও পড়ে আছে। বেশিরভাগই পচে যাওয়া চামড়া বলে জানান তিনি।

কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতি, চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল কাদের পর্যাপ্ত চামড়া ক্রয় করতে না পারার কথা স্বীকার করে জানান, নানা সীমাবদ্ধতার কারণে এবার চাহিদামতো চামড়া কেনা যায়নি। এখন ট্যানারির সংখ্যা কম। আবার একইসাথে ট্যানারি মালিকরা পুঁজিহারা। ঢাকার ট্যানারি মালিকরা গত বছরের সরবরাহ করা প্রায় দেড়শ কোটি টাকা এখনো দেয় নি। তাই এবার চামড়ার ব্যবসা মন্দা।

পূর্বকোণ/রাশেদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট