চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অভিযুক্ত ‍ছাত্রলীগের দুই কর্মী

চবিতে সাংবাদিককে মারধর, ‘ছাত্রলীগ না করলে হলে থাকা যাবে না’ বলেই হুমকি

চবি সংবাদদাতা

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ | ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ

নেতার জন্মদিন পালন করতে না যাওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) রেদওয়ান আহমদ নামে কর্মরত এক সাংবাদিককে মারধর করেছে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী। এ সময় মারধরকারীরা ‘ছাত্রলীগ না করলে হলে থাকা যাবে না’ বলে ওই সাংবাদিককে হুমকি দেন। মারধরের শিকার ওই সাংবাদিক ঢাকা মেইল ও দৈনিক নয়া শতাব্দীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।

 

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এএফ রহমান হলের ২১২ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

 

এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের আরশিল আজিম নিলয়, একই সেশনের নাট্যকলা বিভাগের আবু বকর সিদ্দিক এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শোয়েব আতিক। এরা দু’জনই শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. ইলিয়াসের অনুসারী। সম্প্রতি ইলিয়াসকে অবাঞ্ছিত করে ক্যাম্পাসে অবরোধ করে আন্দোলন করে খোদ বিজয় গ্রুপ।

 

ভুক্তভোগী রেদওয়ান আহমদ বলেন, রাতে এক ছাত্রলীগ কর্মীর জন্মদিন পালনের জন্য আমার রুমে এসে ডাক দিয়েছিল ২০১৮-১৯ সেশনের আরশিল আজিম নিলয়। আমি যখন সাংবাদিক পরিচয় দিলাম, তারা আমাকে বললো- ছাত্রলীগ না করলে হলে থাকা যাবে না। এরপর আরশিল আজিম নিলয় তার সঙ্গে থাকা শোয়েব আতিককে মারধর করার নির্দেশ দেন। শোয়েব আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করলে আমি সঙ্গে সঙ্গে বিজয়গ্রুপের নেতা আল আমিন ভাইকে কল দিয়ে বিষয়টি জানাই। তিনি তাদের নিষেধ করার পরও সে আমাকে আরও দুই দফায় মারধর করে। তবে আবু বকর ভাই শুধু ঘটনাস্থলে ছিলেন, তিনি আমাকে মারধর করেননি।’

এ ঘটনায় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক।

 

এ বিষয়ে জানতে শোয়েব আতিক ও অভিযুক্ত আরশিল আজিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো সাড়া মেলেনি।

 

বিজয় গ্রুপের নেতা আল আমিন বলেন, সাংবাদিকদের গায়ে হাত তোলা আমরা কখনোই সমর্থন করি না। ঘটনার সময় রেদওয়ান আমাকে কল দিয়েছিল। আমি নিষেধ করার পরও তারা ওর গায়ে হাত তুলেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।

 

সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা এ বিষয়ে কোনও ছাড় দেবো না। কিছুদিন আগেও সাংবাদিকদের সঙ্গে ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের অনুসারীরা ঝামেলা করেছিল। আমরা অভিযোগ দেওয়ার পরও প্রশাসন শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া ছাড়া আর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এবার যদি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।

 

ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছি আমরা। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং নিয়মানুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এর আগে গত ১৯ জুন সাংবাদিকদের হুমকি ও হেনস্তা করার অভিযোগ ওঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হলে থাকা বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে।

পূর্বকোণ/পিআর/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট