চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কাউন্সিলরের ‘টোকেনবাজি’ থেকে মুক্তি মিলছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ আগস্ট, ২০২২ | ১২:০৮ অপরাহ্ণ

নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে বোয়ালখালীর গোমদণ্ডী উপজেলার সদরে সিএনজি ট্যাক্সির লোকাল ভাড়া ছিল জনপ্রতি ২৫-৩০ টাকা। গত রবিবার সকাল ১০টায় ট্যাক্সিচালকেরা ভাড়া চাইলেন ৪০ টাকা। রিজার্ভে দুশ টাকার বেশি। আগে ছিল দেড়শ টাকা। কথা হয় ট্যাক্সিচালকের সঙ্গে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ট্যাক্সিচালক বললেন, আগে ৫শ টাকার টোকেন নিয়ে বোয়ালখালী থেকে নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত চলাচল করতো গ্রামচালিত সিএনজি ট্যাক্সি। এখন নিতে হয় ১৪শ টাকার টোকেন। লাইনম্যান খরচ আগে ছিল ১০ টাকা। এখন নেয় ২০ টাকা। কালুরঘাট সেতুর দুইতীরে চেকপোস্ট বসিয়েছেন টোকেনবাজরা। টোকেন ছাড়া কোনো সিএনজি ট্যাক্সি চলাচল করতে পারে না। টোকেন না নিলে চালকদের নানাভাবে নির্যাতন, মারধর ও হয়রানি করা হয়। এমনকি ট্যাক্সি ধরে রেখে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়া হয়। তখন ৮-১০ হাজার টাকা গুনতে হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এর নেপথ্যে রয়েছেন বোয়ালখালী পৌরসভার এক কাউন্সিলর। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে একচ্ছত্রভাবে দখল করে নিয়েছেন ট্যাক্সি ও টেম্পোর টোকেনবাজি।

এ রুটে চলাচলরত শুধু সিএনজি ট্যাক্সি নয়, টেম্পো থেকেও গলাকাটা টোকেনবাজি চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। টোকেনবাজি ও টোকেনবাজদের মারধর, নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে আন্দোলন করে আসছেন ট্যাক্সি ও টেম্পো চালকেরা। চাঁদাবাজি থেকে রক্ষা পাচ্ছে না চালক ও যাত্রীরা।

গত ১৭ আগস্ট চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। অভিযোগে বলা হয়েছে, বোয়ালখালীর চার লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে সিএনজিচালিত ট্যাক্সি ও টেম্পো। পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও চালকেরা দীর্ঘদিন ধরে যাত্রীসেবা দিয়ে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বোয়ালখালী পৌরসভার একজন কাউন্সিলর ও তার সহযোগীরা ব্যাপকভাবে চাঁদাবাজি করে আসছে।

দেদারছে চাঁদাবাজি ও কালুরঘাট সেতুর বর্ধিত টোল আদায়ের কারণে আয়-রোজগারে কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। মালিকের দৈনিক জমা, জ্বালানিসহ অন্যান্য খরচ মিটিয়ে অনেক সময় খালি হাতে ঘরে ফিরতে হয়। সারাদিন হাঁড়ভাঙা পরিশ্রম করে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। এছাড়াও চাঁদাবাজদের দাবি মেটাতে না পারলে চালকদের মারধর ও নির্যাতন করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, এ রুটে গাড়ি চালানোর জন্য মাসিক ১৪শ টাকার টোকেন ও প্রতিবার ২০ টাকা হারে চাঁদা গুনতে হয়।

 

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট