চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চট্টগ্রামে স্বর্ণের বার চুরি, ২ দিনের ব্যবধানে আরও একজন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ অক্টোবর, ২০২২ | ৭:০৩ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম নগরীর হাজারি গলি থেকে ব্যবসায়ীর স্বর্ণের বার চুরির ঘটনায় দুই দিনের ব্যবধানে  শুভ চৌধুরী (২৬) নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে চুরি করা ৬টি স্বর্ণের বারও উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত ১০ অক্টোবর একই এলাকা থেকে ইমন দে নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

গ্রেপ্তার শুভ চৌধুরী রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তি নিকেতন মধ্যমপাড়ার সনজিত চৌধুরীর ছেলে। শুভ বর্তমানে হাজারি গলিতে পাক্তার হাউজ নামে স্বর্ণের দোকানের মালিক ।

মঙ্গলবার (১১ অেক্টোবর) বিকাল সোয়া ৫টায় হাজারি গলির একটি স্বর্ণের দোকান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) ১৬৪ ধারায় তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার পর আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির। তিনি বলেন, হাজারি গলিতে অবস্থিত বিডি জুয়েলারি নামে একটি স্বর্ণের দোকানে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতো ইমন দে (২৬) নামে এক যুবক। গত (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিডি জুয়েলারির স্বত্ত্বাধিকারী ওয়াহিদুল আলমের ব্যবসায়িক পার্টনার সন্তোষ দাশের কাছ থেকে ৬টি স্বর্ণের বার ও (যার ওজন ৬০ ভরি, মূল্য ৪৫ লাখ টাকা)  একটি আইফোন (মূল্য ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা) নিতে পাঠালে সে গ্রহণ করেছে বলে মালিককে অবহিত করে। এদিন মালিকের আদেশে সন্ধ্যায় আবার ৪০ হাজার টাকা শুল্ক পরিশোধ করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আরও ২টি স্বর্ণের বার নিয়ে আসে ইমন। মালিক মোট ৮টি স্বর্ণের বার আছে কি না তা জানতে ফোন করলে সে ৬টি স্বর্ণের বার খুঁজে পাচ্ছে না বলে জানায়। তাৎক্ষণিক মালিক কারখানার কারিগরদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা কিছু জানেনা বলে।

 

একপর্যায়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ইমন তার কাছে ৬টি স্বর্ণের বার আছে বলে স্বীকার করে। পরে মালিকপক্ষ ব্যবসায়ী সমিতিকে বিষয়টি অবহিত করেন। পরে এক বৈঠকে ইমন ৬টি স্বর্ণের বারের টাকা অথবা স্বর্ণের বার ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। পরদিন ৯ অক্টোবর ইমন বিডি জুয়েলারির স্বত্ত্বাধিকারী ওয়াহিদুল আলমকে ৫ লাখ টাকা প্রদান করে এবং  পরদিন ৪টি স্বর্ণের বার অথবা টাকা ফেরত দেবে বলে জানায়। ১০ অক্টোবর ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করে। ওয়াহিদুল আলম বাকি টাকা কবে দেবে জানতে চাইলে তাকে অপেক্ষা করতে বলে। পরে টাকা ফেরত না দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এদিন রাতে ইমনকে হাজারি গলি থেকে আটক করে পুলিশে খবর দেয় ওয়াহিদুল। পুলিশ গিয়ে ঘটনার বিবরণ শুনে ইমনকে হেফাজতে নেয়। এ ঘটনায় ওয়াহিদুল আলম মামলা দায়ের করলে ইমনকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

 

পরে পুলিশ ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে শুভ নামে এক যুবকের কাছে এসব স্বর্ণের বার আছে বলে স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদের সুত্র ধরে গতকাল বিকেল সোয়া ৫টায় হাজারি গলির পাক্তার হাউজ নামে দোকানের মালিক শুভ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ৬টি স্বর্ণের বারও উদ্ধার করা হয়। আজ বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) তার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার পর আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

 

তিনি আরও বলেন, ইমন ও শুভ একই এলাকার বাসিন্দা। তারা দুজনে স্বর্ণের বার চুরির জন্য স্বর্ণের বারগুলো খুঁজে না পাওয়ার নাটক সাজায়। ইমন ওয়াহিদুল আলমের দোকানে কর্মরত থেকে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে তার বিশ্বাস অর্জন করে। এই বিশ্বাসের সুযোগে ওয়াহিদুল আলম তাকে তার ব্যবসায়িক পার্টনারের কাছে থেকে ৬টি স্বর্ণের বারও মোবাইল আনতে পাঠায়। কিন্তু ইমন স্বর্ণের বারগুলো নিজের কাছে রেখে মোবাইল ফোনটি কারখানার টেবিলে রেখে চলে যায়। পরে স্বর্ণের বারগুলো কারখানার ভিতরই হারিয়ে গেছে বলে মিথ্যে নাটক সাজায়।

 

পূর্বকোণ/পিআর/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট