চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাড়িতে টিভি নেই, অন্যের মোবাইলে মেয়ের খেলা দেখেছিলেন রুপনার মা

নিজস্ব সংবাদদাতা

২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ | ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ

‘বাড়িতে টিভি নেই, অন্যের মোবাইলে মেয়ের খেলা দেখেছিলেন মা। তার মেয়ে ছোটবেলা থেকে বেশি মনোযোগী ছিলেন খেলাধুলায়। শৈশবকালেও শরীরে জ্বর নিয়ে খেলেছিল ফুটবল। মেয়ে হয়েও মেয়ে বন্ধুদের পছন্দ হতো না, পছন্দ হিসেবে বেশে নিতো খেলোয়ার ছেলে বন্ধু। জন্মের আগেই হারিয়েছেন বাবাকে, বড় হয়েছেন মায়ের কোলে। দুঃখ কষ্টে দিন কাটানো অভাবের সংসারে দুই ছেলে দুই মেয়েসহ ভাঙা ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে মায়ের বসবাস। ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট রুপনা চাকমা। একদিন নানিয়ারচরে খেলতে গিয়ে ছিলেন ফুটবল। খেলা পছন্দ হয়ে বীরসেন চাকমা ও শান্তি মনি চাকমা তাকে ঘাগড়াতে নিয়ে যায়।

মায়ের বুক খালি হলেও মা ভাই বোনদের ছেড়ে ঘাগড়াতে কেটে যায় শৈশব জীবন। সেখান থেকেই রুপনার জীবনের উন্নতির সূচনা ঘটে’ নারী সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের শ্রেষ্ঠ গোলরক্ষক রুপনা চাকমার মা কালা সোনা চাকমা এসব বর্ণনা দিয়েছেন।

রুপনার গ্রামের বাড়িতে যেতে আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে যেতে হয়। তিনি হাজাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াকালীন একদিন বিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে নানিয়ারচর উপজেলা সদরে ফুটবল টুর্নামেন্ট প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। রুপার খেলা দেখে মন কেড়ে নেয় শিক্ষক বীরসেন চাকমার। তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় ঘাগড়া এলাকায় নিয়ে যান বীরসেন চাকমা ও শান্তি মনি চাকমা। অভাবের সংসারে মেয়ের ভরনপোষণ করা মায়ের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ায় নিজের ঘরে আশ্রয় দিয়ে সন্তানের মতো বড় করে তোলেন বীরসেন ও শান্তি মনি। রুপনাকে ফুটবল খেলায় আগ্রহী দেখে মায়ের অনুমতি নিয়ে দায়িত্বভার নেন দুইজনেই। পাশাপাশি ঘাগড়া স্কুল মাঠে গোলরক্ষকের প্রশিক্ষণ দেন তারা।

রুপনা চাকমার মা কালা সোনা চাকমা বলেন, আমি খুবই খুশি হয়েছি। গরীব ঘরের মেয়ে, তাও বাবা হারা মেয়ে আমার। আমার মেয়ে আরো অনেক দূর এগিয়ে যাক সবার কাছ থেকে আশীর্বাদ কামনা করছি।

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট