চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

ফাঁকা হচ্ছে নগরী

ঈদযাত্রা পথের সঙ্গী দুর্ভোগ আর ঝুঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ আগস্ট, ২০১৯ | ২:০৪ পূর্বাহ্ণ

ঈদ আনন্দ পরিবারের সাথে উপভোগ করার জন্য চট্টগ্রাম ছাড়ছে মানুষ। নাড়ির টানে কেউ পাড়ি জমিয়েছে ট্রেনে আর কেউ বা বাসে। তবে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে এসব মানুষরা বাড়ি ফিরছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। পর্যাপ্ত পরিবহনের অভাবে এমন ঝুঁকি নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানালেন যাত্রীরা। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ও বাস স্টেশন ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, চাঁদপুরগামী রেলওয়ের স্পেশাল ট্রেনের প্রতিটি বগিতে বাড়িমুখী মানুষের ভিড়। সব বগির সিট পরিপূর্ণ হয়ে গেলেও ট্রেনে অনেকেই উঠেছেন দাঁড়িয়ে। একজনের জায়গায় দাঁড়াচ্ছেন তিনজন। আবার অনেকে ভিতরে দাঁড়ানোর সুযোগ না পেয়ে ট্রেনের ছাদে ও বাহিরে ঝুলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাচ্ছেন নাড়ির টানে।
ছাদে উঠতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন নারীরা। তারপরও স্বজনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নগর ছাড়ছেন সপরিবার নিয়ে। ট্রেনের ছাদে উঠতে গিয়ে নিচে পড়ে যান বিবি মরিয়ম নামের শরিয়তপুরের এক বাসিন্দা। তিনি নগরীর একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত আছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেন ছাদে উঠছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাড়ি তো যেতে হবে। দুইদিন পরই ঈদ। এখন যদি বাড়ি যেতে না পারি তাহলে তো আর বাড়ি যাওয়াই হবে না। তাই যেমন করেই হোক, যেভাবে হোক বাড়ি যেতে হবে। না হলে তো আর বন্ধ পাবো না।
চাঁদপুরগামী ট্রেনে মানুষের এত ভিড়ের কারণ জানতে চাইলে রেলওয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, চাঁদপুর থেকে শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চল যাওয়া অনেকটা সহজ। যার কারণে অনেকে চাঁদপুর হয়ে নিজ গন্তব্যে যাচ্ছেন। এ ট্রেন মিস হলে তাদের বাড়ি যেতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হবে। কেন না, চট্টগ্রাম থেকে কোন ভাবে এরা চাঁদপুর পর্যন্ত যেতে পারলে লঞ্চ, ট্রলার কিংবা ফেরি ব্যবহার করে তারা পৌছে যাবে নিজ গন্তব্যে। এ কারণে ঝুঁকি জেনেও তারা ট্রেনে পাড়ি জমিয়েছে।
এদিকে স্টেশনে রেলওয়ের নিরাপত্তায় নিযোজিত থাকা নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা শত বাধা দিলেও তাদের ছাদ থেকে নামাতে পারেনি বলে জানান রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তা।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্ধারিত সময়ে চট্টগ্রাম থেকে সবগুলো ট্রেন ছেড়ে গেছে। কোন ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ছাড়াই যাত্রীরা নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে স্টেশন ছেড়েছে। কোন ধরনের শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনাও ঘটেনি। এছাড়া স্টেশনজুড়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী সর্বাত্মক ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এদিকে নগরীর বিআরটিসি, গরিব উল্লাহ শাহ মাজার ও অলংকার মোড় ঘুরে দেখা গেছে, আন্ত:জেলা বাসগুলোতে করে দেশের বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছাড়ছে মানুষ। এতে বাসেও ব্যাপক ভিড় ছিল যাত্রীদের। যাত্রীদের চাপ এতটাই বেশি ছিল যে চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালী, ফেনী- লক্ষীপুরের উদ্দেশ্যে যে বাসগুলো ছেড়ে গেছে তার বেশিরভাগেরই ছাদে বসে যাত্রা করেছে যাত্রীরা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট