চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন জব্দের মামলায় ২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ | ২:৩০ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে বন্দরে কোকেন জব্দের ঘটনায় চোরাচালান ও মাদক আইনে দায়ের করা দুই মামলায় আদালতে আরও ২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আদালত আগামী ২৬ অক্টোবর ধার্য করেছেন।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়ার আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। পরে আদালত ২৫ অক্টোবর পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘কোকেন জব্দের ঘটনায় চোরাচালান ও মাদক আইনে দায়ের হওয়া দুটি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল আজ। দুই মামলাতেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উপ-কমিশনার মুকিতুল হাসান (তৎকালীন সহকারী কমিশনার, কাস্টম হাউজ, চট্টগ্রাম) সাক্ষী দিয়েছেন। তিনি দুটি জব্দ তালিকার সাক্ষী। উনিসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার উপস্থিতিতে কনটেইনারে রক্ষিত ড্রামের ভেতর কোকেন মিশ্রিত সূর্যমুখী তেল রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য আলামত হিসেবে সংগ্ৰহ করা হয়।’

এছাড়া আজ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী টার্মিনাল ম্যানেজার রাজীব চৌধুরী (তৎকালীন টার্মিনাল অফিসার, বন্দর কর্তৃপক্ষ) আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন। তিনি বন্দরে জাহাজ আসা এবং জাহাজ থেকে এই কনটেইনার-সহ অন্যান্য কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে নামানোর বিষয়ে সাক্ষ্য দেন।

পিপি আরও বলেন, ‘মাদক মামলায় এখন পর্যন্ত ২৮ জন ও চোরাচালান মামলায় সাত জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।’

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটরকে সহযোগিতা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আবু জাফর, অ্যাডভোকেট সাব্বির আহমেদ শাকিল ও অ্যাডভোকেট মোহা. সাহাব উদ্দিন।

মামলার আসামিরা হলেন— চট্টগ্রামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ, তার ভাই মোস্তাক আহম্মদ, খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল, মোস্তফা কামাল, আইটি বিশেষজ্ঞ মেহেদী আলম, আতিকুর রহমান, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) এ কে এম আজাদ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া এবং সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম।

২০১৫ সালের ৭ জুন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনার আটকের পর সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর। পরে আদালতের নির্দেশে কনটেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ঢাকার বিসিএসআইআর ও বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষায় এতে তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৭ জুন বন্দর থানায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও তার ভাই গোলাম মোস্তফা সোহেলকে আসামি করে মাদক আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। এই মামলায় ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর এজাহারভুক্ত আসামি নূর মোহাম্মদকে বাদ দিয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (দক্ষিণ) মো. কামরুজ্জামান।

একই বছর ৭ ডিসেম্বর অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানি হয়। প্রধান আসামিকে বাদ দেওয়ায় ওই সময় অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেননি আদালত। আদালত অভিযোগপত্র প্রত্যাখ্যান করে তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য র‌্যাব-৭ কে দায়িত্ব দেন। এরপর আদালত ওই মামলায় চোরাচালানের ধারা সংযুক্তির নির্দেশ দেন। ২০১৭ সালের ২ এপ্রিল মাদক আইনের মামলায় নূর মোহাম্মদকে অভিযুক্ত করে চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন র‌্যাব কর্মকর্তা তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী।

পূর্বকোণ/পিআর/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট