চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

তুমব্রু সীমান্তের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র উখিয়ায় স্থানান্তর

নূর হোসেন মামুন

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ | ১২:১৯ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের নাইক্ষ্যাংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিতে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র উখিয়ায় পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘুনধুম এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিবে কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে এলাকায় মাকিং করছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ এবং বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবরীজি।

চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ পূর্বকোণকে বলেন, বান্দরবান জেলা প্রশাসকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তটি হঠাৎ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জানাতে ওই এলাকায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে মাইকিং করা হচ্ছে।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবরীজি বলেন, আপাতত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে এলাকায় জানানো হচ্ছে। এছাড়া আগামীকাল সকালেও ওই এলাকায় মাইকিং করা হবে। পূ্র্বের কেন্দ্র থেকে গাড়িযোগে শিক্ষার্থীদের উখিয়ায় স্থান্তরিত নতুন কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

আজ শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৮ টায় ৩৪ নম্বর পিলারের কাছে কোনার পাড়ার জিরো লাইনের রোহিঙ্গা শিবিরে চারটি মর্টার শেল এসে পড়ে। এগুলোর মধ‍্যে একটি বিস্ফোরিত হয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১৭ বছরের কিশোর মোহাম্মদ ইকবাল নিহত হয়। এছাড়া গোলার আঘাতে আহত হয় পাঁচ জন।

আহত রোহিঙ্গারা হলেন- তুমব্রু কোনার পাড়া জিরো লাইন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সেলিম উল্লাহ’র মেয়ে সাদিয়া জান্নাত (১০), সেলিম উল্লাহ’র স্ত্রী সাবেকুন নাহার, ছৈয়দ করিমের ছেলে নবী হোসেন (২২), করিমের ছেলে ভুলু (৪৪) ও মোহাম্মদ আনাছ (১২)।

এদিকে এ ঘটনার পর আতঙ্কে রোহিঙ্গা শিবিরের রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছে। আতঙ্কে বন্ধ করে দেয়া হয় তুমব্রু বাজারের দোকানপাট। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাতে মায়ানমারের সেনাবাহিনী বিমান থেকে মর্টার হামলা চালায়।

জিরো লাইনের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সরদার (মাঝি) দিল মোহাম্মদ জানিয়েছেন, দুপুরে মাইন্ড বিস্ফোরণে সীমান্তে এক যুবক আহত হওয়ার পর রাত আটটার দিকে ৩৪ নম্বর পিলারের কাছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি গোলা এসে পড়ে। পরে আরো তিনটি গোলা সেখানে পড়ে। এদের মধ্যে একটি বিস্ফোরিত হয়ে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়।

ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, কদিন শান্ত থাকার পর হঠাৎ করে শুক্রবার রাতে মায়ানমারের সেনাবাহিনী বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ও জিরো লাইনে বেশ কয়েকটি গোলা নিক্ষেপ করে। এছাড়া গুলিবর্ষণের শব্দ ব্যাপকভাবে শোনা যাচ্ছে। সীমান্তে বসবাসকারী লোকজন ও রোহিঙ্গারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।

এরআগে দুপুর দেড়টার দিকে সীমান্তের ৩৫ নম্বর পিলারের কাছে জিরো লাইনে গরু আনতে গেলে তুমব্রু হেডম‍্যান পাড়ার যুবক উনুসাই তঞ্চঙ্গ‍্যা (২২) মাইন বিস্ফোরণে তার পা হারায়। বিস্ফোরণে একটি গরুও সেখানে মারা যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজার হাসপাতাল, পরে অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস জানিয়েছেন, সীমান্ত পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার পর সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বিজিবি।

পূর্বকোণ/মিনার/ইমরান/মামুন

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট