চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মরিয়ম এখন হাঁটে, একটু একটু কথা বলে-ঝাঁপিয়ে পড়ে কোলে

মরিয়ম জাহান মুন্নী

৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ | ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ

‘মরিয়ম’ নাম ধরে ডাকতেই মাথা ঘুরিয়ে সাড়া দেয়। মুখে উচ্চারণ করার চেষ্টা করে আ……পা। ওমনি কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে। হাত বাড়িয়ে কোলে তুলে না নিয়ে যেন উপায় নেই। এভাবে চেনা-অচেনা যে কোনো মানুষের কোলে অকপটে চলে আসে মরিয়ম। এই সেই মরিয়ম আক্তার, যাকে দুই বছর আগে নগরীর নিউ মার্কেট এলাকার ডাস্টবিনের পাশ থেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। তখন তার বয়স ছিল আনুমানিক ছয় মাস। অসুস্থ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে এ অসুস্থ শিশুর স্থান হয়েছে নগরীর ফিরিঙ্গী বাজার সামাজিক সংগঠন ‘উপলব্ধি’র কন্যাদের রাজ্যে। এখন সে এ রাজ্যেরই বাসিন্দা। বাবা- মাবিহীন অসুস্থ মরিয়মের বাঁচার খুব একটা আশা ছিল না।

তবে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা শেখ ইজাবুর রহমানের সহযোগিতায় ও এ রাজ্যের ‘পরী’দের আদরে ঠিক যেন নতুন জীবন পেয়েছে সে। মরিয়মের জন্মগতভাবে পায়ে সমস্যা ছিল। তাকে দেখে মনে হত সে কখনোই হাঁটতে পারবে না। মরিয়মকে কুড়িয়ে পাওয়া সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন হয়তো এ কারণেই তাকে ফেলে দেয়া হয়েছে।

কিন্তু বর্তমানে সেই ছোট্ট শিশুটির আড়াই বছর চলছে। সে অন্য স্বাভাবিক শিশুর মতই হাঁটে, খেলে ও কথা বলতে পারে। ‘পরী’দের এ রাজ্যে শুধু মরিয়মই নয়, বর্তমানে আড়াই বছর বয়সের পিউ আক্তার শিলাও আছে। দু’বছর আগে তাকেও অসুস্থ অবস্থায় জিইসি মোড় এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।

আলাপকালে শেখ ইজাবুর রহমান বলেন, আমরা পিউকে জিইসি মোড় এলাকা থেকে উদ্ধার করি পুলিশের মাধ্যমে। দেড় বছর বয়সের ঘুমন্ত এক শিশুকে কোলে নিয়ে প্রতিদিন এক বয়স্ক লোক ভিক্ষা করতেন। প্রতিদিন আমি সেই পথে যাতায়াত করতাম। তাকে দেখে আমার সন্দেহ হতো। একদিন তাকে জেরা করি। লোকটি শিশুটির নানা পরিচয় দেন। তখন শিশুটি খুব অসুস্থ ছিল।

এমন সময় পুলিশের সাহায্যে শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। তখন থেকেই এখানে আছে। এখানে যখন শিশুটিকে আনা হয় সে টানা ৫ মাস দিনরাত শুধু ঘুমাতো। ডাক্তার জানায় তাকে নাকি কোনো একটা ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হত। এখন সে ভালোই আছে।

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট